লোহাগড়ায় মধুমতি নদীতে ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনে বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে

0
311

লক্ষীপাশা(নড়াইল)প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মহিসাপাড়া এলাকায় মধুমতি নদীতে ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীতে। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসীরা।
বুধবার(২৪জুন) সকালে মহিসাপাড়াসহ কয়েক গ্রামের মানুষ নদীপাড়ে বিক্ষোভ করে বালি উত্তোলনের প্রতিবাদ জানান। খবর পেয়ে লোহাগড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের মহিসাপাড়া গ্রামের মাঝদিয়ে বয়ে চলেছে মধুমতি নদী। নদীর পানির তীব্র ¯্রােতে এমনিতেই নদীরপাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। তারপর আবার নদীর কূল দিয়ে একাধীক ড্রেজার ম্যাশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বালু মহল ইজারা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইজারাদার একাধীক লোকের মাধ্যমে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করছেন। ফলে নদী ভাঙ্গন আরো তীব্রতর হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জামান সিকদার জানান, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙ্গন তীব্র হওয়ায় ইতিমধ্যে প্রায় দুই শতাধীক বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। মহিসাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জেলা পরিষদের সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সাজ্জাদ হোসেন মুন্না বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রায় দুই হাজার পরিবার নদীভাঙ্গনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রুত ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রাথমিক ব্যবস্থা না নিলে ওই পরিবারগুলির বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাবে। চরম অসহায় হয়ে পড়বে তারা। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, মহিসাপাড়া গ্রামের বাবুল শেখ, নুরুউদ্দিন শেখের বসতবাড়িসহ দুইশ পরিবারের বসতবাড়ি ইতিমধ্যে নদী গর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও মরিয়ম বেগম সহ অন্তত দুই হাজার পরিবার নদীরপাড়ে ভীতির মধ্যে রয়েছেন। মহিসাপাড়া গ্রামের মমতাজ বেগম ও রমেচা বেগম বলেন, নদী ভাঙ্গনে অসহায় হয়ে পরের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। বালু মহলের ইজারাদার তরিকুল বিশ^াস জানান, মহিসাপাড়া এলাকায় ৫টি ড্রেজার ম্যাশিন দিয়ে বালু কাটছি। আজ গ্রামের লোকে বালু কাটতে বাধা দিয়েছে। আমি গ্রামের লোকের সাথে সমঝোতা করেই বালু কাটতে চাই। মূলত নদীর মাঝখানে চর জেগেছে। আমি ম্যাশিন দিয়ে ওই চার কাটছি। যে কারনে কিছুটা পানির চাপ নদীরপাড়ে আসছে এবং ভাংছে। লোহাগড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) রাখী ব্যানার্জী এ বিষয়ে বলেন, খবর পেয়ে মধুমতিপাড়ে গিয়ে সরেজমিনে দেখেছি ভাঙ্গন তীব্র হচ্ছে। বসতবাড়ি ভাংছে। এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট একটা প্রতিবেদন পাঠাচ্ছি। আপাতত ওই এলাকায় বালু না কেটে অনত্র থেকে বালু কাটা যায় কিনা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ নেওয়াজ তালুকদার বলেন, স্থায়ী ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তাবনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) কাজী মাহাবুবুর রশীদ বলেন, লোহাগড়ার এ্যাসিল্যান্ডকে বলেছি সরেজমিন প্রতিবেদন দিতে। আর আপাতত ওই ভাঙ্গনকবলিত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন না করতে ঠিকাদারকে বলে দেবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here