এই মুহুর্তে সরকারী সহযোগীতা জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন মহল পাঁচ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় চৌগাছার কিন্ডার স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের মানবেতর জীবনযাপন

0
268

এম হাসান মাহমুদ চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছার কিন্ডর স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীরা মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। দীর্ঘ ৫ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় নেই কোন বেতন কড়ি, তাই পরিবার পরিজন নিয়ে উপজেলার ২৫টি কিন্ডার স্কুলের প্রায় ৩শ শিক্ষক কর্মচারীর অনিশ্চিত জীবন হয়ে দাড়িয়েছে। পবিত্র ঈদুল আযহায় কিন্ডর স্কুলের এই সব শিক্ষক কর্মচারীদের কষ্টেগাথা অন্যরকম এক ঈদ পালন হবে বলে শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। ঈদুল আযহায় এ সব শিক্ষকরা যাতে পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল ভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারেন তার সুব্যবস্থা গ্রহনে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্কুলের মালিক,শিক্ষক কর্মচারীসহ সচেতন মহল। চৌগাছাতে মানসম্মত শিক্ষা দানের লক্ষে সময়ের ব্যবধানে প্রায় ২৫ টির মত কিন্ডার গার্টেন স্কুল গড়ে উঠেছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, আয়া, গাড়ি চালক মিলে ২৫টি স্কুলে অন্তত ৩’শ জন কর্মরত আছেন। এক একজন ব্যক্তির পরিবারে যদি ৫ জন করেও সদস্য থাকেন তাহলে প্রায় দেড় হাজার মানুষ এই কিন্ডার গার্টেন স্কুলের আয়ের উপরে চলেন। কিন্তু গত পাঁচ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের মালিকরা শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা কিছুই দিতে পারছেন না। যেহেতু শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতন নিয়ে সেই বেতন দেয়া হত শিক্ষক কর্মচারীদের। স্কুল বন্ধ থাকায় বেতন নেয়া বন্ধ, তাই শিক্ষক কর্মচারীদের বেতনও বন্ধ জানালেন স্কুলের মালিকরা। স্কলি মালিকরা জানান, মাসের পর মাস স্কুল বন্ধ, ছেলে মেয়েদের আনাগোনা নেই তাই স্কুলের মাঠ গুলো সবুজ অরন্যে ভরে গেছে। পৌর এলাকার এক কিন্ডার স্কুলের শিক্ষিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কিন্ডার স্কুলে চাকুরী করে আমি দুই সন্তানকে মানুষ করছিলাম। তাদের পিতা দেখা শুনা না করায় সন্তানদের দায়িত্ব আমার উপরই পড়েছে। কিন্তু ৫ মাস কোন বেতন না পাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। গত রোজার ঈদে স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছু টাকা দিয়ে ছিলেন। তাই দিয়ে বাচ্ছাদের পোষাক কিনে দিয়েছি। এবারের ঈদে পোষাক কেনা তো দুরের কথা তাদের মুখে ভাল কোন খাবার তুলে দিতে পারব কিনা সেটা জানিনা। এই কষ্টের কথা বলতে যেয়ে ওই শিক্ষিকার দু’চোখের পাঁপড়ি কষ্টের অশ্রুতে ভিজে উঠে। ওই শিক্ষিাকর মত একই অবস্থা উপজেলার প্রতিটি কিন্ডার স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের। শিক্ষকরা বলেন, কিন্ডার স্কুলের শিক্ষকদের এই দুঃসময়ে সরকারের সহযোগীতা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে। অন্যথায় তাদের সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটায় কষ্ট হয়ে যাবে। সবুজ কুঁড়ি আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ শফিকুল আজম মিল্টন বলেন, তার স্কুলে শিক্ষক কর্মচারী মিলে মোট ২৬ জন কর্মরত ছিলেন। গত মার্চ মাস থেকে কাউকে কোন বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় শিক্ষকরা চরম কষ্টে দিন পার করছেন। প্রতিভা এ্ডাস স্কুলের ইনচার্জ রোজী মাহমুদ বলেন, ৫ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষক কর্মচারীদের কোন বেতন দিতে পারেনি। তারা সকলেই অত্যান্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঈদুল ফিতরে শিক্ষক কর্মচরাীদের চাল ডাল ও নগদ কিছু টাকা দেয়া হয়েছিল কিন্তু এবারের ঈদে সেটিও যেন সম্ভব হবে না। করোনা ভাইরাসের এই দুঃসময়ে সরকারকে কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন মহল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here