অবহেলিত জনপদের নাম ঝাঁপা গ্রাম

0
310

ডাঃ সিরাজুল ইসলাম, ঝাঁপা (রাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সরকারের সড়ক ও জনপদ বিভাগের মুজিব বর্ষের স্লোগান ও অঙ্গিকার সড়ক হবে সংস্ককার। এ কথাটির বাস্তব রূপ পাবে কি ? ঝাঁপা গ্রামের অবহেলিত জনপদের বসবাসরত সাধারণ মানুষ।
মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের জনগন বর্তমান উন্নয়নমূখীর স্বাদ পাওয়া থেকে অনেক দূরে রয়েছে। এ গ্রামে রয়েছে ১টি বাজার, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসা, ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি পুলিশ ফাড়ি।
উপজেলার বৃহত্তর গ্রাম ঝাঁপা গ্রামের প্রায় সকল রাস্তাই কাঁচা। যা দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার থেকে বঞ্চিত।
কোনো রকম বৃষ্টি হলেই এসকল রাস্তায় ছোট বড় গর্ত তৈরি হয় আর কাদা পানি জমে জনচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন নেমে আসে এই এই অবহেলিত গ্রামের প্রায় বিশ হাজার বসবাসকারী মানুষের চরম ভোগান্তি।
দ্বীপ খ্যাত এ গ্রামের অধিকাংশ কাঁচা ও ইটের রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে বর্ষা মৌসুমে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীর।
ঝাঁপা গ্রামের কাঁচা ও অধাপাকা ভাঙ্গাচোরা এসকল রাস্তার মধ্যে রয়েছে ঝাঁপা সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ঝাঁপা মহিলা মাদ্রাসা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার, ঝাঁপা বাজার আবাসন প্রকল্প থেকে মহিলা মাদ্রাসা হয়ে ঝাঁপা বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু প্রায় ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ঝাঁপা সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসা থেকে কোমলপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার ভাঙ্গাচোরা রাস্তা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীনের বাড়ি থেকে মড়গাং পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ঝাঁপা বাগাডাঙ্গি নিজামের বাড়ি থেকে ঝাঁপা উত্তর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় হয়ে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ইনার বাসতলা থেকে উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় হয়ে শান্তির ঘাট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একদিকে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু ও অপরদিকে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা।
এসকল রাস্তায় বৃষ্টি শুরুতেই কাঁদা পানি জমে লোকজনের যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে উঠে।
ফলে গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় কাঁদাপানিতে পড়ে বই খাতা ও জামা কাপড় নষ্ট হওয়ায় মাঝ রাস্তা থেকে বাড়িতে ফিরে আসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তাগুলোর বর্তমান পরিবেশ অত্যান্ত খারাব। এ গ্রামের অনেকেই অত্যান্ত ক্ষোভের সাথে বলেন, সরকার আসে, সরকার চলে যায়, চেয়ারম্যান আসে, চেয়ারম্যান চলে যায় আমরা সাধারণ মানুষ শুধু থেকে যায় ভোট দেওয়ার জন্য। আমাদের গ্রামের উন্নয়ন হয়না। অবহেলিতই থেকে যায়।
কথা হয় ঝাঁপা গ্রামের মাষ্টার আজিজুর রহমানের সাথে, তিনি বলেন, আমরা ঝাঁপা গ্রামবাসী সব ক্ষেত্রে অবহেলিত। বৃষ্টি হলে আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। কোমলমতি শিশু ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজ যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। অসুস্থ্য রোগী আনা-নেয়া যায় না। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিকট কাঁচা রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
ঝাঁপা উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান জানান, বৃষ্টি শুরু হলেই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যায়। কারণ চলাচলের অনুপযোগী রাস্তা দিয়ে আসতে যেয়ে কাদা পানিতে পড়ে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়ীতে ফিরে যেতে হয়।
একই ধরনের কথা বলেন ঝাঁপা উত্তর পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল ও পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ঝাঁপা গ্রামের আনিছুর রহমানসহ অনেকেই জানিয়েছেন, ঝাঁপা গ্রাম বরাবরই অবহেলিত থেকে গেলো। এ গ্রামের দিকে কোনো জনপ্রতিনিধি আজ পর্যন্ত নজর দেয়নি। তাই আমরা বাংলাদেশে বসবাসরত নাগরিক হিসাবে এখন পর্যন্ত অবহেলিত জনপদের বাসিন্দা।
বর্তমান সরকার, জনবান্ধন উন্নয়নের সরকার। আমরা অবহেলিত জনপদের বাসিন্দারা সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, এই অবহেলিত জনপদের দিকে একটু নজর দিতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here