কামরুজ্জামান লিটন ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : নেশাখোর স্বামীর অত্যাচার সইতে ও অন্যায় আবদার রাখতে না পারাই সন্তান, স্বামী সংসার ফেলে রেখে শিরিন সুলতানা নামের এক মহিলা চলে আসেন বাবার বাড়ীতে। পাষাণ স্বামী তার স্ত্রী কে ফেরত আনার জন্য মাসুম শিশুদুটোকে চেয়ারের সাথে বেঁধে বেদম পিটাতে থাকে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। ঘটনাটি ঘটেছে। ২০ শে জুলাই। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুলের সাথে ২০০৬ সালে বিয়ে হয় ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার শিরিন সুলতানার। তাদের ২ টি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে শিরিনকে মারধর ও অত্যাচার করে আসছিল শিমুল। অত্যাচার সইতে না পেরে দুই সন্তানদের রেখে বাবার বাড়িতে চলে যায় শিরিন। ২ বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আবার বাড়ি ফিরে যাওয়ার দাবিতে সন্তানদের মারধর ও নির্যাতন করে পাষাণ পিতা শিমুল। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করে শিরিন বলেন, বিয়ের পর থেকে প্রায়ই মারধর করত। কয়েক বার শালিস বৈঠক করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আবারো মারধর করে। এ জন্য তালাক দিয়ে চলে এসেছে। এখন আবার ফিরে নেওয়ার জন্য আমার সন্তানদের মারধর করছে। ফেসবুকে দেওয়া তার স্ট্যাটাসটি হলো- আমার বাসা আরাপপুর ঝিনাইদহ। এই বাচ্চা দুইটা আমার। এদের বাবার অত্যাচারের কারণে আমি চলে এসেছি বাবার বাড়ি। ওরা ওদের দাদা দাদীর সাথে থাকে। মাঝে মাঝে আমার কাছে আসতো। ফোনে কথা হতো। কিন্তু এখন ওদের বাবা এরকম অত্যাচার শুরু করেছে। ভিডিও করে আমার কাছে পাঠায়। আমি বাচ্চা কাছে রাখছিলাম কিন্তু জোর করে নিয়ে গেছে। বাসায় এসে ভাঙাচুরা করে। আমার কোনো ভাই নাই, বাবাও অসুস্থ। বাচ্চা মানুষ করার সামর্থও নাই আমার। তাই জোরও করতে পারি না।
কিন্তু এখন অত্যাচারের পরিমাণ এতো বেড়ে গেছে যে আমার বাচ্চারা ওখানে থাকলে মরে যাবে। আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি বাইরে যেতে পারছি না। এমন কি আমার শ্বশুরও বলেছে ফোন করে, আমি গেলে আমাকে খুন করে ফেলবে। ওদের বাবা নেশা করে। মাথার ঠিক নাই। কাজ করে না। এমন অবস্থায় আমি খুব নিরাপত্তাহীনতাই ভুগছি। আমি আমার বাচ্চাদেরকে আমার কাছে রাখতে চাই। এবং ওর শাস্তি দাবি করছি। আপনারা আমাকে সাহায্য করেন। ওর নাম হাবিবুর রহমান শিমুল। বাসা ধানহাড়িয়া, চুয়াডাঙ্গা। ঝিনাইদহ। পিতা লিয়াকত আলী। ঝিনাইদহে দুই শিশু সন্তান নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও ইবধঁঃরভঁষ ঔযবহধরফধয ক্স পেজের হাতে আসা মাত্রই ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) আবুল বাশার বিষয়টি দ্রুত অবহিত করেন ইবধঁঃরভঁষ ঔযবহধরফধয পেজের অফসরহ জাসিম আল মেরাজ খবর পাওয়ার সাথে সাথে আবুল বাশার ( এ এসপি) দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহন করেন এবং নির্যাতনকারী পিতাকে থানায় ধরে আনা হয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম চলছে।
এ ব্যাপারে ঐ গ্রামের সন্তান সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের কাছে বিষয় টি জানতে চাইলে তিনি বলেন আমিও ঘটনাটি শুনেছি ও ফেসবুকে দেখেছি। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ছেলে ২টিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পিতা শিমুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।