চৌগাছা (যশোর) : হায়দার আলী (৯৩)। বয়সের ভারে আজ ন্যুব্জ। অনেক কষ্ট করে চলাফেরা করেন।
স্ত্রী মারা গেছেন অনেক আগেই। চলাফেরায় ভরসা হাতের একমাত্র লাঠি। দিনমজুর ছেলের আট সদেস্যের অনটনের সংসারে ‘বোঝা’ হয়ে আছেন তিনি। লোকলজ্জায় কারো কাছ কোনোদিন হাত পাতেননি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এগিয়ে আসেননি তাকে সাহায্য করতে।
হায়দার আলী উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের রানীয়ালী গ্রামের বাসিন্দা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৯২৭ সালের ১০ এপ্রিল। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী হায়দার আলী বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও এ পর্যন্ত তা পাননি। মেলেনি সরকারি অন্য কোনো সহযোগিতা। নিজের জায়গা-জমি বলতে তেমন একটা কিছু নেই। পরিবারের আট সদস্য নিয়ে টিনের তৈরি ঝুপড়িতে অর্ধহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করেন তিনি। হায়দার আলী জানান, চার ছেলে ও চার মেয়ের বাবা তিনি। চার মেয়েকে পাত্রস্থ করেছেন। ছেলেদের মধ্যে দুইজন বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন। দুই ছেলে রয়েছেন নিজের সংসারে; বিয়ে করেছেন তারাও। সংসারে দুই ছেলের মধ্যে একজন কর্ম-অক্ষম। দুই ছেলের স্ত্রী সন্তান দিয়ে সংসারে মোট সদস্য আট। একমাত্র দিনমজুর ছেলে ছবেদ আলীর কাঁধে ভর করে আট সদস্যের সংসার চলে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য গোবিন্দ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা আছে। ওয়ার্ডে অল্প সংখ্যক কার্ড পেয়েছি। যাদের চাওয়া বেশি তাদেরকে আগে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে লেখালেখির দরকার নেই। হায়দার আলী খুব শিগগির বয়স্কভাতার কার্ড পাবেন।’
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘এতো বয়সী বৃদ্ধের বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়নি- এটা আমার জানা ছিল না। স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’
চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বয়স্ক ভাতা পাওয়ার মতো উপযুক্ত বয়স হলেও কেন তিনি কার্ড পাননি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তাকে অবশ্যই কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’