যশোরে মেটে আলুর বানিজ্যিক চাষ

0
291

মালেকুজ্জামান কাকা, যশোর : যশোরের চৌগাছা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে মেটে আলুর চাষ। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠে চলতি মৌসুমে ব্যাপকহারে হাই ব্রিড জাতের মেটেআলু চাষ হয়েছে। অন্য যে কোন ফসলের তুলনায় মেটে আলুর চাষে খরচ কম লাভ বেশি এবং বাজারে যথেষ্ঠ চাহিদা থাকায় মাঠের পর মাঠ কৃষকরা মেটেআলুর চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমে মেটেআলুর বাজারমূল্য ভাল থাকায় লাভবান হবেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় মাছরাঙ্গা, হরিণপিলি ও মসে জাতের মেটেআলুর চাষ হয়েছে ৩০০ হেক্টর জমিতে। শস্যভান্ডার ও কৃষি বান্ধব খ্যাত চৌগাছা উপজেলা। ধান, পাট, আখ, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ভুট্টা, গমের পাশাপাশি সকল প্রকার সবজি চাষের জন্য এ উপজেলা বরাবরই বিখ্যাত। এ অঞ্চলের কৃষকরা যখন যে ফসলে বেশি লাভ হয় তখনই ওই ফসল ফলাতে বেশ অভ্যস্ত। গত কয়েক বছর ধরে ব্যাপকহারে মেটেআলু চাষ করছেন এ জনপদের কৃষকরা। এক সময়ে উপজেলার কৃষকরা শখ করে মেটেআলুর চাষ করতেন। কিন্তু বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন বেশি হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। চৌগাছার হাজরা খানা, পেট ভরা, বেলেমাঠ, টেংগুর পুর, কংশারী পুর, জিওল গাড়ী, আন্দার কোটা, পাতিবিলা, রামকৃষœপুর গ্রামাঞ্চলে মাঠে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক মেটে আলু চাষ করেছে।
তেতুলবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক আজগার আলী জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে দেশি প্রজাতির মেটে আলু চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে খরচ বাদ দিয়ে অন্তত দুই লাখ টাকার মেটেআলু বিক্রি করবেন। একই গ্রামের আব্দার আলী, আব্দুর রাজ্জাক ২ বিঘা, আলিম ২ বিঘা, আইজেল ১ বিঘা, সনু ২ বিঘা জমিতে মেটে আলু চাষ করেছেন। এ ছাড়া বাঘার দাড়ি, পেটভরা, পাঁচনামনা, ইছাপুর, স্বরুপদাহ, কদমতলা, পাতিবিলা, নারায়ণ পুর, মুক্তদাহ, তেঘরি, মির্জাপুর, জগদীশপুর গ্রামের মাঠে মেটে আলু চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে মেটে আলু চাষ করলে খরচ হয় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে সেখান থেকে ৯০ থেকে ১০০ মণ মেটে আলু পাওয়া যায়। বর্তমানে বাজারে ৬০/৭০ টাকা কেজি দরে মেটে আলু বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ৫০/৬০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। তাই দিন দিন কৃষকরা মেটে আলু চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচউদ্দিন জানান, এ উপজেলাতে মেটে আলুর চাষ বাণিজিকভাবে শুরু হয়েছে। চাষ বৃদ্ধি ও কৃষকের সার্বিক সহযাগিতায় কৃষি অফিস যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here