সেলিম রেজা মুকুল, সাতক্ষীরা ব্যুরো প্রধান : ভোমরার মার্কেটগুলোর দোকানীরা ঈদ উপলক্ষ্যে ভারতীয় পণ্যের পশার সাজিয়ে বসেছে। ভারতীয় রেডিমেট পোশাক, কসমেটিকস সামগ্রী বিভিন্ন কোয়ালেটির জুতা, ইলেকট্রিক সামগ্রী, খুচরা ও পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। বিক্রিলব্ধ এই ভারতীয় পণ্যের সঠিক কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। এক শ্রেণির চোরাকারবারিরা ভারত থেকে এ সমস্ত পণ্য বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে পাচার করে এনে দোকানীদের কাছে বিক্রি করছে। একটি মার্কেটে যৌত বাহিনী অভিযান চালিয়ে সঠিক কোন কাগজপত্র না পাওয়ায় মার্কেটের সমস্ত দোকান থেকে ভারতীয় পণ্য জব্দ করে দোকান খালি করে দিয়েছিল।
সাতক্ষীরা ভোমরায় অবস্থিত ৮টি মার্কেটের প্রায় দেড়শত দোকানে ভারতীয় পণ্য রমরমা বেচাকেনা শুরু হয়েছে ঈদ উপলক্ষ্যে। স্বরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভোমরা বাজারে অবস্থিত জাহাঙ্গীর মার্কেট, শেখ মার্কেট, ভাই ভাই মার্কেট, বাবু মার্কেট, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, মাওলানা মার্কেট, স্বপন মার্কেট ও সেন্টু মার্কেটে প্রায় দেড়শতাধিক দোকান আছে। মার্কেটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দোকান জাহাঙ্গীর মার্কেটে। জানা গেছে ২০১৮ সালের ১২ই আগস্ট জাহাঙ্গীর মার্কেটে যৌথ বাহিনী তল্লাসী চালিয়ে সমস্ত দোকান থেকে অবৈধ পথে আনা ভারতীয় পণ্য জব্দ করে দোকান খালি করে ফেলেছিলো বলে স্থানীয়রা জানায়। মার্কেটের দোকানগুলোতে ভারতের মূল্যবান শাড়ি, থ্রি-পিচ, চুড়িদার, শার্ট-পিচ, বেডশিট, প্রসাধনী যাবতীয় কসমেটিকস, ইলেকট্রিক সামগ্রী, ভারতীয় সব রকমের জুতা পাইকারী ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে মার্কেটগুলোতে দেখা যায়। জাহাঙ্গীর মার্কেটের রংধনু ফ্যাশন হাউজ, মোল্লা কোথ এন্ড ভ্যারাইটি ষ্টোর, আলাউদ্দীন বস্ত্রালয়। শেখ মার্কেটে মেসার্স জীম ফ্যাশান এন্ড প্লাস, মনোয়ারা কোথ ষ্টোর, মাওলানা মার্কেটে সরদার এ্যামোনিয়াম এন্ড কসমেটিকস, স্বপন মার্কেটের সুমাইয়া ভ্যারাইটি, এসএস ফ্যাশান হাউজ, সেন্টু মার্কেটের এ্যাশিয়ান কসমেটিকস, বাবু মার্কেটে আনার ও ইয়াসিনের জুতোর দোকান উল্লেখযোগ্য। স্বজমিনে গিয়ে মার্কেটগুলো ঘুলে উল্লেখিত দোকান ছাড়াও সব দোকানে ভারতীয় পণ্যের পশার সাজিয়ে বসে আছে দোকানীরা। সাতক্ষীরা শহর ও অন্যান্য জেলা থেকে ক্রেতারা ভিড় জমায় দোকানগুলোতে। সবচেয়ে বেশি সমাহার হচ্ছে ভারতীয় জুতার। বিভিন্ন কোয়ালিটির জুতা ক্রেতাদের চোখ ধাদিয়ে দিচ্ছে। স্থানীয়রা জানায় প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় ভোমরার মার্কেটগুলো ভারতীয় পণ্যের মার্কেটে পরিণত হয়েছে। উল্লেখিত দোকানগুলোর মালিকদের সাথে মুঠোফোনে ভারতীয় পণ্য কীভাবে এনে আপনারা বিক্রি করছেন জানতে চাইলে অনেক দোকানী বলেন আমদানী ও রপ্তানীর মাধ্যমে আমরা ভারতীয় পণ্য নিয়ে আসছি। কেউ কেউ বলে ঢাকা থেকে কিনে এনেছি। আবার কয়েকজন বলেন বোঝেনতো পাশে সীমান্ত অনেক সময় সীমান্ত দিয়ে এসব পণ্য পাচার করে নিয়ে আসে চোরাচালানীরা তাদের কাছ থেকে আমরা পণ্য ক্রয় করে থাকি। স্থানীয়রা জানায় আসলে চোরা পথে ভারত থেকে এসব পণ্য পাচার করে আনে চোরাকারবারীরা। উদাহরণ স্বরূপ বলেন জাহাঙ্গীর মার্কেটের ২০১৮ সালের ১২ই আগস্ট যৌথ বাহিনী যখন অভিযান চালিয়েছিল তখন এই দোকানীরাই পণ্যের প্রকৃত কাগজপত্র দেখাতে পারিনি। তারা আরো বলেন প্রশাসনের যদি নজরদারি থাকত তাহলে দেশীয় পণ্যের মার্কেট এইভাবে নষ্ট হত না, সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হত না। সাংবাদিকদের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তারা বলেন, আপনারা তো আমদানি ও রপ্তানির বিষয়ে সরকারের কত টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা কত তা পূরণ হলো কি না কতটা ঘাটতি থাকলো এসব কিছুই লেখেন। ভোমরা কোন কোন রাজস্ব কর্মকর্তা কতপ্রকার দুর্নীতির সাথে জড়িত এ সবকিছুই পত্রিকায় লেখেন। কিন্তু ভোমরার মার্কেটগুলোয় দীর্ঘদিন ভারতীয় পণ্যের ছয়লাভ। দেখলে মনে হয় এটা ভারতীয় মার্কেট। দেশীয় পণ্যের ধষ নেভেছে। সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে এসব কখনো তো লেখেন না? প্রশাসনও এদের ব্যাপারে কোন রূপ আইনী পদক্ষেপ নেয় না। আপনারা অহেতুক প্রশ্ন করে আমাদের নাম প্রকাশ করে মার্কেট মালিক ও দোকানীদের রোসানলে ফেলবেন না। দোকানে কীভাবে ভারতীয় পণ্য আসে এবং বিক্রি হয় সরকার যদি মনে করে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করলে বা পূর্বের ন্যায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালালে সবকিছুই সামনে চলে আসবে। তাদের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।