দশমিনায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা

0
291

নাসির আহমেদ,দশমিনা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দশমিনায় উপজেলায় লাইন্সেস ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছাড়াই গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে। দোকানগুলোতে লাইসেন্সবিহীন ও অনিরাপদভাবে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এই জ্বালানি। আইনের তোয়াক্কা না করেই শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই উপজেলার প্রতিটি বাজারেই চলছে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা। সরকারি নিয়মনীতি ও অনুমতিবিহীন অবৈধ গ্যাসের ব্যবসা স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে প্রশাসনের চোখের সামনেই ওই অবৈধ ব্যবসা চলছে। ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা দোকানগুলোয় খোলামেলাভাবে গ্যাস বিক্রি করায় চরম ঝুঁকিতে চলাফেরা করতে হচ্ছে ক্রেতা, পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাসহ শিার্থীদেরও। নিয়মবহির্ভূতভাবে সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবসায় চললে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা স্থানীয়দের। এ ছাড়াও অতিরিক্ত দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলাবাসী অতিরিক্ত দাম ও অনুমোদনহীন ব্যবসা বন্ধে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জের হাট বাজারেও লাইন্সেস ছাড়া সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করছে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। উপজেলার বিকাশ এজেন্টে পয়েন্টে, চায়ের দোকান, মুদির দোকান থেকে শুরু করে মুদি মনোহারি, ওষুধ ও ইলেকট্রনিক্সসহ প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাইসেন্স ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলার দোকানগুলো ছাড়াও ঠাকুরেরহাট বাজার, বড়গোপালদী বাজার, আরজবেগী বাজার, আউলিয়াপুর বাজার, রনগোপালদী বাজার, হাজীর হাট বাজার, গছানী বাজার, আমতলা বাজার, আয়শার হাট বাজারসহ সড়কের পাশে অনুমোদন ছাড়াই অনেক ব্যবসায়ী আইনকে বৃদ্ধাঙ্গগুলি দেখিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করে আসছে। এ দোকানগুলোয় নেই প্রাথমিক বিপর্যয় রায় ড্রাই পাউডার ও সিও ২ সরঞ্জামসহ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। এতে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি ুব্ধ অনুমোদন পাওয়া ব্যবসায়ীরাও। যথাযথ নিয়ম না মেনে এসব ব্যবসায়ী গ্যাস বিক্রি করছে না বলে সাধারণ মানুষ মনে করছেন। দোকানগুলোর সামনে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয় গ্যাস সিলিন্ডারগুলো। যার ফলে পথচারীরা ঝুঁকি চলাচল করতে হচ্ছে। যে কোনো সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এমন আশঙ্কা সাধারণ পথচারীদের।
এ ছাড়াও একাধিক ক্রেতা অভিযোগ করে জানান, উপজেলায় গ্যাসের যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ক্রেতাদের জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা তার চেয়ে বেশি নিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বোতল প্রতি ৫০-১শ’ টাকা বেশি নেয়। যার ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভুক্তভোগী ক্রেতাদের। এদিকে বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪ এর দ্য এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪ এর ৬৯ ধারার ২ বিধি অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া কোনো েেত্র এলপিজি মজুদ করা যাবে না বলা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী আটটি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদের েেত্র লাইসেন্স নিতে হবে। একই বিধির ৭১ নং ধারায় বলা আছে, আগুন নেভানোর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে।
যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করার কারণে সাধারণ মানুষসহ শিাপ্রতিষ্ঠানের শিার্থীরা হুমকির মুখে পড়েছে। লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিস্ফোরক অধিদফতরের কোনো রকম অভিযান না থাকায় অবৈধ ব্যবসায়ীরা খোলামেলাভাবে বিক্রি হচ্ছে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম না থাকায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। যার ফলে অনেক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হতাহত হয়েছে শত শত মানুষ। এ ব্যাপারে জরুরী পদপে গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সুনজর দেয়া দরকার। দশমিনা প্রেসকাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ছোট বড় হাট বাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে সিলিন্ডার গ্যাসের দোকান। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ব্যবসায়ীরা অনুমোদনহীন সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবসায় করছে। দোকানের সামনে রাস্তার পাশে এসব সিলিন্ডার গ্যাস রাখায় হুমকি মুখে পড়ছে সাধারণ ক্রেতা, শিার্থী ও পথচারীরা। কারণ সিলিন্ডার গ্যাস খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যে কোনো সময় ঘটতে পাড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপরে সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। এভাবে অরতি অবস্থায় সিলিন্ডার গ্যাস মজুদের কারণে যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এটা এক ধরনের বিপজ্জনক পরিস্থিতি। এছাড়া অনুমোদনহীন ব্যবসায়ীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। লাইন্সেস না থাকা এবং পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি থেকে যায় বলে জানান সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা। দুর্ঘটনা এড়াতে এলপি সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির নীতিমালা প্রণয়ন ও লাইন্সেসবিহীন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে নিয়মের আওতায় আনা প্রয়োজন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here