স্টাফ রিপোর্টার : যশোরে পুলিশের নির্যাতনে কলেজছাত্র আহতের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ইমরানকে গাঁজাসহ আটক করা হলেও পুলিশ তাকে নির্যাতন করেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক-সার্কেল গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গত শুক্রবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুন সন্ধ্যায় পুলিশ আটক করে মারপিটে আহত হয়ে কিডনির সমস্যায় যশোরের কুইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সদর উপজেলার শাহাবাজপুর গ্রামের নিকার আলীর ছেলে কলেজ ছাত্র ইমরান। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হলে তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা পুলিশ।
সূত্র মতে, গত ৩ জুন চৌগাছার সলুয়া থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের ছাত্র ইমরান হোসেন। ইজিবাইকে চড়ে সদর উপজেলার আমবটতলা পৌছানোর পর সাজিয়ালি ক্যাম্পের পুলিশ তাদের গাড়ি তল্লাশি করে। আর পুলিশ দেখে দৌড়ে পালিয়ে চলে যান। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে হাঁটু পানির মধ্যে দৌড়ে গিয়ে একটি বাগানে শুয়ে পড়েন। সেখানে থাকা স্থানীয় রফিকুল ইসলাম নামে পুলিশের এক সোর্স ইমরানকে দেখে পুলিশকে ফোনে জানায়। এসময় সাজিয়ালি পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই সুমারেশ সাহা ও সাজদার রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আমবটতলার আলমগীর হোসেন নামে এক কোয়াক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করান। এরই মধ্যে ইমরানের পকেটে কিছু গাঁজা পায় পুলিশ। ফলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সাজিয়ালি ক্যাম্পে। রাতে ইমরানের পিতা নিকার আলী ক্যাম্প থেকে তাকে ছাড়িয়ে আনেন।
তদন্ত সূত্র মতে, ওই সময় ইমরান শারীরিকভাবে অসুস্থ্য ছিলেন না। ঘটনার দুইদিন পরে ইমরান অসুস্থ্য হলে তাকে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে কুইন্স হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরই মধ্যে ইমরানের পরিবার বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে তাকে পুলিশ নির্যাতন করেছে বলে প্রচার করে। ফলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক-সার্কেল গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি)’র ডিআইওয়ান মশিউর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানসহ তিন সদদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
তদন্তকালে জানা গেছে, ইমরান এর আগে থেকেই গাঁজা সেবন করতো। ঘটনার দিন ইজিবাইকে আসার পথে পুলিশি তল্লাশি দেখে ভয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। হাঁটু পানির মধ্যে বেশি দুরে দৌড়ে যাওয়ার কারণে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে ক্যাম্পে নেয়ার সময় গাঁজা পাওয়ায় রাতে তার পিতার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। তাকে মারপিটের মত কোন ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি কিডনিতে সমস্যা হঠাৎ করেই হয় না। আগে থেকে তার কিডনির সমস্যা থাকতে পারে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক-সার্কেল গোলাম রব্বানী বলেছেন, ইমরানের পকেটে গাঁজা পাওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখবেন।