(নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ করোনা প্রভাবে নড়াইলের সংবাদপত্রসেবী (হকার) এবং ১৯ হাজার ইজিবাইক-ইজিভ্যান ও নসিমন চালক বিপাকে পড়েছেন। ইজিবাইক-ইজিভ্যান চালানো বন্ধ থাকায় দামী ব্যা*টারি ন*ষ্ট হতে বসেছে এবং চালকরা বেকার বাড়িতে বসে রয়েছে। আবার দেশের অধিকাংশ প্রিন্ট মিডিয়া বন্ধ এবং সার্কুলেশন কমে যাওয়ায় পত্রিকা বিক্রির সাথে জড়িত সংবাদপত্রসেবীরা বেকার হয়ে পড়ছে। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, সম্প্রতি সংবাদপত্রসেবী এবং কাজ হারানো ইজিবাইক-ইজিভ্যান, নসিমন চালকদের ১০ টাকা কেজির চালের কার্ডের জন্য একটি তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হলেও তারা এখনও এ সহায়তা পায়নি। এদিকে জানা গেছে, এ সমিতির পক্ষ থেকে করোনা রো*গি এবং লা*শ ফ্রি বহনের জন্য ১০টি ইজিবাই-ইজিভ্যান, নসিমন ও মটরসাইকেলের একটি তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, জেলায় পত্রিকা বিক্রি ও বহনের কাজে জড়িত রয়েছে প্রায় ৩০জন। এছাড়া ব্যা*টারি চালিত ইজিবাইক ৭ হাজার, ইজিভ্যান ১০ হাজার এবং নসমিমনের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। এ পেশার সাথে জড়িত ব্যক্তি তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। করোনা প্রভাবে অধিকাংশ প্রিন্ট মিডিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংবাদপত্র সেবীদের (হকার) এখন হাত খরচও উঠছে না। তেমন সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই প্রতিদিন ঝুঁ*কি নিয়ে পত্রিকা বিক্রি এবং বিভিন্ন অফিস-বাসায় গিয়ে পত্রিকা বিলি করছে।
ইজিবাইক-ভ্যানের ব্যা*টারির বৈদ্যুতিক চা*র্জ দেবার কাজে যুক্ত শহরের সাগর ভট্যাচার্য্য বলেন, এক সেট ইজিবাইকের ব্যা*টারির মূল্য ৫০-৫৫ হাজার টাকা এবং ইজিভ্যানের ব্যা*টারির মূল্য ২০-২৫ হাজার। টানা ১৫-২০ দিন গাড়ি না চালালে ব্যাটি বসে (নষ্ট) যায়। গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কমপক্ষে ৫০ ভাগ ব্যা*টারি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান। নড়াইল জেলা ইজিবাইক-ভ্যান সমিতির সভাপতি লায়েব আলী জানান, গাড়ি চালাতে না পারায় তাদের সংসার চলছে একেবারেই চলছে না। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দরিদ্র ১৩শ জনের তালিকা দেওয়ার পরও অধিকাংশ চালকই কোনো ত্রান বা কার্ড পায়নি।
জেলা ইজিবাইক-ভ্যান ও নসিমন সমিতির প্রধান উপদেষ্টা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বলেন, জেলার দরিদ্র ইজিবাইক-ভ্যান ও নসিমন চালকদের একটি তালিকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) কাছে জমা দিয়েছি। তবে চালকরা কোনো কার্ডের তালিকাভূক্ত হতে পারেনি। তিনি এদের মানবিক বিষয়টি দেখতে নড়াইল-১ ও ২ আসনের এমপি এবং জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পত্রিকা ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক মীর্জা নজরুল ইসলাম জানান, নড়াইলে কর্মরত সংবাদপত্র সেবীদের একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দিলেও তারা সরকারি কোনো কার্ডের তালিকাভূক্ত হতে পারেনি।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ইয়ারুল ইসলাম বলেন, স্ব স্ব উপজেলার ইউএনও অফিসে সংবাদপত্র সেবী এবং ইজিবাইক-ভ্যান ও নসিমনের চালকদের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছি। ওখান থেকে এ তালিকা স্ব স্ব পৌরসভা ও ইউনিয়নের কাউন্সিলর-মেম্বরদের কাছে পৌছানোর কথা। এসব তালিকা পৌছেছে কিনা তিনি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন বলে জানান।