এহসানুল হোসেন তাইফুর : করোনাকালীন কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সেবা প্রদানে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি বর্হিবিভাগসহ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদানে ডাক্তার-সেবিকারা নিষ্ঠার সাথে কর্তব্য পালন করছেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়া ডাক্তার ও সেবিকারা সুস্থ হয়েই রোগীর সেবাই ফিরে এসেছেন। তাদের সেবা পেয়ে রোগীরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
সরেজমিন সোমবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডে ১৬ জন এবং মহিলা ওয়ার্ডে ১৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে দু’জন শিশু। বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে ১৬৫ জন রোগী। করোনাকালীন আগের মত এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সেবা অব্যহত থাকায় কেশবপুরের পাশাপাশি পাশ্ববর্তী মনিরামপুর, কলারোয়া, তালা ও ডুমুরিয়া এলাকার রোগীরাও চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন। পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী আব্দুল মান্নান (৫০) বলেন, তাকে সেবা দেওয়ার জন্য নিয়মিতভাবে ডাক্তার ও নার্সরা তার নিকট আসছেন। মহিলা ওয়ার্ডের রোগী তানিয়া (২৫) জানায়, ডাক্তারদের সেবায় তিনি খুশি। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনকালে ২ জন ডাক্তার, ৩ জন সেবিকা, ২ জন স্যাকমো, ২ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ১ জন ইউনিয়ন প্রোভাইডার ও ১ জন টিএলসিএ করোনায় আক্রান্ত হন। করোনা মুক্ত হয়েই তাঁরা পূর্বের ন্যায় রোগীর সেবা শুরু করায় রোগীরাও সন্তোষ প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, কেশপুরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বর্হিবিভাগে ৮ হাজার ১১৪ জন পুরুষ, ১১ হাজার ৯২০ জন মহিলা এবং ৫ হাজার ৬৮৮ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। এ সময় ৯৪২ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ১৪২ জন মহিলা ভর্তি হন।
গত ৩১ মার্চ কেশবপুরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এপ্রিল ও মে মাসে ১ হাজার ৭৩৩ জন পুরুষ, ২ হাজার ২৮৯ জন মহিলা এবং ১ হাজার ৮২ জন শিশু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এ সময় ৩২২ জন পুরুষ এবং ৩০২ জন মহিলা চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। করোনাকালীন রোগীর সেবা-সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উন্নয়নে দৃশ্যমান কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস সময়সূচী গেটের সামনে স্থাপন করা হয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনে হাসপাতাল চত্ত্বরে লাইটিং, মুজিববর্ষ উপলে লিয়ন বাতি স্থাপন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবন সম্বলিত বিভিন্ন ছবি দ্বারা বিলবোর্ড স্থাপন, মুজিব কর্ণার স্থাপন, বিভিন্ন ধরনের ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন, বৃরোপণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ সন্দেহজনক রোগীদের নমুনা সংগ্রহ বুথ স্থাপন, অন্তঃবিভাগে রোগী এবং দর্শনার্থীদের জন্য লাইব্রেরী, পেপার স্ট্যান্ড, দেয়াল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে পোস্টার বোর্ড, ফুলের বাগানসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃরোপণ করা হয়েছে। এছাড়া জনসাধারণের হাত ধোয়ার জন্য দুটি বেসিন স্থাপন করা হয়েছে। টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। কমিউনিটি কিনিক সংশ্লিষ্টদের সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত রোগীর সেবা অব্যাহত রাখা হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকায় আগেভাগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডাক্তার মোঃ আলমগীর বলেন, কেশবপুরে করোনা রোগীর পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তি ও বর্হিবিভাগে চিকিৎসা সেবা করোনা ভাইরাস শুরুর আগের মতোই অব্যাহত রয়েছে। করোনা শুরু হলেও হাসপাতাল থেকে কোন রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাননি।