সম্পতি স্থানীয় শেখহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিক্ষানুরাগী মোঃ বুলবূল আহম্মেদ বিদ্যালয়টি করেন। এসময় তিনি জানতে পারেন অনেক দরিদ্র পরিবারের সন্তান রয়েছে, যারা ৫/৬ কিলোমিটা পথ পায়ে হেটে স্কুলে যাতায়াত করে। বিষয়টি আমলে নিয়ে তিনি শেখহাটি ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দকৃত এলজিএসপি প্রকল্পের অর্থ থেকে ১০টি বাই সাইকেল কিনে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয় চত্বর এসব ছাত্রীর মাঝে একটি করে সাইকেল বিতরণ করা হয়।সাইকেল বিতরণ করেন শেখহাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বুলবুল আহম্মেদ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনোরঞ্জন রায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মন্ডল, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আশিষ পাল, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিখা রানী মল্লিক, ইউপি সদস্য আছিয়া খাতুন প্রমুখ। এসময় শিক্ষক, অভিভাবক সুশীল সমাজের প্রতিধিরা উপস্থিত ছিলেন।৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী শিক্ষা বিশ্বাস , ঐশি বৈরাগী, বৈশাখী গুপ্ত, সমাপ্তি গুপ্ত, দিঘি বিশ্বাস , মিতু গোস্বামী, রাখি বিশ্বাস , প্রেমা বিশ্বাস, কেয়া সরকার ও নবম শ্রেণীর ছাত্রী সুষ্মিতা আঢ্যকে একটি করে সাইকেল দেয়া হয়।এদিকে সাইকেল পেয়ে ভীষণ খুশি এসব ছাত্রী। ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী শিখা বিশ্বাস জানায়, ‘আমি ৫ কিলোমিটার দূর থেকে স্কুলে যাতায়াত করি। রাস্তা খারাপ এবং আর্থিক সমস্যার জন্য হেটে হেটে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। অনেক আগেই সাইকেল চালানো শিখেছি। তিস্তু বাবা মায়ের সামর্থ না থাকায় সাইকেল কিনতে পারিনি। এবার সাইকেল উপহার পেয়ে সঠিক সময়ে স্কুলে যাতায়াত করতে পারবো’।ছাত্রী বৈশাখী বলেন, ‘স্কুলে আসার জন্য বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় রওয়ানা হতে হতো। প্রায় ৬ কিলোমিটার দূর থেকে হেটে স্কুলে এসে ক্লান্ত হয়ে যেতাম। এখন সাইকেল উপহার পেয়ে পড়াশোনা আরো ভাল হবে। আশা করি এসএসতিতে ভাল ফলাফল উপহার দিয়ে সবাইকে খুশি করতে পারবো।’বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন,‘ বিদ্যালয় হতে ৬/৭ কিলোমিটার দূর থেকে এসব ছাত্রী পায়ে হেটে স্কুলে যাতায়াত করে। আশা করি সাইকেল পেয়ে তারা এখন থেকে সঠিক সময়ে স্কুলে যাতায়াত করতে পারবে। তবে আরো অনেক গরীব ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। সমাজের বিত্তবান এবং সরকারিভাবে আরো কিছু সাইকেল উপহার পেলে হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা যেতো।’তিনি বলেন, `আমাদের এই বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী বাই-সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। সাইকেল চালিয়ে যাতায়াতকারী ছাত্রীরা ইতিমধ্যে ‘‘সাইকেল বালিকা’’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মানও সন্তোষজনক। প্রতিবছরই বিদ্যালয় হতে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করে থাকে।’শেখহাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বুলবুল আহম্মেদ তাঁর বলেন, ‘ আগামীতে আরো কিচু সাইকেল দেয়া যায় কিনা চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কাজকর্মের সুবিধার্থে উন্নতমানের একটি কম্পিউটার প্রদান করা হবে। বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান আরো যাতে বাড়ে সে জন্য শিক্ষক সমাজকে আরো আন্তরিক হতে হবে।’তিনি বিদ্যালয়ের বিগত দিনের ফলাফলসহ পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
নড়াইলের পল্লীতে মেধাবি ছাত্রীদে আরপায়ে হেটে যাতায়াত করতে হবেনা
নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের প্রায় তিনশত শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। দূর্গম এলাকা হওয়ায় এখানে রাস্তাঘাটের তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় ছেলে-মেয়ে সকলেই সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করে। এজন্য ইতিমধ্যে এ স্কুলের ছাত্রীরা ‘সাইকেল বালিকা’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। তবে আর্থিক অনটনের কারনে অনেক অভিভাবক তার সন্তানকে সাইকেল কিনে দিতে পারেননি।