সংবাদকর্মী শেখ কাজিম উদ্দিনকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায়
স্টাফ রিপোর্টার : প্রাণ নাশের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী ও মাজেদুর রহমানসহ কয়েকজন সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় জিডি করেছেন শেখ কাজিম উদ্দিন নামে বেনাপোলের একজন সংবাদকর্মী। গতকাল বুধবার ৮ এপ্রিল দুপুরের দিকে কাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে ওই জিডিটি করেন। যার নম্বর -২৮০।
শেখ কাজিম উদ্দিন তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, “গত ২ এপ্রিল বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরীর উদ্যোগে বেনাপোল এলাকার দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রি বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সরকারী নির্দেশনা না মেনে প্রচুর মানুষকে জড়ো করে তিনি করোনা সচেতনতার সামাজিক দূরত্ব সীমা নিশ্চিত করণের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবান অগ্রাহ্য করেছেন। খবর পেয়ে একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে ওই জনসমাগমের স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারন করে তা একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ আকারে প্রকাশ করি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত কয়েকটি ছবি পোষ্ট করে একজন সরকারী কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতার চিত্র ফুটিয়ে তুলে জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করি। করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষার বড় উপায় হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তার দূরত্ব মেনে চলা। কিন্তু বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরীর নিবুদ্ধিতার কারনে সেটা লংঘিত হয়েছে। আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ওই ছবি সম্বলিত পোষ্টটি ভাইরাল হওয়ার পর কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী ও মাজেদুর রহমান আমার ওই পোষ্টটিকে কেন্দ্র করে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে ও আমার প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে একাধিক কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এছাড়া বেলাল হোসাইন চৌধুরীর পোষ্য কতিপয় সিএন্ডএফএজেন্ট ও তাদের কর্মকর্তা কর্মচারীরা ওই বিষয়ে আমাকে জড়িয়ে নানা মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মন্তব্য করেন। অনেকে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে শায়েস্তা করার কথাও বলেন। যার প্রেক্ষিতে আমি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রাণনাশের আশঙ্কা করছি। যার পরিপ্রেক্ষিত আমি অদ্য ৮ এপ্রিল বেনাপােল পোর্ট থানায় হাজির হয়ে বেনাপােল কাস্টমসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী, মাজেদুর রহমান ও কতিপয় সুবিধাবাদী সিএন্ডএফ এজেন্ট ও তাদের কর্মকতৃা কর্মচারীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী করছি।” এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক শেখ কাজীম উদ্দিন বলেন, বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। তিনি ভারত ফেরত এক পাসপোর্ট যাত্রীর ছবি ও নাম ঠিকানা সহ ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে করোনা রোগী হিসেবে প্রচার করে দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় তুলেছিলেন। তার কর্মকান্ডে বেনাপােল স্থল বন্দরের রাজস্ব আদায় হমকির মুখে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা তার চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়ে বেনাপােল বন্দর ব্যবহারে অনীহা প্রকাশ করছেন। বেনাপােল কাসটমস হাউজ অনিয়ম দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এই বেলাল হোসেন চৌধুরীর যোগসাজসে কাস্টমস হাউজের ভোল্ড থেকে কোটি কোটি টাকার সোনার বার লোপাট হয়ে গেছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউজকে ব্যবহার করে বেলাল হোসাইন চৌধুরী কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। যার কথ্য প্রমান হাতে পেয়ে দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্ত ও মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনি শত শত অভিযোগে অভিযুক্ত বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে কলম ধরার কারনে তিনি বহুবার আমাকেসহ স্থানীয় ও যশোরের একাধিক সাংবাদিদের চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছেন। তিনি বহু সাংবাদিককে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছেন। তারই ধারাবহিকতায় এবার তিনি আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। এ্ি কারনে আমি নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেছি।
এদিকে এই বিষয়ে কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইনের মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা চেষ্টা করলেও সংযুক্ত হতে না পারায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য প্রকাশ করা সম্ভব হলো না।