মোংলা প্রতিনিধি : একতো করোনা ভাইরাসের প্রভার আর অন্যদিকে কর্মহীন রয়েছে এখানকার শ্রমিকরা। এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের প্রলোভন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের। এই দুর্যোগ কালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা এনে দেবার কথা বলে জনপ্রতি একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকা চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে মোংলা বন্দর নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী নির্মাণ শ্রমিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মোংলা থানা অফিসার উনচার্জের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। পরে ইউএনও ও ওসি নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে ডেকে শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা বাবদ নেয়া টাকা ফিরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে সংগঠনের শ্রমিকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোংলা বন্দরে কর্মরত প্রায় ৭ শতাধিক ইমারত নির্মাণ (রাজমিস্ত্রী) শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন হচ্ছে মোংলা থানা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখানকার নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ অনেক কমে গিয়ে অনেকটা বেকার হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক শাজাহান ফকির প্রত্যেক শ্রমিককে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা এনে দেবার কথা বলে খরচা বাবদ শ্রমিক প্রতি ১শ থেকে দেড়শ’ টাকা করে চাঁদা তোলেন। সে সঙ্গে নেয়া হয় শ্রমিকদের সদস্য ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটো কপিসহ বিকাশ করা মোবাইল নাম্বারও। গত কয়েকদিন ধরে এভাবে চাঁদা আদায় করা চললে এক পর্যায়ে কিছু শ্রমিকের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। ভূক্তভোগী শ্রমিকরা এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান ও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধূরীকে অভিযোগ দেয়াসহ বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন। পরে ইউএনও ও ওসি মোংলা থানা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক শাজাহান ফকিরকে ডেকে নিরীহ শ্রমিকদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে মোংলা বন্দর নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল তালুকদার বলেন, চাঁদা আদায়ের বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক জানেন, এ ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত নন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান ফকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ত্রাণ আনার খরচ বাবদ কোন চাঁদা নেয়া হয়নি। এ সংগঠনে পুরাতন ৬১৭জন শ্রমিক রয়েছে। ইমারত শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক গঠনতন্ত্রের ৫নং-ধারা অনুযায়ী শ্রমিকদের ২০টাকা মাসিক চাঁদা হিসেবে বকেয়া ৫ মাসের জনপ্রতি ১০০ ও ভর্তি ফিঁ ৫০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। তবে প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী পর্যাক্রমে সে টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান বলেন, ইমারত শ্রমিকদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সরকারের এই করোনা দুর্যোগকালীন মুহুর্তে কাউকে সুভিদা দেয়ার নাম করে চাদাঁ আদায় করা হবে এটা ক্ষমার অযোগ্য। শ্রমিকদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত না দিলে এ সংগঠনের নেতাদের গ্রেফতার করে আইনের আয়োতায় আনার জন্য ওসি মোংলা থানাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ইমারত নির্মান কাছ থেকে নেয়া টাকা পুনরায় শ্রমিকদের ফেরত দেয়ার জন্য সভাপতি/সম্পাদককে বলা হয়েছে। এস আই আহাদকে বলা পাঠানো হয়েছে, যদি ফেরত না দেয় তবে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। ###