ঝিকরগাছার পল্লীতে ৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর বিয়ে নিয়ে তুঘলকি কান্ড : বেরিয়ে এলো কাজীর গোপন রহস্য

0
379

জসিম উদ্দিন : ঝিকরগাছার পল্লীতে ৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যেয়ে বিয়ে পড়ানোর ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় যেকোন সময় সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে, বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার নাভারন ইউনিয়নের গুননগর গ্রামে।
ঘটনা জানাজানি হলে, শুক্রবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী মজুমদারের নির্দেশে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার সুলতানা ও শিওরদাহ ফাঁড়ির আইসি এস আই এজাজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
এসময় অভিযুক্ত নাভারন ইউনিয়ন বিবাহ রেজিস্টার মাদ্রাসা শিক্ষক ইকরাম উদ্দিনের অফিস থেকে বেশ কয়েকটি (স্বাক্ষরিত) ফাঁকা স্টাম্প, নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এভিডেভিট করানো সীলমোহর, বেশ কিছু জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধণসহ সন্দেহভাজন কাগজপত্র জব্দ করেছেন। শুক্রবার সরেজমিনে ঘটনাস্থল গুননগর গ্রামে গিয়ে জানাগেছে, পাশ্ববর্তী করিমালী আলিম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ওই গ্রামের জিন্নাত আলীর কন্যা ইরানী খাতুন (১৩) কে উপবৃত্তি করে দেয়ার কথা বলে বৃহস্পতিবার বিকালে একই মাদ্রাসার পরিছন্নতাকর্মী মনোয়ারা ওরফে মনি করিমালী গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেনের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়।
অতঃপর নাভারন ইউনিয়নের বিবাহ রেজিস্টার ইকরাম উদ্দিনের শশুর ইব্রাহিম শেখ ঘটনাস্থালে গিয়ে আলমগীর হোসেনের নির্দেশে তার ছেলে বাবলুর রহমান (৩০) এর সাথে জোরপূর্বক বিবাহ দেয় ওই শিক্ষার্থীকে।
ইতিপূর্বেও উল্লেখিত কাজী ইকরাম উদ্দিন ও তার শশুর ইব্রাহিম শেখের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহ পড়ানোসহ নানাবিধ অভিযোগ থাকায় তার লাইসেন্স বালিত দাবি করেছেন, ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাস উদ্দিন, ওই শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই সাব্বির হোসেন।
এদিকে অভিযুক্ত বিবাহ রেজিস্টার ইকরাম উদ্দিন ও তার শশুর ইব্রাহিম শেখকে আগামী রোববার সকাল ১০টায় ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমী মজুমদারের দপ্তরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার সুলতানা জানিয়েছেন। অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে বিবাহ পড়ানোয় এই ঘটনার তদন্তপূর্বক বিবাহ রেজিস্টার, আলমগীর ও তার ছেলে বাবলু এবং মাদ্রাসার পরিছন্নতাকর্মী মনোয়ারর শাস্তির দাবি করেছেন ওই শিক্ষার্থীর পিতা জিন্নাত আলী ও মা রোজিনা বেগম। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় সংঘর্ষেও আশংকা করেছেন তারা।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে ভিকটিমের পরিবার ঝিকরগাছা থানায় অভিযুক্ত কাজী ও ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। বিবাহ রেজিস্টার ইকরাম উদ্দিন ও তার শশুর ইব্রাহিম শেখ বাল্যবিবাহের পুরাতন ও বর্তমান সকল কর্মকান্ড স্বীকার করেন। পাশাপাশি কাজী অফিসে বসেই কোর্টের যাবতীয় কর্মকাণ্ড চালানো এবং সিল জালিয়াতির বিষয়টির কোন সদুত্তর দিতে পারেনি বিবাহ রেজিস্ট্রারের কাজী ইকরাম উদ্দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here