নিজস্ব প্রতিবেদক : অচেনা এক নববর্ষ। চিরচেনা উৎসব নেই, মানুষের মনেও নেই আনন্দ কিংবা উচ্ছ্বাস। তবে বাঙালির চিরায়ত সাংস্কৃতিক বোধ আছে, যা অনেক না থাকা নিয়েও মানুষকে শুভবোধে আর শুভপ্রত্যয়ে প্রাণিত করে। এবারে নববর্ষ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে তবে অভিন্ন সম্মিলিত মানুষের গৃহে থাকার প্রচেষ্টার ওপর ভর করেই সব বাঁধা দূর করবে বাঙালি- সংস্কৃতি কর্মীদের এমটাই প্রত্যাশা।
প্রথম প্রভাতে রমনার বটমূলে বেজে ওঠেনি সম্প্রীতির সুর। বৈশাখের রংতুলিতে চিত্রিত হয়নি নগরের রাজপথ। শাশ্বত মঙ্গলের বার্তাবাহী বৈশাখী মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাজারো মানুষের কল্লোল নেই এবার। মাতাল হাওয়ার দিনগুলো মুগ্ধতায়- মৌনতায় নয় উৎকণ্ঠা আর শঙ্কার।
তবুও নববর্ষের আবাহন ১৪২৭। বাঙালির সংস্কৃতি তো ভাঙা সেতু নয়। খানিকটা বিচ্ছিন্নতায় তা সংযোগহীন হবে তা ভাবার কোনো কারণও নেই। সংস্কৃতি জন-চিন্তার প্রকাশ ঘটায়, আর তাই এখন যখন নববর্ষের দিনেও অদৃশ্য এক শক্রর বিরুদ্ধে লড়ছে মানুষ তখন সংস্কৃতি চেতনা দিতে পারে সৌন্দর্য-চেতনা ও কল্যাণবুদ্ধি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেহের নিগার বলেন, দীর্ঘ যুদ্ধে আমাদেরকে অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে। প্রতি বছর এসো হে বৈশাখ ছিল আমাদের প্রাণের গান। চলুন না রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের পরতে পরতে খুঁজে নেই সেই প্রাণ শক্তি। গ্লানি সব মুছে যাক, জরা সব কেটে যাবে। অগ্নিস্নানে সুচি হয়ে ওঠবে আমাদের এ পৃথিবী। ততদিন পর্যন্ত সমন্বিত চেষ্টায় চলুন বেঁচে থাকার যুদ্ধটা আমরা চালিয়ে যাই।
প্রতিদিনের মানুষ ক্ষুদ্র দীন-একাকী। উৎসবের দিন মানুষ মহৎ। আর এই মহামারি দিনগুলোত মানুষের মহৎত্ব প্রকাশ পেতে পারে নানাভাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাসুদুজ্জামান বলেন, সামাজিক যে বন্ধনের ধারা, আমাদের জাতি সত্তাকে আমরা অনুভব করতে পারি। এবার সে ভাবে অনুভব করতে পারছি না। যেহেতু আমরা প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠান করতে পারছি ন। তাছাড়া আমাদের ভিতরে যে সংস্কৃতির সত্তা রয়েছে, তা কিন্ত আমরা অনুভব করব।
হারবে না বিজয়ী মানুষ। সভ্য-মানবোচিত আচরণে নিজের এবং সকলের কল্যাণে এগিয়ে যাবে। হাসবে মানুষ আর সবুজ পাতা। নিশ্চয়ই।