চৌগাছা বিএনপির আহবায়ক আহুত সাংবাদিক সম্মেলনের প্রতিক্রিয়ায় যুগ্ম আহবায়কবৃন্দ জহুরল ইসলামের বক্তব্য প্রতারণামুলক ও মিথ্যাচারে ভরা, তার স্বেচ্ছাচারিতার কারনেই বিএনপির বহু নেতাকর্মী আজ নিষ্ক্রিয়

0
244

বিশেষ প্রতিনিধি : চৌগাছা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলামকে প্রতারক ও মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করে দলের যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক সভাপতি এম এ সালাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউনুচ আলী যৌথভাবে এক লিখিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জহুরুলের বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও মিথ্যাচারে ভরা। সে সুকৌশলে প্রতারনামুলক বক্তব্য প্রদান করে নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারনে চৌগাছায় বিএনপির বহু ত্যাগী ও গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তার ওপর অভিমান করে বহু নেতা বিএনপির রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার কারনেই গোটা উপজেলায় বিএনপির রাজনীতিতে যে নোংড়ামী শুরু হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। গোটা চৌগাছাবাসী জানে জহুরুল কেমন স্বভাব চরিত্রের লোক। সে একদিকে যেমন রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবেও সে দেউলিয়া। তার নামে বহু জায়গায় অর্থনৈতিক লেনদেনের অস্বচ্ছতার কারনে মামলার ঘটনা ঘটেছে। তিনি বেশ কয়েকবার চেক প্রতারণার মতো ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন। ফলে এমন একজন নেতার মুখে আমিসহ আমার রাজনৈতিক সহকর্মী ও যুগ্ম আহবায়ক এম এ সালামকে দেউলিয়া বলা শোভা পায় না বলে দাবি করেছেন অপর যুগ্ম আহবায়ক মোঃ ইউনুচ আলী। আগে আয়নায় নিজের মুখটি দেখার জন্য তারা জহুরুল ইসলামের প্রতি আহবান জানান।
উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গত ২১ জুলাই জহুরুল ইসলাম তার নিজস্ব অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক সভাপতি এম এ সালাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুচ আলীকে রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া আখ্যায়িত করেন। ওই সম্মেলনে তিনি দলের এই দুই নেতা সম্পর্কে বেশ কিছু কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। একই সাথে এই দুই নেতার বিরুদ্ধে তিনি রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহিভূত কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে গতকাল ২৩ জুলাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক সভাপতি এম এ সালাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুচ আলী মিডিয়াকর্মীদের কাছে একটি লিখিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ওই প্রতিক্রিয়ায় তারা দাবি করেছেন, করোনার মহামারির মধ্যে যখন জাতীয়তাবাদী দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মোতাবেক রাজনীতি পরিহার করে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যস্ত সেই মুহুর্তে চৌগাছা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জহুরুল ইসলাম ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, চৌগাছার আপামর জনগণ এম এ সালাম ও মোঃ ই্উনুচ আলীর পারিবারিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে অবহিত। অথচ ২১ জুলাই নিজের অফিসে সাংবাদিকদের ডেকে জহুরুল ইসলাম দলের এসব সিনিয়র নেতাদের সম্পর্কে যে ভাবে মিথ্যাচার করেছেন তা অশোভনীয়। তিনি ওই সাংবাদিক সম্মেলনে আমাদের চরিত্র হনন করেছেন এবং ব্যক্তিগত আক্রোশমুলক বক্তব্য প্রদান করেছেন যা রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্হিভূত। একজন দলের দায়িত্বশীল নেতার মুখ থেকে এহেন কুরুচিপূর্ণ ভাষা কর্মীরা প্রত্যাশা করে না। আর এর থেকেই প্রমানীত হয় জহুরুল ইসলামের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অবস্থান। নেতৃবৃন্দ জহুরুল ইসলামের ওই কুরুচিপূর্ণ তথ্য সম্বলিত মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একই সাথে জহুরুল ইসলামের অরাজনৈতিক সুলভ আচরণের কারনে দলের বহু ত্যাগী ও পৌঢ় খাওয়া নেতারা রাজনৈতিক ভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন বলে সালাম ও ইউনুচ দাবি করেছেন। তারা বলেন, চৌগাছা বিএনপির সাবেক সভাপতি বি.