লোহাগড়ায় পিআইও’র অনিয়ম-দুর্নীতির বিচার দাবি করেছে সরকারি কর্মচারি সমন্বয় পরিষদ

0
243

লক্ষীপাশা(নড়াইল)প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিচার দাবি করেছে লোহাগড়া উপজেলা সরকারি কর্মচারি সমন্বয় পরিষদ। গত ১৯ আগষ্ট বিকালে উপজেলা সরকারি কর্মচারি সমন্বয় পরিষদের কাব ভবনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের অফিস সুপার এস, এম আইনুল হকের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মো: শরিফুল ইসলাম, মো: শহিদুর রহমান, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, মো: জাহিদ হোসেন, ফরমান আলী ও ইনতাজ শেখ প্রমুখ। সভায় বক্তরা বলেন, সম্প্রতি লোহাগড়া উপজেলার পিআইও নিজের অনিয়ম-দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য অফিসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলেছেন। সুচতুর ওই কর্মকর্তা নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য এখন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মনিরুজ্জানের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। এ ব্যাপারে গত ১৭ আগস্ট(সোমবার) অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ মনিরুজ্জামান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে কাগজ পোড়ানোসহ দূর্নীতির বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন করেন। সভা সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১৭টি সেতু/কালভার্টের সিডিউল বিক্রির ৪লাখ ৮৬ হাজার এবং এইচবিবি রাস্তার সিডিউল বিক্রির ৬ লাখ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস.এম.এ করিম আত্মসাত করে তৎকালিন অফিস সহকারী জিয়াউর রহমানকে অশ্লীলভাষায় গালিগালাজ করেন। অফিস সহকারি জিয়াউর রহমান এ সংক্রান্ত অভিযোগ এনে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর দূর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দূর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্যনড়াইলের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে নড়াইল জেলা ত্রান ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান চলতি বছরের ৬ জুলাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সিডিউল বিক্রির টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতের বিষয়ে তদন্তকালে পিআইও এস এম এ করিম নথিপত্রাদি উপস্থাপন করেননি ,এমনকি অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মনিরুজ্জামানকে সংশ্লিষ্ট তথ্য উপস্থাপন করতে দেননি। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্ত এস.এম. এ করিম গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের সেতু/ কালভাট ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরের হেরিং বোন বন্ডকরন প্রকল্পের সিডিউল, সিএস শীটসহ সকল কাগজপত্র তার নিজ কক্ষের আলমারিতে সংরক্ষন করেন, যার তালা-চাবি অন্য কোন কর্মচারীর কাছে নেই। তদন্ত পরবর্তীতেপিইওর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কাগজপত্র গোছানোর সময়ে পিআইওএস এম এ করিম অফিসের সাবেক অফিস সহায়ক শিকদার আশরাফুল আলম ও কার্যসহকারী হারুন অর রশিদের সহযোগিতায় রাতের আঁধারে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে দিয়েছেন, যা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের নৈশ প্রহরীরা অবহিত আছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সরকারি কর্মচারি সমন্বয় পরিষদের এস এম আইনুল হক বলেন, উক্ত কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে লোহাগড়া উপজেলায় অবস্থান করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন। শুধু তাই নয় তিনি কারণে অকারণে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারিদের সাথে দুব্যবহার করে থাকেন। এর আগেও তিনি ওই অফিসের অফিস সহকারি জিয়াউর রহমানের সাথে চরম অসৌজন্যমুলক আচরণ করেছেন। সেই সময় তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মাফ চেয়ে রক্ষা পান। তার এহেন অপকর্মের কোন শাস্তি না হওয়ায় তিনি বর্তমানে বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন। আমরা তার দুর্নীতির তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বদলীর দাবি করছি। এ ব্যাপারে পিআইও এস,এম,এ করিমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ইউএনও”র সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী অফিসার) মুকুল কুমার মৈত্র জানান, পিআইও”র বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাত এবং কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here