চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করছেন একের পর এক জনবান্ধব কর্মপরিকল্পনা। কর্মসূচির বাস্তবায়নে প্রতিনিয়ত সংশ্লিষ্টদের দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। সেসব কর্মসূচি ও নির্দেশনা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছেন সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। যশোরের ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলার মানুষের কাছে তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর এসব বার্তা। তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ৫ম ও ৭ম সংসদে যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৫ম সংসদে বিরোধী দলীয় হুইপের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ৭ম সংসদে প্রথমে তিনি সরকার দলীয় হুইপ পরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম জানান প্রথমে ৮ এপ্রিল টেলিটকের ০১৫৫২১৪৬১৩২ মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে ঝিকরগাছা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৬২ হাজার ৫শ’০১টি পরিবারে মোবাইলে ‘ ঘরে থাকুন, পরিবার ও দেশ কে নিরাপদ রাখুন’ এসএমএস প্রেরণের মাধ্যমে এই প্রচারণা শুরু করেন। একইভাবে চৌগাছা উপজেলার ৪০ হাজার ২শ’৭০টি পরিবারের মধ্যেও এই এসএমএস প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে টেলিটকের ০১৫৭২১৫৫৬০০ মোবাইল নাম্বার হতে সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্ম ব্যবহার করে দু’উপজেলার ৪১ হাজার ২শ’৮০টি পরিবারের মধ্যে ৯টি জনসচেতনতামূলক ডিজিটাল মোবাইল পোস্টার প্রেরণ করা হয়েছে।
পোস্টারগুলি হলো ‘ধৈর্য্য ধরুন, ঘরে থাকুন, পরিবার দেশ ও মানব জাতিকে নিরাপদ রাখুন।’ ‘করোনা ভাইরাস সংক্রমন থেকে বাঁচতে যে গুলি করবেন না এবং যে গুলি করবেন’, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা, ‘ত্রাণ কমিটি, রেশন কার্ড, সচেতনতা ও ত্রাণ’, ‘এ রমজানে আমাদের দায়িত্ব আগের তুলনায় বেশী’, ‘উপসর্গ দেখা দিলে গোপন না করে চিকিৎসা সেবা নিন’, ‘ত্রাণ সাহায্য যেন সঠিক মানুষের হাতে পৌঁছায়’, ‘২ কোটি গরীব মানুষকে নগদ সহায়তা দেবে সরকার’, ‘স্বাস্থ্য বিধি মেনে নামাজ আদায় করা যাবে মসজিদে’।
সূত্র জানায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রচারণার লক্ষে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম যশোরের ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলার সব ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম ভিত্তিক মানুষের তথ্য সংরণে একটি ডাটাবেজ তৈরী করেন। ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সেই তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে তিনি মানুষের কাছে মুহূর্তেই বিভিন্ন তথ্য ও বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
চৌগাছা উপজেলার ধুলিয়ানি বাজার মসজিদের ইমাম মোমিনুর রহমান বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে গণজমায়েতের উপর বিধি নিষেধ জারী করলে জনস্বার্থে মসজিদে বেশি সংখ্যক লোক নিয়ে জামায়াতে নামাজ পড়া সাময়িক বন্ধ ছিলো। ৬ মে বিকালে লোকমুখে জানতে পারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে জামায়াতে নামাজ পড়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সংবাদটির সত্যতা নিয়ে আমার মনে সংশয় তৈরি হয়। কিছুণের মধ্যেই সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের নিকট থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে নামাজ আদায় সংবলিত একটি বার্তা পাই। ঘরে বসে তথ্য পাওয়ার সময়োপযোগী এই পদ্ধতি গ্রহণের জন্য তাকে ফিরতি বার্তায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি।’ উপজেলার সুখপুখুরিয়া গ্রামের কৃষক শরফুদ্দিন আহমেদ জানান, ‘তার মোবাইল ফোনে যখন সাবেক প্রতিমন্ত্রীর কোন বার্তা আসে তখন আমি আবেগি হয়ে পড়ি। এই ক্রান্তিকালেও যে তিনি আমাদের কথা মনে রেখেছেন, আমাদের জন্য ভাবছেন সেটা ভেবে আমার ভাললাগে।’ ঝিকরগাছা পৌরসভা এলাকার কলেজছাত্র গাজী সিমন রেজা বলে, দুর্যোগের সময় গুজবও মহামারি আকার ধারণ করে। এসময়গুলিতে সঠিক তথ্য জানা খুবই জরুরী হয়ে পড়ে। স্যারের (সাবেক প্রতিমন্ত্রী) ম্যাসেজ ও নির্দেশনা আমাদেরকে সঠিক তথ্য পেতে সহযোগিতা করে, অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেন, এ সব কর্মকান্ডগুলো ডিজিটাল বাংলাদেশের অনন্য উদাহরণ।’
এ বিষয়ে সাবেক বিদ্যুৎ জালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, গোটা বিশ্বজুড়ে এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমন হচ্ছে। সবার দিন কাটছে আতংকে। করোনায় মানুষের মৃত্যুর খবরে ভারী উঠছে মানুষের নিঃশ্বাস। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা প্রতিরোধে সার্বণিক মনিটরিংসহ মাঠপর্যায়ে প্রতিনিয়ত নির্দেশনা দিয়ে চলেছেন। করোনার সাথে সুপার সাইকোন আম্পানের সময়ে ঝিকরগাছা-চৌগাছার মানুষের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। পাশাপাশি তাদের সার্বিক খোঁজ রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষের সাথে মূহূর্তেই ডিজিটাল যোগযোগ একদিকে গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে, অপরদিকে আন্ত:যোগাযোগের কারণে তারাও মানসিক ভাবে শক্তি পাচ্ছে বলে আমি মনে করি। মানুষের কল্যাণে যোগাযোগের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।