কাজী লিয়াকত হোসেন,স্টাফ রিপোর্টার ॥ কপোতা অববাহিকার পাখিমারা টিআরএম বিলের ভেঙ্গে যাওয়া পেরিফেরিয়াল বাঁধ পুনঃস্থাপন, তিগ্রস্তদের তিপূরণ প্রদান ও কপোতা জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নের দাবীতে তালা প্রেসকাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (৮ জুন) দুপুরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি অধ্য এবিএম শফিকুল ইসলাম।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত ‘কপোতা নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ের’ কার্যক্রম ২০১৭ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্বারা বিশেষ করে তালা উপজেলায় অবস্থিত পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়িত হওয়ার দরুণ বিশাল কপোতা অববাহিকার প্রায় ২০ ল অধিবাসী সরাসরি উপকৃত হয়েছে। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা দূরীভূত হওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকা এখন নিরাপদে আছে। এজন্য এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির কৃতজ্ঞ। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো প্রথম পর্যায়ের প্রকল্প শেষ হওয়ার পর ইতিমধ্যে ৩ বৎসর অতিক্রান্ত হলেও দ্বিতীয় পর্যায়ের কোন কার্যক্রম এখনও পর্যন্ত শুরু করা হয়নি। যার ফলে পলি জমে নদী আবারও যেমন ভরাট হতে শুরু করেছে, তেমনি বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধও নড়বড়ে ও দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিপূরণ প্রাপ্তিসহ বিল ব্যবস্থাপনায় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরণের চরম বিশৃঙ্খলা। তিনি আরও বলেন, গত ২০ মে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস দ্বারা বিলের মাদরা অংশের দুর্বল বেড়িবাঁধ ৪/৫ জায়গায় ভেংগে গেছে এবং দোহার গৌতমকাটি অংশের বেড়িবাঁধও বিধ্বস্ত হয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর সাথে গত ৪ জুনের পূর্ণিমা সৃষ্ট উঁচ্চ জোয়ারের চাপে মাদরা এলাকার গুচ্ছগ্রাম, মাদরা, দোহার, আটুলিয়া ও মাগুরা এলাকা ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে গুচ্ছগ্রামের ১২০টি পরিবারের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। তাছাড়া টিআরএম এর বাইরে মাদরা, মাগুরা ও আটুলিয়া বিল এলাকার ঘেরভেড়ীর ব্যাপক তি হয়েছে এবং দোহার গৌতমকাটী এলাকার পেরিফেরিয়াল বাঁধও যেকোন সময় জোয়ারের চাপে ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এলাকায় বসাবস করা নিয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষের মনে সর্বদা আতংক বিরাজ করছে। মূলতঃ এ পরস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ কোন ভাবেই দায় এড়াতে পারে না। কেননা তাদের অবহেলা ও অনীহার কারণে দীর্ঘদিন ধরে পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার ও মজবুত করা হয়নি এবং প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরুর কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সে কারণে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনা দ্বারা জনগণের যেসব য়তি হয়েছে তার তিপূরণের ব্যবস্থা করার দাবী জানানো হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে কাছে। এছাড়া স্থানীয় জনগণের জীবন-জীবিকা অব্যাহত রাখতে সংবাদ সম্মেলনে জরুরীভাবে মাদরা, দোহার ও গৌতমকাটি অংশের পেরিফেরিয়াল বাঁধ পুনঃস্থাপন, জলোচ্ছ্বাস ও উঁচ্চ জোয়ারের চাপে বাঁধ ভেঙ্গে যারা তিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তিপূরণের ব্যবস্থা এবং এলাকা যাতে আবারও জলাবদ্ধ কবলিত না হয় তার জন্য অনতিবিলম্বে কপোতা নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। কেন্দ্রীয় পানি কমিটির নেতা অধ্যাপক হাসেম আলী ফকির, তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, পানি কমিটি নেতা মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার ও মোঃ শফিকুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।