পর্যাপ্ত রেশন কার্ড, প্রণোদনা ও বকেয়া মজুরিসহ ঈদুল ফিতরের উৎসব বোনাস প্রাপ্তির দাবিতে ১৯ মে ২০২০ যশোর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন পালিত

0
474

করোনা মহামারীতে সাধারণ ছুটি ও লকডাউনে সরকার ঘোষিত পর্যাপ্ত পরিমাণ রেশন কার্ড, প্রণোদনা ও বকেয়া মজুরিসহ ঈদুল ফিতরের উৎসব বোনাস প্রাপ্তির দাবিতে আজ ১৯ মে ২০২০ মঙ্গলাবার দুপুর সোয়া ১২টায় যশোর প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন যশোর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়নের জেলা সহ-সভাপতি মোঃ হেমায়েত-এর সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালীন বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণা সরকার, সহ-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ আহাদ আলী লস্কর, দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান রাজেস, ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম ও যুগ্ম-সম্পাদক আইয়ুব হোসেন প্রমুখ। পরিচালনা করেন ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক আতিকুর রহমান জিহাদ। মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারীতে গত ২৬ মার্চ থেকে প্রায় ২ মাস সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণায় হোটেল রেস্তোরা বন্ধ রয়েছে। ফলে শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের প্রদত্ত ১০০ প্যাকেট ত্রাণ (যার মধ্যে প্রতিটি প্যাকেটে ছিল ৫ কেজি চাল আর ২ কেজি) যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জনাব জাহিদ হাসান টোকনের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। শহরের প্রায় হাজার শ্রমিকের হোটেল সেক্টরের ৬৪৪জনের নামসহ তালিকা জেলা প্রশাসনে নিকট ইউনিয়নের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়েছে। অনুরূপ নামও তালিকা মাননীয় সংসদ সদস্য, পুলিশ সুপার, কারকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, পৌর মেয়র বরাবর প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন ত্রাণ প্রণোদনা বা সহযোগিতা শ্রমিকরা পায়নি। উপরন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ১০০প্যাকেট ত্রাণ একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ২০০প্যাকেট পাওয়ার তথ্য অপপ্রচার করছে। পত্র-পত্রিকায় সরকার ও প্রশাসন বলছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে, কিন্তু যশোরের অপরাপর শ্রমিকদের ন্যায় হোটেল শ্রমিকরা কোন ত্রাণ না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মরছে। তারা বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎবিল জোগাড় করতে না পেরে দিশেহারা। সরকার ঘোষণা করেছিল হোটেল শিল্পে কর্মহীন শ্রমিকরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় সহায়তা পাবে। কিন্তু নেতৃবৃন্দ বলেন কারকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে তাদের কাছে জমা দেওয়া তালিকা জেলা প্রশাসনের নিকট পাঠানো হয়েছে , তিনিই দায়িত্বপ্রাপ্ত। জেলা প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে তারা তালিকা পৌরসভার মেয়রের নিকট পাঠিয়েছেন। পৌরসভায় গেলে মেয়র মহোদয়ের দেখা পাওয়া যায় না। ফলে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরকার দিচ্ছে জেনে শ্রমিক আসছে নেতৃবৃন্দের কাছে আর নেতৃবৃন্দ ঘুরছেন বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে। কিন্তু প্রাপ্তির খাতা শূণ্যই রয়েছে যাচ্ছে। এভাবে মাসের পর মাস শ্রমিকরা কিভাবে বেঁচে থাকতে পারে? শ্রম আইন ও সরকারের ঘোষণা অনুযায়ি সাধারণ ছুটি কালীন সকল শ্রমিকদের ছাঁটাই বন্ধ, বকেয়াসহ বেতন-ঈদুল ফিতরের বোনাস প্রদান করার কথা। কিন্তু এ পর্যন্ত শহরের অল্প কিছু মালিক কেউ একাবার কেউ দুইবার বা কেউ তিনবার শ্রমিকদের কিছু চাল, ডাল, তেল দিয়েছে যা দিয়ে মাস চলে না। এ দিকে প্রায় দুই মাস হোটেল বন্ধ রয়েছে। আরো কতদিন বন্ধ থাকবে তার কোন হিসাব নাই। এমতাবস্থায় গত ১৩ মে ঘোষণা দিয়ে ১৪ মে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু অদ্যাবধি কোন কার্যকর পদক্ষেপ শ্রমিকদের দেখাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। উপরন্তু যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে দেখা হচ্ছে না, মোবাইল ধরছেনা। উৎসব বোনাসের ব্যাপারে জেলা প্রশাসন যাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনিও কোন কার্যকর পদক্ষেপের তথ্য আমাদেরকে জানাননি। এ পর্যন্ত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিককে নামকাওয়াস্তে বোনাস প্রদান করেছেন। হোটেল প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকরা বছরের প্রায় ১০ মাস শ্রম দিয়েছে। অথচ মাত্র দুই মাস ব্যবসা বন্ধ থাকায় অধিকাংশ মালিকরা শ্রমিকদের খাদ্য, বেতন ও উৎসব ভাতা দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here