মালেকুজ্জামান কাকা, যশোর : যৌতুকের টাকা না দিতে পেরে এবার ঘর ছাড়লেন গৃহবধূ তহমিনা। স্বামী ও সতীনের নির্যাতনের শিকার হয়ে এবার যশোর শহরের রায়পাড়া ইসমাইল কলোনীর তহমিনা স্বর্বস্বান্ত হয়ে এখন পথে পথে ঘুরছে। বেদম মারধোর করে তার নামে থাকা ভাইয়ের টাকায় ক্রয়কৃত জমি ও বাড়ি কেড়ে নিয়েছে স্বামী ইয়াসিন ইসলাম বাবু ও সতীন লাকী বেগম। ভূক্তভোগী তহমিনা যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাগ্রহন শেষে কোতয়ালী মডেল থানায় রবিবার অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, তহমিনা বেগমের সাথে শঙ্করপুর চোপদার পাড়া আকবরের মোড়ের মৃত জয়নাল আবেদীনের পুত্র ইয়াসিন ইসলাম বাবুর সাথে ২০০২ সালে বিয়ে হয়। এদের তুর্য্য ও সুর্য্য নামে দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তিন বছর আগে সে বড় স্ত্রী তহমিনার অনুমতি ছাড়াই লাকীকে বিয়ে করে। এর পর থেকেই অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। কিছুদিন ধরে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলো ইয়াসিন ইসলাম বাবুু। সর্বশেষ গত ১৭ জুন গভীর রাতে ইয়াসিন ইসলাম বাবু, নুরু ও বাবুর দ্বিতীয় স্ত্রী লাকী বেগম বেদম মারধোর করে তহমিনাকে বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বের করে দেয়। এসময় তার জমির দলিলের টিকিট, স্কুটার মোটর সাইকেল, স্বর্নের চেইন, স্বর্নের দ্ইু জোড়া কানের দুল, নয় আনা ওজনের স্বর্নেও আংটি, যশোর প্রধান ডাকঘরে রক্ষিত একটি ফিক্সড ডিপোজিট দেড় লাখ টাকার বই ও অন্যান্য আসবাবপত্র রেখে দেয়। স্থানীয় আকাশ, কহিনুর বেগম, আলেয়া প্রমুখ ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করে। তহমিনার সারা শরীরে জখমের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। তার দেহে কয়েক স্থানে রক্ত জমাট বেঁেধ আছে। আড়াই শতক জমি সাড়ে চার লাখ টাকা মূল্যে তহমিনার ভাই বোনকে কিনে সেখানে একটি বাড়ি নির্মান করে দেন। সেই বাড়িতেই তহমিনা বসবাস করে আসছিলেন। তহমিনার ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, তার বোনকে মারধোর করে বাবু এক কাপড়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। আর পাওনা টাকা চাওয়াই তাকে আগেই সে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এই দুটি বিষয় সে ও তার বোন স্থানীয় সমাজসেবী তথা মাতব্বরদের জানিয়েছে। অনেকেই বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। আনোয়ার হোসেন বলেন ইয়াসিন ইসলাম বাবু একজন নর পিশাচ। সে আগেও অনেক অপকর্ম করে বার বার তার বোনের কারনে রক্ষা পেয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইয়াসিন ইসলাম বাবুর দুই বোন ভারতের মুম্বাই থাকে। তাহমিনাকে বাবু জোর করে আগে সেখানে পাঠিয়েছিল। পরে তহমিনার মা খদেজা বেগম মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে আনে। তাছাড়া তার ভাই আনোয়ার হোসেন মালয়েশিয়ায় থাকা কালীন তহমিনার স্বামীকে ধার বাবদ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাংকে ৪,৫৩,০০০ টাকা পাঠায়। কিছু দিন আগে বিদেশ থেকে দেশে এসে সেই টাকা চাইলে তাকেও হত্যার হুমকি দিয়েছে। একই কারনে এরি মধ্যে বাবু তহমিনাকে সাত দফা মারধোর করেছে। কোতয়ালী মডেল থানায় আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগটি তদন্ত করছেন এস আই সাহিদুল ইসলাম।