সর্ববৃহৎ বাগআঁচড়া সাতমাইল পশুহাট ধুঁ ধুঁ মরুভূমিতে পরিণত : কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাট সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার মানুষ

0
495

শার্শা প্রতিনিধি : মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে জনবহুল যশোরের শার্শা উপজেলার সর্ববৃহৎ বাগআঁচড়া সাতমাইল পশুহাট খাঁ খাঁ, ধুঁ ধুঁ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে । কয়েক কোটি টাকা দিয়ে হাট ডাকা ইজারাদার সর্বশান্ত হয়ে গেছে। এতে হাট সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় নানান দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা ।
প্রতিবছর বৈশাখের প্রথম পশুহাটের দিনটি নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্মরনীয় করে রাখা হয়।সকালে পান্তা ইলিশ পরে দোয়া অনুষ্ঠানে মিস্টির ছড়াছড়ি। এদিন গরুর ব্যাপারি ক্রেতা বিক্রেতা হাট কমিটির সবাই তখন এক হয়ে যায়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ যশোরের সাতমাইল পশুর হাটটি বন্ধ রয়েছে লক ডাউনের শুরু থেকে । শনিবার ও মঙ্গলবার সপ্তাহে দুই দিন এই হাট বসে। করোনার ভয়াল থাবায় এখন এই পশু হাটটি জনশূন্য, পশুশূন্য।

যশোর জেলা শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে বসে জেলার বৃহৎ সাতমাইল হাট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে এই হাট থেকে গরু কিনে নিয়ে যান বিভিন্ন এলাকার পশুর হাটে।

হাটের ইজারাদার নাজমুল হাসান বলেন, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ অন্তত ২০টি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারিরা আসেন এ হাটে। কিন্তু করোনায় একমাস ধরে হাট বন্ধ, বেচাকেনা নেই,খাঁ খাঁ করছে সব।

এই হাটের ইজারাদার নাজমুল হাসান বলেন, এই হাট তিনি এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন। এখানে প্রতি হাটে ৭/৮ হাজার পশু বেচাকেনা হয়। যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, ঝিনাইদাহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে বিক্রির জন্য পশু আনা হয়।

ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বেপরীরা এই হাট থেকে পশু কিনে নিয়ে যান। ব্যবসায়ীরা বলেন, হাট বন্ধের কারণে কয়েক হাজার পশু ব্যবসায়ীসহ পশু হাটের সাথে জীবিকায় নির্ভরশীল কয়েক হাজার ক্রয়-বিক্রয় পাশ লেখক এবং স্বেচ্ছাসেবকরা এখন পুরোপুরি কর্মহীন।

হাটে হাটে পশু বেচা-কেনায় সম্পৃক্ত পশু ব্যবসায়ী সাতমাইলের মন্টু মিয়া ও ইদ্রিস আলি সাহাজী বলেন, আমরা এক হাট থেকে পশু কিনে অন্য হাটে বিক্রি করি। হঠাৎ করে হাট বন্ধের কারনে আগে কেনা পশু নিয়ে এখন মহাবিপাকে পড়েছি। নিজের সংসারের খাদ্যের যোগান দিতে গিয়ে যেখানে হিমসিম খাচ্ছি, সেখানে পশুখাদ্য কিনবো কীভাবে সেই চিন্তায় রাতে ঘুম নেই।

করোনা প্রাদুর্ভাব না কাটলে এই হাটের সাথে জড়িত কয়েক হাজার মানুষের আগামীদিন গুলো আমাদের জীবনের জন্য করোনার চেয়ে বেশি মহামারি ধারণ করবে। তাছাড়া এখনো পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বা কোন সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও নিদারুন চাপা কষ্ট বিরাজ করছে। অচিরেই দেশের সর্ববৃহৎ এই পশু হাটের দিকে নজর দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here