স্টাফ রিপোর্টার: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছ্ েইতিমধ্যে সামনের গাড়ি পাকিংয়ের পাশের একটি পিলার ভেঙ্গে পড়েছে। ২টি পিলারে ফাটল ধরেছে। বাকি কয়েকটি পিলার হেলে পড়ার উপক্রম হয়েছ্ েএসব ঘটনায় বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন পিলারটি এমন সময় ভেঙ্গে পড়েছে যখন লক ডাউনের কারনে ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছ্ েঅন্যথায় কাস চালু থাকলে বড় ধরনের দুর্ঘটাা শিকার হতেন শিক্ষার্থীসহ এই ভবনে আগতদের অনেকেই।
যবিপ্রবির ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্ট সূত্রে জানা গেছে, এই ভবনটি ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্ট কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে বিল্ডিংটি যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করেন। এই বিল্ডিংটির নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন যবিপ্রবির চীফ ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি। সে সময় তিনি যবিপ্রবির ঢাকা অফিসে বসতেন। মাঝে মধ্যে তিনি যশোর ক্যাম্পাসে আসতেন এবং চলমান নির্মাণ কাজের তদারকি করতেন। প্রশ্ন উঠেছে একটি নতুন বিশ^বিদ্যালয় যার বয়স ১০ বছরও পার করলো না; সেই বিশ^বিদ্যালয়ের মুল প্রশাসনিক ভবনের সামনের পিলার যদি ভেঙ্গে পড়ে, পলেস্তরা খসে পড়ে, পিলাররে ফাটল ধরে তা ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয় তাহলে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ কি করেছে। অভিযোগ উঠেছে এই কাজের মান নিয়েও। একই সাথে সংশ্লিষ।ট নির্মানকারী ডিপার্টমেন্ট, নির্মানকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও যবিপ্রবির প্রকৌশল ডিপামেন্টের দক্ষতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে তেমনি অভিযোগ রয়েছে অর্থনৈতিক অস্বচ্ছতার। কাজের তদারকির নামে যবিপ্রবির প্রকৌশল ডিপামেন্টের দায়িত্বশীলরা কি অন্য কোন উপায় অবলম্বন করে দেখেও না দেখার ভ্যান কেেরছন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শিক্ষক মন্ডীর অনেকেই। বিষয়টিখতিয়ে দেখার দাবিও তুলেছেন অনেক শিক্ষক কর্মকর্তা। এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে যবিপ্রবির চীফ ইঞ্জিনিয়ার প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বিশ^বিদ্যালয় চালু থাকলে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারতো। তিনি বলেন, এই বিল্ডিংটি করেছিল ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্টের প্রকৌশলীরা। আমরা ঢাকা থেকে মাঝে মধ্যে এসে তদারকি করতাম। কিন্তু যেহেতু বিল্ডিংটি হস্তান্তরের সময় কোন সমস্যা ছিল না তাই এই বিষয়ে তেমন কোন অভিযোগ ওঠার প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন যে পিলারটি ভেঙ্গে পড়েছে সেটি ১০ বাই ১৫ ইঞ্চি ব্রিক এর তেরী। এটা মুল বিল্ডিং এর সামনের পাকিং জোনে অবস্থিত। এর উত্তর পাশের্^ রয়েছে পাইলিং করা আরসিসি পিলার। সেখানে কোন সমস্যা নেই। সামনের যে ৮টি ইটের পিলার ছিল সেগুলেঅতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ১টি পিলার ভেঙ্গে পড়েছে। ২পি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছ্ ে২/৩টি পিলারের পলেস্তরা খসে পড়ছে। সেখানে ধ্বস নেমেছে। সব কিছু মিলে ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে আমরা দ্রুত এই পিলার গুলো অপসারন করে নতুন করে আরসিসি পিলার করা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছি।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে যবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ডঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৮ জুন। ওই দিন আমি ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফিরি। আল্লার অশেস রহমত যে পিলারটি ভেঙ্গে যেখানে পড়েছে সেই খানে আমার ছাতত্ররা ক্যাম্পাস চালু থাকলে নিয়মিত আড্ডা মারতো। যদি সেই মুহুর্তে এ্ি ধরনের ঘটনা ঘটতো তাহলে বড় ধরনের হানির আশংকা থাকতো। রহমত যে ক্যাম্পাস চালু নেই। তিনি বলেন এই ঘটনাটি তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। যার প্রধান হচ্ছেন যবিপ্রবির চীফ ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি। এছাড়া বাকি ২ জন সদস্য হচ্ছেন যশোর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মীর্জা মোঃ ইফতেখার আলী ও যবিপ্রবির প্রকৌশলী তৌহিদ ইমাম। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর পরই এই বিষয়ে পরবর্তী করনীয় নির্ধারণ করা হবে বলে ভিসি জানান।
এদিকে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সামনের অংশের পিলার ভেঙ্গে পড়ার ঘটনায় বিশ^বিদ্যালয়ে প্রকৌশ ডিপার্টমেন্টের দুর্বলতা ও অনৈতিকতাকে দায়ী করছেন বিশ^বিদ্যঅলয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা। আবার সেই ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান ও সদস্য সেই ডিপার্টমেন্টের ২জন প্রকৌশলী, যা হাস্যকর বলে মনে করছেন অনেকেই। তাদের অনেকেই বলেন, যেহেতু এটা প্রকৌশল ডিপার্টমেন্টের দুর্বলতা সেহেতেু এই তদন্ত কমিটি বিভাগীয় শিক্ষক প্রতিনিধি অথবা বুয়েটের প্রতিনিধিসহ বাইরের বিভিন্ন এক্সপার্টদের নিয়ে করার দরকার ছিল। কিন্তু তা না করে যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ যা করেছে তা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতোই অবস্থা। শিক্ষকবৃন্দ এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।