নাসির আহমেদ,দশমিনা (পটুয়াখালী) : দশমিনা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রায় অর্ধ শতাধিক খালে পানির প্রবাহ না থাকায় যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিনত হয়ে ছিল। পানির অভাবে এলাকার কৃষকরা জমিতে সেচ দিতে পারেনি। একই সঙ্গে নদী ও খালের সংযোগস্থল এবং উৎস মুখ ভরাট হয়ে যাবার কারনে নৌপথে চরম সংকটাপন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে। খালে পানি না থাকার কারনে কোন নৌযানই চলাচল করতে পারছিল না। ব্যবসা বানিজ্যের জন্য পন্য বহনকারী নৌযানগুলোকে জোয়ারের পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। গত বছর খালে নাব্যতা ফিরাতে পুরো দমে খনন কাজ করা হয়। চলতি শুস্ক মৌসুমে পানি উন্নয়র বোর্ড সেচ কাজের সুবিধার্থে খালের প্রায় ৪২ কিলোমিটার খননের কাজ করেছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান খালগুলোর অস্তিত্ব এখন হুমকীর মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে পরিবেশের ইকোসিষ্টেমে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পরিবেশের এই বিরুপ প্রভাবে মাছের উৎপাদন কমে গেছে, সেচ কার্য ব্যাহত হওয়াসহ জীব বৈচিত্র বিলীন হচ্ছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো এক সময়ে নৌ যোগাযোগের ও সেচ কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখলেও এখন আর কোন মূল্য নেই। ফসলি জমিতে পলি মাটি বয়ে আনার জন্য খালের অবদান থাকলেও বর্তমানে সেই অবদান চীরদিনের জন্য স্থবির হয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খালে প্রয়োজন ছাড়াই যত্রতত্র বাঁধ তৈরি এবং খাল দখল করে দোকানপাট নির্মান করায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অধিকাংশ খাল তাদের যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিনত হয়েছে। অপরদিকে অনেক খাল ভরাট হয়ে যাবার কারনে নৌযানের চলাচল বন্ধ রয়েছে। এক সময়ে নদী পথে দশমিনা উপজেলার সাথে জেলা সদর পটুয়াখালী, বাউফল ও গলাচিপা উপজেলার সাথে নৌপথই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। অত্র নৌপথে নৌকা, ট্রলারসহ ছোট-বড় নৌযান চলাচল করায় ব্যবসা-বানিজ্যের ব্যাপক প্রসার ছিল। নদী পথে পন্য সামগ্রী পরিবহনে খরচ কম থাকায় এই পথেই ব্যবসায়ীরা পন্য আনা-নেয়া করতো। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে খালগুলো ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় এখন আর কেউ নৌপথে মালামাল পরিবহন করতে চায় না।
এক সময়ে অত্র উপজেলার মধ্যে প্রবাহমান খাল দিয়ে ৬টি ইউনিয়ন ছাড়াও প্রধান প্রধান হাট-বাজার এবং পার্শ্ববর্তী বাউফল ও গলাচিপা উপজেলায় পন্য সামগ্রী আনা-নেয়া করা হতো। এই পথে মালামাল আনা-নেয়ায় খরচ এবং সময কম লাগতো। বর্তমানে খালগুলোতে নাব্যতা কমে যাওয়ায় নৌযান চলাচল করতে পারে না। ফলে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে মালামাল ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। মানুষের লোভের কারনে দূর্বল স্রোতের খালগুলো দখল, গতিপথের পরিবর্তনের পাশাপাশি নাব্যতা হ্রাসসহ বিভিন্ন কারনে সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার মানচিত্র থেকে অনেক খালের অস্তিত্ব হারিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে খাল খননের ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।