ঝিনাইদহ : স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে জেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ঝিনাইদহের মধ্যে অদ্য ‘জুম’ মাধ্যমে এক অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সনাক এর উদ্যোগে আয়োজিত সভার প্রধান অতিথি সিভিল সার্জন ও জেলা কোভিড-১৯ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. সেলিনা বেগম বলেন, জনসচেতনতাই করোনা ভাইরাস মোকাবিলার প্রধান ঔষধ। সনাক সভাপতি মোঃ সায়েদুল আলম এর সভাপতিত্বে মূল্যবান বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ও করোনা সেলের মূখপাত্র ডা. প্রসেনজিৎ পার্থ বিশ^াস, সনাক সহসভাপতি ও স্বাস্থ্য উপকমিটির আহ্বায়ক এম. সাইফুল মাবুদ, সদস্য মোঃ আবু তাহের, টিআইবি’র সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার কাজী শফিকুর রহমান ও এরিয়া ম্যানেজার বখতিয়ার হোসেন প্রমূখ। এছাড়াও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অপূর্ব কুমার সাহা, টিআইবি খুলনা কাস্টারের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ ফিরোজ উদ্দিন, ইয়েস দলনেতা শান্তা আহম্মেদ সুমি ও ইয়েস ফ্রেন্ডস দলনেতা মাজহারুল ইসলামসহ সর্বমোট ১৯ জন অংশগ্রহণ করেন।
সভায় ‘করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক টিআইবি’র গবেষণায় ঝিনাইদহের প্রেক্ষাপটে প্রাপ্ত বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগের পাশাপাশি বিদ্যমান ঘাটতিসমূহ আলোচনায় গুরুত্ব পায়। এপ্রেক্ষিতে করোনা মহামারী মোকাবিলার মাধ্যমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে সেবার মানোন্নয়নের জন্য সনাক এর পক্ষ থেকে ১৪ দফা সুপারিশ উপস্থাপনসহ বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়। সুপারিশসমূহ হলো বিদ্যমান সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করা; সকল স্বাস্থ্যকর্মীর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা; অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ; প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ নিশ্চিতকরণ; কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য আইসিইউ শয্যা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ; সচল ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ গ্রহণ; সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ গ্রহণ; জেলার সকল সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের চিকিৎসার পাশাপাশি অন্যান্য রোগের জন্য নিয়মিত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। সংকটাপন্ন রোগীর চিকিৎসায় অস্বীকৃতির ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে; স্বাস্থ্যবিধির সফল বাস্তবায়নে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণের উদ্যোগ নিতে হবে; তথ্য প্রকাশ এবং তথ্যে প্রবেশগম্যতার সুবিধার্থে ও ম্যানেজমেন্টের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের স্বার্থে গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে; নমুনা সংগ্রহের জন্য নিয়োজিত কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে; সম্মুখ সারির সকল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মানসম্মত সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে; পূর্ণাঙ্গ পিপিই সরবরাহ করতে হবে এবং সর্বপরি বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে উন্মুক্ত মতবিনিময় করতে হবে।
স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানান, সনাক বিভিন্ন সময়ে যেসকল তথ্য, উপাত্ত ও সুপারিশ দেয় তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঘাটতিসমূহ পূরণের সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই শুরু হয়েছে এবং ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াধীন আছে। আইসিইউ, ভেন্টিলেটর এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণসহ অন্যান্য সুপারিশসমূহের যেগুলো স্থানীয় পর্যায়ে সমাধান সম্ভব তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং যেসকল ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিকট দাবি উত্থাপন করা হবে। সর্বপরি সনাক এর সহযোগিতায় আগস্ট ২০২০ মাসে সংশ্লিষ্ট অংশীজন-এর সাথে উন্মুক্ত মতবিনিময় আয়োজনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।