নাসির আহমেদ,দশমিনা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বর্ষন ও জোয়ারের পানিতে চরাঞ্চলসহ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হবার সাথে সাথে সাধারন মানষের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘূর্নিঝড় রোয়ানুর পরবর্তী জোয়ারের পানিতে ১০টি চরাঞ্চলের শতাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
গত দুইদিন ধরে বর্ষন ও জোয়ারের পানিতে বেশীর ভাগ নিচু এলাকা ডুবে গেছে। ফলে পানির মধ্যে ক্ষেতের ফসল,মৎস্য খামার,ধানের চারা সহ চাষকৃত ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। উপজেলার উপকূলবর্তী ৪টি ইউনিয়নের গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার প্রধান ২টি নদী তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি পানির তীব্র চাপে উপকূলবর্তী গ্রামের তীরবর্তী এলাকায় নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অপর দিকে পানির তীব্র চাপে নদীর তীররক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অবিরাম টানা বর্ষন এবং জোয়ারের পানিতে দশমিনা উপজেলার প্রায় অর্ধ শতাধিক চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কোন চরেই স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকার কারনে জোয়ারের পানি অনায়াসে ঢুকে পড়ে। ফলে চরাঞ্চলের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিগত এক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বর্ষন এবং একই সাথে সাগরে নিম্নচাপের কারনে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট বেড়ে যাবার কারনে জোয়ারের পানিতে সমগ্র এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় এলাকার কৃষকের আমন ধানের বীজতলা ডুবে গেছে। কৃষকরা জানায়, জোয়ারের পানি নেমে গেলে বীজতলার ধানের চারার ব্যাপক ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। অপর দিকে উপজেলার প্রমত্তা তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদী উত্তাল থাকায় চরাঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। উন্নত নৌযান না থাকায় ছোট ছোট ট্রলার নিয়ে নদী পাড়ি দিতে কেউ সাহস পায় না বলে পানিবন্দি পরিবার গুলোর কাছে কোন ত্রান সামগ্রী পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকা এবং থেমে থেমে ভারী বর্ষনের ফলে নদীর পানিতে জোয়ারের চাপ বেড়ে যাবার ফলে চরাঞ্চল থেকে কোন বাসিন্দারাই উপজেলা সদরে আসতে পারছে না। ফলে পরিবারের ছোট বড় সকলেই অবর্ননীয় সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে দিনযাপন করছে। এদিকে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে বীজতলার অধিকাংশ ধানের বীজ। বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দুশচিন্তায় পড়েছে। সঠিক সময়ে বীজ না পেলে অনেক আবাদি জমি অনাবাদি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।