মাসুদ রানা,মোংলাঃ দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর লোকসানে থাকা মোংলা বন্দর এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান। আর এটি সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টি, গতিশীল নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায়। অব্যাহত উন্নয়ন কার্যক্রম ও দ ব্যবস্থাপনায় এ বন্দর এখন ব্যবসায়ীদেরও পছন্দ। সম্প্রতি দেওয়া এক সাাৎকারে মোংলা বন্দরের অগ্রযাত্রা নিয়ে কথা বলেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এনপিপি, বিএন।
তিনি বলেন, সমুদ্রবন্দর অর্থনীতির বাতিঘর হিসেবে বিবেচিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় করোনা মহামারির মধ্যেও মোংলা বন্দরের কার্যক্রম এক ঘণ্টার জন্যও বন্ধ থাকেনি। দেশের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখার ল্েয বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে মোংলা বন্দরকে সার্বণিকভাবে সচল রেখেছেন।
তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে মোংলা বন্দরের উন্নয়নের জন্য ১৪টি প্রকল্পসহ প্রায় ৫০টির অধিক উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। ফলে বন্দর ফের কর্মচাঞ্চল্য হয়ে ওঠে এবং বন্দরের ব্যবহার প্রায় প্রতিবছর ১৬ শতাংশের অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার দেশের অর্থনীতির সুষম উন্নয়নের জন্য দণি-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরের ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে। সেই চাপ সামলাতে বন্দরও প্রস্তুত। নেপাল, ভুটান ও ভারতকেও ট্রানজিট সুবিধা দিতে বন্দর পুরোপুরি প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যেকোনো সমুদ্রবন্দরের প্রধান তিনটি দিক থাকে। যেমন—চ্যানেলের নাব্যতা, বন্দর ও কাস্টমস সুবিধা এবং বন্দর থেকে গন্তব্যস্থলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এ বন্দরের তিনটি দিকই যথেষ্ট উন্নয়ন করা হচ্ছে। নাব্যতা বৃদ্ধির ল্েয আমরা এরই মধ্যে হারবার এলাকার ড্রেজিং সম্পন্ন করেছি। বন্দর এলাকা থেকে রামপাল পর্যন্ত এলাকার ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। আউটার বার এলাকার ড্রেজিং প্রকল্প শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নের ফলে বর্তমান ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের পরিবর্তে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ এ বন্দরে আসতে পারবে। এর পাশাপাশি আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ কনটেইনার টার্মিনাল, বহুতল কার ইয়ার্ড, বন্দর এলাকার রাস্তা ছয় লেনে উন্নয়ন, আধুনিক নিরাপত্তাব্যবস্থা, অটোমেশন ইত্যাদি প্রকল্প পর্যায়ক্রমে সম্পন্নের মাধ্যমে বন্দরের সেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে বলে আমি আশাবাদী।’তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষে সড়কপথে ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার কম হবে। ফলে ঢাকাকেন্দ্রিক বেশ কিছু কার্গো বিশেষত গার্মেন্টসামগ্রী এ বন্দরের মাধ্যমে পরিবাহিত হওয়ার একটি সহজ সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া খুলনা-মোংলা রেল যোগাযোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে রেলপথেও মোংলা বন্দরের কার্গো পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এভাবে তিনটি দিকই উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের মাধ্যমে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারীদের উন্নত সেবা প্রদানে সম হবে বলে আমি মনে করি।’তিনি বলেন, ‘বাস্তবায়িত ও বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের কারণে এরই মধ্যে আমরা অভূতপূর্ব সুফল পেতে শুরু করেছি। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় এটা প্রকাশ পেয়েছে।