মোংলা প্রতিনিধি : একের পর এক জমি নিয়ে বিবাদ সৃষ্ঠি করে নিজে ফয়দা লোটার অভিযোগ উঠেছে সিগনাল টাওযার জরিনা কুলসুম এতিম খানার সুপার আকরামুজ্জামানের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনের লোকদের এতিমদের স্বার্থের কথা বলে নিজের স্বার্থ হাসিল করছেন এবং সকল অপকর্ম থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। রাজনৈতিক খোলস বদল করা এই সুপার অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন জমির মালিককে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। হয়রানির শিকার ব্যক্তিরা জানালেন নানা কথা। সর্বশেষ বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে আবারও লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন বিশিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী ভুক্তভোগি জমির মালিক মোঃ হিরো মিয়া।
মোংলার সিগনাল টাওয়ার এলাকায় বসবাসকারি মোঃ হিরো মিয়া জানান, ১৯৭০ সালে ৯৭ শতাংশ জমি ক্রয় করে ভোগ দখলে আছেন এবং ওই জমির উপরে ৪টি ঘর, ২টি পুকুরসহ ফলজ ও বনজ গাছপালা রয়েছে। হঠাৎ করে সিগনাল টাওযার জরিনা কুলসুম এতিম খানার সুপার মোঃ আকরামুজ্জামান মাসখানেক ধরে আমার ভোগদখলকৃত সম্পত্তির মধ্যে ভিপি সম্পত্তির অস্তিত্ত খোজার চেষ্ঠা করেন, যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। আমাকে কোন কিছু না বলে এবং জমি না মেপে অভৈধভাবে আমার ক্রয়কৃত জমিতে লাল নিশানা ও সাইনবোর্ড লাগিয়ে আমাকে উচ্ছেদ করার চেষ্ঠা করছেন। মাদ্রসার স্বার্থের কথা বলে জমির বেচাকেনার এই দালাল মোঃ আকরামুজ্জামান ইতো মধ্যে স্কুল শিক্ষক শরিফুল ইসলাম, শিক্ষিকা নাছিমা বেগম, আয়া পারুল বেগম, দিন মজুর জব্বার ফরাজি, বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মচারি শাহাজাহান মাঝি,ওয়াচম্যান শাজাহান, গৃহিণী রহিমা বেগম, কম্পিউটার ব্যবসায়ী জি,রব্বানীসহ বহু লোকদের জমিজমা নিয়ে হয়বানি করছেন। ভুক্তভোগিরা তার হাত থেকে রক্ষা পেতে আদালতের স্বরনাপন্ন হয়ে একাধিক মামলা দায়ের করেছেন। মোঃ হিরো মিয়া আরও জানান, এর আগে একই এলাকায় মাদ্রাসার সম্পত্তি দাবি করে দখলে নিয়ে পরবর্তীতে নিজেই ওই সম্পত্তির মালিক দাবিদার হয়ে এখন বিক্রির চেষ্ঠা করছেন ।
ভুক্তভোগি গৃহিণী মোসাম্মদ রহিমা বেগম বলেন, মোঃ আকরামুজ্জামান বহুমুখি মাদ্রাসায় শিক্ষাগতা করার সময় অসামাজিক কর্মকান্ডের অভিযোগে চাকরিচ্যুত হন। পরবর্তিতে জবাবরিয়া শিশু সদন ও এতিম খানায় কর্মরত অবস্থায় একই অভিযোগে সিগনার টাওয়ার জামে সমজিদের ইমামতি থেকে বরখাস্ত করেন তৎকালিন কমিটি। এছাড়াও এতিমখানায়ও নারী গঠিত অনেক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। চালনা বন্দর মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম জানান, আমিসহ ৫জন শিক্ষক ২০১৩ সালে বৈধ ভাবে জমি ক্রয় করে মাটি ভরাট করি। ঘর নির্মান করতে গেলে সুপার মোঃ আকরামুজ্জামান তার কিছু দালাল বাহিনী নিয়ে বাধা সৃষ্টি করেন। সিগনাল টাওযার জরিনা কুলসুম এতিম খানার সুপার মোঃ আকরামুজ্জামান আমাদের একের পর এক মিথ্যা হয়রানি কারে যাচ্ছেন।
দিন মজুর আঃ জব্বার ফরাজি জানান, আমি গরীব মানুষ, অনেক কষ্ট করে সারে ১৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে বালু ভরাট করে বসত ঘর করতে গেলে সুপার মোঃ আকরামুজ্জামান তার কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাধা সৃস্টি করেন। আমি প্রায় ৪ বছর এই জমি দখল নিতে পারিনি। পরে আকরামুজ্জামানকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করি (মামলা নং-৫২/১৯)।
মোংলার দিগরাজ শিল্প এলাকার বিশিষ্ঠ কম্পিউটার ব্যবসায়ী জি,রব্বানী জানান, বুড়িরডাঙ্গা এলাকায় আমাকে একটি জমির প্লট দেখায়। পছন্দ হলে জমির দাম কাঠা প্রতি দেড় লাখ টাকা ঠিক হয়। পরবর্তীতে জমির দালাল আকরামুজ্জামান ওই জমির দাম কাঠা প্রতি ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। আকরামুজ্জামান এমন কাজ আরও লোকের সাথে করেছেন।
সিগনাল টাওযার জরিনা কুলসুম এতিম খানার সুপার মোঃ আকরামুজ্জামান তার বিরুদ্ধে উথ্থাপিত অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, আমার নিজের কোন জমি ওই খানে নেই। তবে বিরোধপূর্ন জমির বিষয় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিকে পক্ষদয়ের কাজগপত্র দেখে মিটমিমাংসা করে নেওয়ার জন্য কয়েকবার বৈঠক দিয়েছে এবং এ জমির ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনই বাল জানেন। এব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভুমি) নয়ন কুমার রাজবংশি জানান, সিগনাল টাওযার জরিনা কুলসুম এতিম খানার নামে কিছু অংশ ভিপি জমি লিজ আছে। উপজেলার সার্ভেয়ার ভিপি জমি এবং মোঃ হিরো মিয়ার ক্রয়কৃত ৯৭ শতাংশ জমি লম্বালম্ভি ভাবে মেপে দিয়েছে। উভয় পক্ষ যাতে মিলেমিশে ভোগদখল করতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।