মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : যশোরের মণিরামপুরে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) ও উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে সোলিং রাস্তা সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একেক রাস্তায় একই নামে দুইবার করে প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কাজ হয়েছে একবার;তাও আবার নির্ধারিত অংশের চেয়েও অনেকেেত্র কম। এমন রাস্তা রয়েছে যেখানে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। আবার কোনকোন রাস্তায় নাম মাত্র বালি ও নিন্মমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েকদিন সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র ধরা পড়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস থেকে পাওয় সূত্রমতে খেদাপাড়া ইউনিয়নে এডিপি ও পিআইসির মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাতটি রাস্তা সলিং করার কাজ হাতে নেওয়া হয়। যারমধ্যে পাঁচটিতে একই দুরত্বে দুইবার করে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। যেগুলোর তিনটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই-দুই চার লাখ টাকা করে এবং দুইটিতে দেড়-দেড় তিন লাখ টাকা করে। এছাড়া ৯০ হাজার টাকা করে দুইটি রাস্তায় ব্যয় ধরা হয়েছে।
উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস বলছে, প্রতি লাখে ২৫০ ফুট করে কাজ হওয়ার কথা। খেদাপাড়া ইউপির রাস্তাগুলোর মধ্যে খেদাপাড়া বাজারের দণিমাথায় নুরোর দোকান হতে মোসলেমের বাড়িমুখি রাস্তায় ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ২২৫ ফুটের মধ্যে কাজ হয়েছে মাত্র ১৪৭ ফুট। আর বাজারের মান্নানের বাড়ির মোড় হতে পালপাড়া হয়ে লাবলুর বাড়িমুখি রাস্তাটিতে ৯০ হাজার টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কোন কাজ হয়নি। ওই ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল হকও রাস্তাটিতে কাজ না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলামের দাবি তিনি এখনো রাস্তাটি ভিজিটের সময় পাননি। এছাড়া খেদাপাড়ার খাঁ পাড়া মসজিদের রাস্তায় দেড়লাখ করে দুইবার তিনলাখ টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেখানে কাজ হয়েছে মাত্র ২৩৪ ফুট। এদিকে রোহিতা ইউনিয়নে দেড়লাখ টাকা করে ছয়টি রাস্তায় একই নামে দুই বার করে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বাকি তিনটি রাস্তার মধ্যে একটি এক লাখ টাকা ও দুইটিতে দেড় লাখ টাকা করে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে ইউনিয়ের আমজেদের মোড় হতে বাগডোব পশ্চিমপাড়া মসজিদ পর্যন্ত রাস্তায় সোলিং কাজে দেড় লাখ করে দুইবারে তিনলাখ টাকার প্রকল্প রয়েছে। সেখানে রাস্তার পাশে পাঁচটি পুকুরের প্যালাসাইডিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। আর রাস্তায় কাজ হয়েছে মাত্র ২৫৪ ফুট। যদিও তিনলাখ টাকায় সাড়ে সাতশ ফুট কাজ হওয়ার কথা। এছাড়া ইউনিয়ের গাংগুলিয়া, রাজবাড়িয়া, বাসুদেবপুর এলাকায় রাস্তাগুলো ঘুরে একই চিত্র চোখে পড়েছে। কাশিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম আহাদ আলীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইউপির আটটি একলাখ ও দেড়লাখ বা তার কম বরাদ্দের রাস্তার বেশিরভাগ ৫০-৭০ভাগ কাজ হয়েছে। উপজেলায় নতুন করে সংস্কার হওয়া অনিয়মের রাস্তাগুলো সরেজমিন ঘুরে বিল দেওয়ার দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। সলিংয়ের কাজগুলো দেখভালের দায়িত্বে থাকা মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, অনেক রাস্তা ঘুরে দেখেছি অনিয়ম পাইনি। আমার অফিসের পে সব রাস্তা ঘুরে দেখা সম্ভব না। মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, অনেক রাস্তার কাজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে বিলে স্বার করা হবে না।