স্টাফ রিপোর্টার: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কর্মকর্তা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও টেকনিক্যাল অফিসার এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হেলালুল ইসলামের নামে জাল সনদের অভিযোগ তুলে মানহানিকর পোস্টার প্রচারের অভিযোগে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। গতকাল রাতে ডায়েরী দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী হেলালুল ইসলাম। একই সাথে এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তিনি আইনগত পদক্ষেপ হিসেবে আদালতে মানহানি ও আইসটি আইনে পৃথক দুটি মামলা করবেন বলে তিনি জানান।
সাধারণ ডায়েরী থেকে জানা যায়, ‘বাংলাদেশ অপরাজনীতি প্রতিরোধ মঞ্চ’ নামের একটি ঠিকানাহীন সংগঠনের নামে গত বৃহস্পতিবার রাতে শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হেলালুল ইসলামের নামে বিভিন্ন ধরনের কুৎসিত বাক্য ও শব্দ সম্বলিথ একটি রঙিন পোষ্টার লাগানো হয়েছে। ওই পোষ্টারিংয়ে হেলালুল ইসলামের পারিবারিক ও তার শিক্ষা জীবনের সনদপত্র সম্পর্কে অত্যান্ত মানহানিকর শব্দচয়ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় হেলালুল ইসলাম তার জীবন নাশের সম্ভাবনাসহ য়তি হবার আশঙ্কা উল্লেখ করে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত ডায়েরী করেছেন। সাধারণ ডায়েরীর লিখিত বক্তব্যে হেলালুল ইসলাম দাবি করেছেন, বঙ্গবন্ধু জেলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির প্রতিবাদে তিনিসহ তার সংগঠন রাজপথে সোচ্চার। এই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি উচ্চ আদালতে যবিপ্রবির ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের নামে মামলা করেন। ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা প্রমানীত হওয়ায় উচ্চ আদালত তাদের বিরুদ্ধে শান্তির রায় প্রদান করেন। কিন্তু অদ্যাবধি সেই রায় কার্যকর না হওয়ায় তার সংগঠন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে ব্যস্ত। এদিকে আদালত কর্তৃক শান্তি প্রাপ্তরা সাধারণ মানুষ ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার হীন মানসে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যক্তি আক্রোশ ও পারিবারিক কুৎসা রটনা করে তাকে সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন, মর্যাদাহানিকর ও ক্ষতি করার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু যশোরের মানুষ তার পরিবার ও তার রাজনৈতিক অবয়ব সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন। ফলে তিনি কোন চক্রান্তের কাছে মাথানত করবেন না বলে দৃঢ় কন্ঠে প্রতিবাদ জানান বাদী হেলালুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, পোস্টারে লিখিত বক্তব্যসমূহ আদৌও সত্য নয়। একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, সম্মানহানী ও ব্যক্তিগত তি সাধনের করার উদ্দেশ্য এহেন পোস্টার শহরের বিভিন্ন স্থানে লাগিয়েছে। পোস্টারে উল্লিখিত সংগঠনের আদৌও কোনো অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেছেন হেলাল। এদিকে ওই পোষ্টারিংয়ে হেলালের বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃক প্রদেয় ¯œাতক ও ¯œাতকোত্তর সার্টিফিকেট জাল বলে দাবি করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে হেলাল বলেন, সনদ জালের বিষয়ে আমি চ্যালেঞ্জ দিতে চায়। তিনি বলেন, তার একটি সনদও যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ জাল প্রমান করতে পারেন তাহলে আইনগত সকল বিধিবিধান অনুযায়ী কর্তৃপ তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্তসহ শাস্তি প্রদান করলে সমস্ত দায় তিনি মেনে নিবেন। তিনি আরও জানান, জাল সার্টিফিকেট দুই েেত্র প্রমাণিত হতে পারে। যদি বিশ্ববিদ্যালয়টি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত না হয় অথবা যদি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেটকে জাল বলে প্রত্যয়ন দেয়। এ ব্যতীরেকে সার্টিফিকেট জাল বলার অধিকার কারো নেই। কিন্তু অদ্যাবধি আমার সার্টিফিকেট সম্পর্কে এহেন কোন তথ্য কারোর কাছে নেই। তাহলে আমার সার্টিফিকেট কি করে জাল হলো তা বোধগম্য নয়। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ইতিপূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক সনদে রেজিস্ট্রার স্বার করতো। স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানের সাময়িক সনদে কার স্বার থাকবে তা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করে থাকে। আমার সাময়িক সনদে বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং ডীন স্যারের স্বার রয়েছে। ইতিপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনসহ বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে আমার সনদ যাচাই বাছাই করে কোন প্রকার ত্রুটি বিচ্যুতি দৃশ্যমান হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে সহকারী রেজিস্ট্রার নিয়োগ পরীায় আমাকে ইন্টারভিউ কার্ড প্রদান করা হয়। সমস্যা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ নিশ্চয়ই আমাকে ইন্টারভিউ কার্ড প্রদানে বিরত থাকতেন।
তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার কেন করা হচ্ছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী পরিবারের সন্তান আমি, ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছি আর বর্তমান যশোর জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদে আছি। কর্মক্ষেত্রে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কর্মকর্তা কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কতৃপক্ষের সকল অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছ্ িসকলের অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। এখনো সর্বক্ষেত্রে জাতির পিতার চেতনা বাস্তবায়নে জীবন বাজি রেখে অহর্নিশি কাজ করেছি। সর্বশেষ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতি করা হয় । তখন থেকেই বিবেকের তাড়নায় ছবি বিকৃতির বিচার চেয়ে রাজপথে আছি, গত ১৫ জানুয়ারী ২০২০ খ্রি. হাইকোর্ট কর্তৃক যে রায় ঘোষিত হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। ছবি বিকৃতির বিচার প্রতিষ্ঠার এ সংগ্রাম স্বাধীনতাবিরোধী এক কুচক্রীমহল নস্যাৎ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার সম্মানহানি করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী ওই চক্রটি আমার নামে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে । আর এ ভুয়া পোস্টারিং তারই অংশ বলে আমি মনে করি। তিনি জানান, গত ১১ জুন যবিপ্রবির পাবলিক রিলেশন অফিসার আব্দুর রশীদ অর্ণবের ব্যক্তিগত ইমেইল থেকে পোষ্টারিংয়ের মুল বক্বত্য লেখা একটি ইমেইল বার্তা তার হস্তগত হয়েছ্ েওই ইমেইল বার্তায় পোষ্টারে লিখিত বক্তব্যটি অর্ণব লিখে সংশ্লিষ্ট ভুই ফোড় সংগঠনের নেতাদের কাছে পাঠিয়েছে। যার সাথে ডকুমেন্ট হিসেবে আমার পানর্সনাল ফাইলের অফিসিয়াল কাগজপত্র সংযুক্ত করা আছে। এই ঘটনায় প্রমান করে আমার বিরুদ্ধে যে মানহানিকর পোষ্টারিং শহরময় করা হয়েছে তার পেছনে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক ঘোষিত রায়ে স্বীকৃত ছবি বিকৃতকারীরাই জড়িত। ফলে আমি এ বিষয়ে আমার যা বলার তা আদালতেই বলবো- বলে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিবাদ জানান।