এম হাবিব,সাবেক সভাপতি আনছার আলীসহ অনেক নেতাকর্মী জহুরুলের একগুয়েমীপনা রাজনীতির কারনে আজ নিষ্ক্রিয়। উপজেলা বিএনপির অভিভাবকতুল্য এসব নেতারা জহুরুলের ব্যক্তিগত আক্রমনের শিকার হয়েছেন। তারা রাজনীতির মাঠে জহুরুলের একতরফা নীতির প্রতিবাদ করায় তাদেরকে কৌশলে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও যেন কেউ তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করতে সাহস না পায় সে কারনে তিনি দলের ২ জন সিনিয়র নেতা ও যুগ্ম আহবায়ক সম্পর্কে ভিত্তিহীন মনগড়া ও ব্যক্তিগত আক্রোশমুলক কথাবার্তা বলে সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন। তার অনৈতিক ও অরাজনৈতিক সুলভ আচার আচরণের কারনে দলের নেতাকর্মীরা দল ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন । যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। তারা দাবি করেন, জহুরুল ইসলাম তার রাজনৈতিক দেইলিয়াত্বপনার কারনেই উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি নিয়ে নোংড়া খেলা শুরু করেছেন। যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক মাতৃতুল্য অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম স্পষ্ট করে বলেছেন, সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির পূর্বের কমিটি বহাল আছে। যতক্ষন পর্যন্ত আহবায়ক কমিটি গঠন পক্রিয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান না হচ্ছে ততক্ষ পর্যন্ত পূর্বের কমিটি বহাল থাকবে। এবং সেট্য়া সাংগঠনিক শিস্ঠাচার। অপর দিকে আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও দলের সাবেক জেলা সেক্রেটারী এ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেছেন, বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়ার কারনে বর্তমানে সুখ পুকুরিয়া ইউনিয়নে বিএনপির কোন কমিটি নেই। এছাড়া জেলা বিএনপি কর্তৃক গঠিত আব্দুস সালাম আজাদ ও হাজী আনিসুর রহমান মুকলের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলেছেন ১৫ ভোট পেয়ে কাজী আব্দুল হামিদ আহবায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আর ৫ ভোট পেয়ে শরিফুল ইসলাম ১ম যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সমান সংখ্যক ২ ভোট পেয়ে ইমদাদ ও মিলন যৌথভাবে ২য় ও ৩য় যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। ওই নির্বাচনে মুছা খাঁ ১৪ ভোট পেয়ে আহবায়ক পদে পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু জহুরুল ইসলাম এসব তথ্য উপাত্ত মানতে নারাজ। তিনি জেলা কমিটি ও জেলা বিএনপির তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও বক্তব্যকে পাশ কাটিয়ে এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই পরাজিত মুছা খাঁকে আহবায়ক করে নিজের ইচ্ছা মতো সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির একটি আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন। যা অপরাজনীতির জলন্ত উদাহরণ। এছাড়া জহুরুল ইসলাম বিভিন্ন সময় জেলা ও উপজেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে প্রকাশ্যে নানা কটূক্তিমুলক কথাবার্তা বলেন যা একজন সিনিয়র নেতার মুখে শোভা পায় না।
নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, সুখপুকুুরিয়া ইউনিয়নে গোপন ব্যালটে আহবায়কের ১টি পদে ২ জন প্রার্র্থী ও যুগ্ম আহবায়কের ৩টি পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে স্ব স্ব পদে ভোট প্রদান করেন। এই ক্ষেত্রেও ৩ জন নিরক্ষর ভোটারের ভোট প্রদানের বেলায় জহুরুল ইসলাম ছলচাতুরির আশ্রয় গ্রহণ করেন যা তদন্ত কমিটির রিপোর্টে স্পষ্ট প্রতিয়মান। তার পরও জহুরুল ইসলাম ওই গোপন ব্যালটের ফলাফল প্রত্যাখান করছেন যা কোন ক্রমেই রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারের মধ্যে পড়ে না। এদিকে ওই নির্বাচনে ভোটের অনিয়ম ও ব্যালট পুন:গননার দাবিতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী আব্দুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম জেলা বিএনপি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জেলার অভিভাবক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের কাছে আবেদন দাখিল করেছেন। আমরা বিশ^াস করি বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদকের উপস্থিতিতে জেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উক্ত ব্যালট পেপার পুন: গননা করলে নির্বাচনের সঠিক ফল বের হয়ে আসবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here