লোহাগড়ায় স্বামী জীবিত থাকতেই বিধবাভাতা করে দিলেন মেম্বর

0
319

লক্ষীপাশা(নড়াইল)প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের বড়দিয়া গ্রামে স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিধবাভাতা উত্তোলন করছেন স্ত্রী। ওই ভাতাভোগী প্রতি মাসে পান পাঁচশত টাকা। অভিযোগে জানা গেছে, ১০ নং কোটাকোল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বড়দিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ জাহের শেখ(৭০) এর স্ত্রী আমিরোন বিবি। লোহাগড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস ২০১৭ সালের ২০ আগষ্ট আমিরোন বিবির নামে বিধবা ভাতার কার্ড ইস্যু করে। কার্ড নং- ২৭৯/১৭। ওই কার্ডের বিপরীতে সোনালী ব্যাংক মহাজন শাখার হিসাব নং-০১০১১৬৪৯। ভাতা বইতে দেখা যায় ২০১৬ সালের জুলাই থেকে টাকা তোলা হয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি মঙ্গলপুর গ্রামের মোঃ লিকু মোল্যাসহ কয়েকজনে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগে জানান, কোটাকোল ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মেম্বর শাহানারা বেগম স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় বড়দিয়া গ্রামের মোঃ জাহের শেখের স্ত্রীর নামে ও আয়েব আলীর স্ত্রীর নামে বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত ১১জুন বিষয়টি তদন্তের জন্য লোহাগড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছেন। স্বারক নংÑ৪৪২। ভাতাভোগী আমিরোন বিবি এবিষয়ে নানা কথা বলছেন। তিনি একসময় বলছেন, ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর মোঃ মুজিবর মোল্যা ১২ হাজার টাকা নিয়ে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেছে। স্বামী বেঁচে থাকতেও কেনো আমাকে বিধবা ভাতার কার্ড করে দিলেন প্রশ্নের জবাবে মেম্বর মোঃ মুজিবর মোল্যা আমাকে বলেন, তোমরা গরীব মানুষ, ওই কার্ড করে দিছি তা সমস্যা কি। তোমরা খাও। আমিরোন বিবি অন্য সময় আবার বলছেন কার্ড করবার সময় মহিলা ও পুরুষ দুজন মেম্বরই ছিল। ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর মোঃ মুজিবর মোল্যা ফোনে ভাতাভোগী আমিরোন বিবির স্বামী জাহের শেখ এখনো জীবিত স্বীকার করে বলেন, আমি কার্ড করে দিতে কোন টাকা নেইনি। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মেম্বর শাহানারা বেগম বলেন, ১২ হাজার টাকা নিয়ে আমিরোন বিবির নামে বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বর মোঃ মুজিবর মোল্যা। এ বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের নিকট আমার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী মোঃ লিকু মোল্যা। মোঃ লিকু মোল্যার স্ত্রী রিনা বেগম গত দুবারের ইউপি নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ছিলেন। সামনে নির্বাচন তাই তারা আমাকে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করছেন। ওই এলাকার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক লোকে অভিযোগ করেন, কোটাকোল ইউনিয়নে বিধবা বা বয়স্ক ভাতার অনেক ভুয়া কার্ড রয়েছে। চেয়ারম্যান ওই সব ভুয়া কার্ডের ব্যাপারে অবগত থাকলেও নিজে সুবিধা নিয়ে চুপ থাকেন। কোটকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মারিয়া হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। সাধারণত মেম্বররাই কার্ড করে দেয়। আমি এসব ব্যাপারে কারো কাছ থেকেই কোন সুবিধা নেই না। ভুয়া কার্ড আছে কিনা তদন্ত করে দেখবো। লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র রবিবার (২১ জুন) বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্তের জন্য সমাজসেবা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছি। লোহাগড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ শামীম রেজা বলেন, তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। ভাতা বই জব্দ করেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here