(নিজস্ব প্রতিবেদক) নড়াইল : নড়াইলে খুলেছে দোকান-পাট, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়। নড়াইল জেলার করোনা ভাইরাস সং*ক্রমণের কারণে লকডাউন থাকায় দোকান পাঠ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকারি সিদ্ধান্তে রোববার (১০ মে) থেকে আবার খোলা হয়েছে। জেলায় এখন চলছে লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সীমিত আকারে খোলার কথা থাকলেও সকাল থেকে ছিট কাপড়, শাড়ী কাপড় ও গার্মেন্টসের দোকানে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে অবাধে চলছে কেনা বেচা। প্রতিটি ছিট কাপড়, শাড়ী কাপড় ও গার্মেন্টসের দোকান খোলা হয়েছে, দোকনগুলোতে রয়েছে উপচে পড়া ভীড়। নড়াইলেও খুলেছে দোকান-পাট, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়ঈদকে সামনে রেখে দোকান খোলার খবর পেয়ে রাস্তা ঘাটে ও বাজারে প্রচুর লোক সমাগম সকাল থেকেই লক্ষ্য করা গেছে। ছিট কাপড়, শাড়ী কাপড় ও গার্মেন্টেসের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকান সীমিত আকারে খোলা হয়েছে।
এদিকে করোনা প্রতিরো*ধে সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে শনিবার (৯ মে) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নড়াইলের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৪৬ জনকে ৮৭,১০০ টাকা জরিমানা প্রদান করে। এ সময় ৪৬ টি মামলা দায়ের করা হয়।
ভ্রাম্যামাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মোঃ জাহিদ হাসান, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, সুমা খাতুন, মোঃ আলাউদ্দিন, মোঃ আবদুল্লা আল মুমিন ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) কালিয়া, নাজিবুল আলমের নেতৃত্বে শনিবার সারাদিন নড়াইলের বিভিন্ন স্থানে আলাদা আলাদা অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় কাগজপত্র সঠিক না থাকার অ*পরাধে মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার চালক ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান না হওয়া সত্ত্বেও দোকান খোলার অপরাধে এই জরিমানা করা হয়।পরদিকে লকডাউন শৈথিল্য ও দোকানপাট খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর। ঐতিহ্যবাহী নড়াইলের লোহাগড়া বাজারে চরম নৈরাজ্যকর পরিস্তিতি সৃষ্টি হয়েছে। বাজার জুড়ে গিজগিজ করছে মানুষজন। উজ্জ্বল রায় (নিজস্ব প্রতিবেদক) নড়াইল জানান, রোববার ভোর থেকে লোহাগড়া বাজারের সব ধরনের দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। সকাল ৭ টায় পণ্যসামগ্রী বিকিকিনি শুরু হলে বেড়ে যায় মানুষজনের উপস্থিতি। দোকানপাট খোলার পূর্বশর্ত হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা করার কথা থাকলেও সরেজমিনে বাজার ঘুরে কোথাও এর লেশমাত্র পাওয়া যায় নি। এক সপ্তাহ আগে যেখানে ছিল সুনসান নিরবতা,আজ তার চিত্র ভিন্ন। বাজারের দোকানঘরের সামনে উপচে পড়া ভীড়। ক্রেতাদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যাই বেশি। অধিকাংশ মানুষজনের মুখে নেই মাস্ক। করোনায় দেশে মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিন যোগ হচ্ছে নানা শ্রেণি পেশার মানুষজনের নাম। অথচ, নড়াইলের লোহাগড়ায় বাজারে উপচে পড়া ভীড়। সামাজিক দূরত্ব বলে কিছু নেই। দোকানপাটে হ্যা-স্যানিটাইজার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোন ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। নেই প্রশাসনের কোন নজরদারি। এ সুযোগে বাজারে চাঁদের হাট বসেছে ! ফলে,সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনার ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে বলে সচেতন মহলের দাবি। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর নড়ে-চড়ে বসে সরকার। ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটির ঘোষণা দিয়ে সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশনা জারি হয়। সর্বত্র পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হয়। পাশাপাশি দেশব্যাপী নামানো হয় সেনাবাহিনী। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ছাতড়া গ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর উপজেলা প্রশাসন ছাতড়াসহ চার গ্রাম লকডাউন ঘোষনা করেন। এরপর লোহাগড়া হাসপাতালে ৩ ডাক্তারসহ ২ জন স্বস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হলে সমগ্র উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। লোহাগড়ার প্রবেশ মুখ কালনা, বকজুড়ি, শিয়রবর ও জয়বাংলা ঘাটের নৌকা চলাচল বন্ধ করে মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কিন্তু সরকার ১০ মে থেকে স্বল্প পরিসরে দোকানপাট খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর নড়াইলের লোহাগড়ার চিত্র বদলে যায়। এ ব্যাপারে নড়াইলের লোহাগড়া বাজার ব্যবসায়ি মহসীন মোল্যা বলেন, ক্রেতাদের চাপে স্বাস্থ্য বিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন।নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সংবাদপত্র সরবরাহকারী খন্দকার বখতিয়ার সেলিম টিপু বলেন,লকডাউনের মধ্যে সীমিত পরিসরে দোকানপাট খুলে দেওয়ার পর এখানকার স্বাস্থ্যবিধি ভেঙ্গে পড়েছে এবং বাড়ছে করোনার ঝুঁকি। পৌর কাউন্সিলর ও বাজার ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ দাস ভুন্ডুল বলেন, ক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করার জন্য বলা হলেও তা কেউ মানছে না। এতে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে।
লোহাগড়া থানার এসআই মিল্টন কুমার দেবদাস বলেন, নড়াইলের লোহাগড়া বাজারের ব্যবসায়ীদেরকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র এ বিষয়ে বলেন, সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট পরিচালনা করতে হবে।্ এর ব্যত্যয় হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।