রিক্সাচালক বাবার কষ্টের মূল্য দিল জিহাদ, কলেজে ভর্তি নিয়ে শঙ্কা

0
484

মিশন আলী,স্টাফ রিপোটার,কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ঃ বাবা রিক্সাচালক হওয়ায় ঠিকমতো পড়াশোনার খরচ দিতে পারতো না। নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে সেই টাকা দিয়ে নিজেই প্রাইভেট স্যারদের টাকা ও বই-খাতার মূল্য পরিশোধ করতো। এসএসসি পরীক্ষার আগে মাত্র ২ মাস ইংরেজি প্রাইভেট পড়েছে। নিয়মিত স্কুলে যাওয়া ও লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়ায় জিপিএ-৫ পাওয়া সম্ভব হয়েছে। কথাগুলো বলছিল ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী জিহাদ হাসান তুহিন। সে উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মোঃ শাজাহান আলীর ছেলে। মেধাবী শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান তুহিন জানায়, তার বাবা যশোর শহরে রিক্সা চালায়। সেখান থেকে যা আয় হয় সেটা দিয়েই দুই ভাইয়ের লেখাপড়া ও পরিবারের খরচ চালায়। ঠিকমতো প্রাইভেট পড়তে পারিনি। নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের খরচ চালিয়েছে। ইংরেজি প্রাইভেট পরীক্ষার আগে দুই মাস পড়েছি। পরীক্ষায় শুধুমাত্র ইংরেজি বাদে অন্য সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছি। সে আরও জানায়, স্কুলের আনিচ স্যার ইংরেজি প্রাইভেট ফ্রি পড়াতো। সে নিয়মিত ৫ ঘন্টা লেখাপড়া করতো। রিক্সাচালক বাবার পক্ষে কলেজে ভতির টাকা জোগাড় করা নিয়ে শঙ্কায় আছি। করোনা ভাইরাসের কারণে তার বাবা গত ৩ মাস রিক্সাও চালাতে পারছে না। এখন মাঝে মাঝে দিনমজুরের কাজ করে। ইচ্ছা আছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কিন্তু টাকার জন্য সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা জানিনা। জাহিদ হাসান তুহিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের একটি কক্ষ ও এর পিছনে বাঁশ দিয়ে ঘেরা একটি কক্ষে মা-বাবা ও তিনভাই বোন নিয়ে বসবাস করে। বাবা দিনমজুরের কাজ করতে বাইরে গেছে। জানা গেছে, বড়ভাই ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়। বর্তমানে সে সাতমাইল কাজী নজরুল ইসলাম কলেজে এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র। জাহিদের মা জাহানারা খাতুন জানান, তার ছেলেরা অনেক সময় না খেয়েও স্কুলে গিয়েছে। টিফিনে এসে বাড়িতে খাবার না পেয়ে আবার চলে গেছে। ওদের বাবা এখন রিক্সা চালাতে পারছে না। মাঝে মাঝে কাজ পেলে দিনমজুরের কাজ করতে যায়। যা দিয়েই সংসার চলে। এখন জিহাদের কলেজে ভর্তির টাকা নিয়ে বেশ চিন্তাই আছি। রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, জিহাদ খুব ভদ্র ছেলে। পড়াশোনায় সে খুব মনোযোগী ছিল। স্কুলে নিয়মিত আসতো। সে জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। লেখাপড়া করে ভালো চাকরি করে বাবা-মায়ের মুখ উজ্জল করুক সেই দোয়া করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here