বন্যা ছাড়াই ঘরের মেঝেতে পানি, ড্রেন সংকট চরমে বর্ষা মৌসুমের ৩-৪ মাস পানির মধ্যে বসবাস করেন পৌর এলাকার অর্ধশত পরিবার

0
204

মিশন আল,স্টাফ রিপোটার,কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি গ্রাম বলিদাপাড়া। এই গ্রামের ফায়ার সার্ভিস পাড়ায় অর্ধশত পরিবারের বসবাস। যে পরিবারের মানুষগুলো বর্ষা মৌসুমের ৩ থেকে ৪ মাস পনির মধ্যে বসবাস করেন। বৃষ্টি শুরু হলেই পাড়ায় পানি জমতে শুরু করে। ড্রেন না থাকায় পানি নামতে না পেরে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ দিনের জলাবদ্ধতা। আর যখনই বৃষ্টি, তখনই বদ্ধ ওই পানি আরো বেড়ে যায়। দেখা দেয় ভোগান্তি আর পোকা-মাকড়ের উৎপাত। রাতেও বিষাক্ত পোকা আর সাপের ভয়ে ঘুম হয়না। এবিষয়ে কর্তৃপ বলছেন, ওই পাড়ার মানুষের এতোটা খারাপ অবস্থা তা তারা কর্তৃপকে অবহিত করেনি। স্থানিয় ভাবে অবহিত করা হলে অবশ্যই পদপে নেওয়া হতো। তারা চেষ্টা করবেন দ্রুত একটি প্রকল্প তৈরী করে ওই পানি নিষ্কাষনের জন্য ড্রেন নির্মানের।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯২ সালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত। ৯ টি ওয়াডের এই পৌরসভার বলিদাপাড়া একটি ওয়ার্ড। এই গ্রামের কয়েকটি পাড়ার মধ্যে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ধারে রয়েছে ফায়ার সার্ভিস পাড়া। যে পাড়াতে প্রায় ৫০ টি পরিবার বসবাস করেন। বর্তমানে ওই পাড়ার মানুষগুলো জলাবদ্ধ অবস্থায় বসবাস করছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে ওই পাড়ায় গিয়ে দেখা যায় গোটা পাড়ার বাড়িঘরগুলোর চারিপাশে হাঁটু পানি। অনেক বাড়ির মধ্যেও পানি। অপোকৃত দরিদ্রপরিবারের ঘরগুলোর মেঝেতেও পানি। পাড়ার মানুষগুলোর কষ্টের শেষ নেই। তারা হাতে বাড়তি কাপড় নিয়ে বাইরে বের হন। অনেকে হাঁটু সমান কাপড় উঠিয়ে পানি পার হচ্ছে। কথা হয় ওই পাড়ার বাসিন্দা আক্তার হোসেনে সঙ্গে। তিনি জানান, পৌরসভা কর্তৃপ পাড়ার মধ্যে ইট বিছানো রাস্তা করে দিয়েছেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে সেই রাস্তা থাকে পানির নিচে। তিনি বলেন, তাদের এই পাড়ায় যে অর্ধশত পরিবার রয়েছে, যে পরিবারগুলোর বেশির ভাগ সদস্য চাকুরীজীতি অথবা ব্যবসায়। প্রয়োজনের সকাল হলেই তাদের বাইরে বেরুতে হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমের ৩ থেকে ৪ মাস তারা থাকেন পানির মধ্যে। এই সময়কালে কষ্ট করেই চলাচল করতে হয়। বিষয়টি তারা স্থানীয় কাউন্সিলর এর কাছে একাধিকবার বলেছেন। তিনিও চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তারা পানির মধ্যেই বসবাস করছেন। ওই পাড়ার বাসিন্দা মানিক মিয়ার স্ত্রী লিপি বেগম জানান, বেশি বৃষ্টির সময় তার ঘরের মধ্যেও পানি উঠে গিয়েছিল। বর্তমানে বাড়ির উঠানে পানি। ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। রাতে পোকা-মাকড় আর সাপের ভয় নিয়ে ঘুমাতে হয়। তাদের গোটা পাড়ার এই অবস্থা দীর্ঘদিনের। তিনি আরো জানান, ১৩ বছর পূর্বে তারা এই পাড়াতে বাড়ি করে বসবাস করেন। পৌর এলাকা ভেবে পাড়ায় এসেছেন, কিন্তু একন হবে ভাবতেও পারেননি। আছির উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, তার ঘরের মধ্যেও পানি। বন্যা ছাড়া ঘরের মধ্যে পানি ভাবতেও কষ্ট হয়। তারপরও কষ্ট করে বসবাস করছেন। তিনি দুঃখ করে বলেন, জানি না কবে এই অবস্থার অবসান হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওই ওয়াডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জানান, সমস্যাটি বেশ কিছুদিনের। ইতিপূর্বে মহাসড়কের ধার ঘেঁষে পৌরসভার যে ড্রেনটি আছে সেই ড্রেন দিয়ে পানি উত্তর দিকে থাকা বড় ড্রেন হয়ে চিত্রা নদীতে নেমে যেতো। কিন্তু সেই উত্তর দিকে নানা স্থাপনা গড়ে উঠায় পানি বর্তমানে দেিন ধাবিত হচ্ছে। এখন ফায়ার সার্ভিস পাড়ায় প্রবেশমূখ হতে একটি ড্রেন গ্রামের মধ্যে জয়নাল আবেদিনের বাড়ির পাশের ড্রেনে যুক্ত করে দিলে এই সমস্যার সমাধান হবে। এ জন্য মাত্র ৫ শত মিটার ড্রেন নির্মান করতে হবে। তাহলে ওই পাড়ার মানুষগুলো আর দিনের পর দিন পানিবন্দি থাকবে না। সে বিষয়ে পৌরসভায় তিনি কথাবার্তা বলছেন, আশা করছেন দ্রুত এর একটা সমাধান হবে। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল ওহাব জানান, স্থানীয় ভাবে সমস্যাগুলো তাদের অবহিত না করা হলে অনেক সময় সমস্যা থেকেই যায়। এই বিষয়টি নিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদপে নেবেন বলে জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here