স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার যেখানে করোনা ভাইরাস থেকে সচেতন করতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে বলছে সেখানে সরকারি আর্দেশ অমান্য করে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ০৯নং হাজিরবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান মিন্টু তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং দূর্নীতির জোয়ারে ভাসছে। ক্রমাগতই উপজেলার মধ্যে দূর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান বলে একাধিক মানুষ দাবী করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে তার ইউনিয়নের অসহায় গরীব মানুষের দেওয়া ৫৫জন বিধবা ও ৬০ জন বয়স্ক ভাতা ভোগীদের বই দেওয়ার জন্য মাথা প্রতি দুইশত টাকা করে সর্বমোট ২৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ বিশ্বজিৎ দাসের মাধ্যমে। ঘটনাস্থল থেকে ১২জনের লিস্টের একটি তালিকা পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে ০৯নং হাজিরবাগ ইউনিয়নের মোঃ আতাউর রহমান মিন্টু চেয়ারম্যান ২০১৭-১৮ ভিজিডি চক্রে হাজিরবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কয়েকজনের চাউল বিতরণ করা বন্ধ করে রেখেছিলো।পরবর্তীতে অফিসের হস্তেেপর মাধ্যমে সেটা মিমাংসা করা হয়, ২০১৯-২০ সালের ভিজিডি কর্মসূচির জন্য উপকারভোগী ১৬৩ জন মহিলা তালিকা চূড়ান্ত করে। ওই তালিকার প্রত্যেক কার্ডধারী প্রতিমাসে ৩০ কেজি চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু ৫০জন নারী ভিজিডির চাল পাচ্ছে না। ২৩ মে ২০১৯ সালে এ বিষেয় ততকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহিদুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা। এছাড়াও জনপ্রতিনিধি হওয়ায় ইস্তা গ্রামের নুর নবীর ছেলে খায়রুল ইসলাম তার কছে একটি চাকরি চান। চেয়ারম্যান তাকে সরকারি চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। ২০১৭ সালের ৩ মার্চ চাকরি দেওয়ার কথা বলে খায়রুল ইসলামের পরিবারের কাছ থেকে ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকাও নেন তিনি। কিন্তু চাকরি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় টাকা ফেরত চান খায়রুল। টাকা ফেরত না দিয়ে চেয়ারম্যান টালবাহানা করতে থাকেন। এনিয়ে পরে বসা শালিসে খায়রুলের পরিবারকে নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও তিন লাখ টাকার একটি চেক দেন চেয়ারম্যান। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ব্যাংক কর্তৃপ সেটি ডিজঅনার করে। এরপর চেয়ারম্যানকে উকিল নোটিসের মাধ্যমে টাকা পরিশোধের অনুরোধ করা হয়। তিনি টাকা না দেওয়ায় আদালতে মামলা করেন খায়রুল ইসলাম। মামলার স্যা-প্রমাণ শেষে আসামি মিন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ- ও তিন লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। বর্তমানে ইউনিয়নের অসহায় গরীব মানুষের দেওয়া ৫৫জন বিধবা ও ৬০ জন বয়স্ক ভাতা ভোগীদের বই দেওয়ার জন্য মাথা প্রতি দুইশত টাকা করে সর্বমোট ২৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ বিশ্বজিৎ দাসের মাধ্যমে। হাজিরবাগ ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ বিশ্বজিৎ দাস বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে মাথাপ্রতি ২০০টাকা নিতে বলেছে বলে আমি টাকা নিচ্ছি। হাজিরবাগ ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, ৪০টাকা করে নেওয়া যাবে। সেই সময় সংবাদকর্মীরা ২০০টাকা নেওয়ার কথা বললে তিনি চুপ থেকে কিছুক্ষণ পরে টাকা ফেরৎ দেওয়ার পায়তারা করেন। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এএফএম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি উক্ত বিষয়ে তাকে বিভিন্ন সময় সর্তক করেছি। কিন্তু তিনি না মেনে যদি টাকা নিচ্ছে। আমি তাকে অবগতি করেছি ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমি মজুমদার বলেন, এই বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপনি উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সাথে যোগাযোগ করলে হয়তো কিছু তথ্য পেতে পারেন।