স্টাফ রিপোর্টার : যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ধ্বংস করা আলামতের মধ্যে থেকে ১১ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটনা। এঘটনার সাথে আদালতের নিম্নশ্রেণীর কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লৃষ্টরা।
যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বর থেকে ফেনসিডিল উদ্ধারের পর নাজির বিপ্লব আহম্মেদ তা নিজ জিম্মায় নেন। এসময় আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান, জারী কারক রুহুল আমিন ও হিসাব রক্ষক আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, রোববার বিকেল ৫টার বিভিন্ন মামলায় উদ্ধার হওয়া মাদক মামলার আলামত প্রতিদিনের ন্যায় আদালত চত্বরে ধ্বংস করা হচ্ছিল। এসময় বিভিন্ন থানা থেকে উদ্বার কৃত গাঁজা আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। পরে ফেনসিডিলের প্লাস্টিকের বোতলগুলো বটি দিয়ে কেটে ফেলা হয়। স্ব স্ব থানার দায়িত্বে থাকা বিচারকগন নিজ নিজ থানার মাদক ধংশের সময় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ধ্বংস কাজে অংশ নেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নৈশ প্রহরী গোলাম কুদ্দুস, মাসুম বিল্লাহ ও রফিকুল ইসলাম। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, প্রতিটি ফেনসিডিল ভর্তি বোতল বটি দিয়ে কেটে পাশেই কাটা বোতল ফেলে রাখা হয়। কিন্তু ওই তিনজন কর্মকর্তাদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে বোতল না কেটেই কাটা স্থানে বোতল ফেলে দেন। পরে কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার সাথে সাথে রফিকুল সেখানে পাহারায় থাকেন। আর গোলাম কুদ্দুস দুর থেকে বিষয়টি নজরে রাখেন। এরই মধ্যে পথচারিদের নজরে পড়ে বিষয়টি। এরপর ধ্বংস করা খালি ফেনসিডিলের বোতলের মধ্যে খোঁজ করে দেখা যায় অক্ষত অবস্থায় ১১ বোতল ফেনসিডিল রয়েছে। উপস্থিত লোকজন তাৎক্ষণিক বিষয়টি জুডিসিয়াল নাজির বিপ্লব আহম্মেদকে জানান। এসময় জুডিসিয়াল প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান ও নাজির বিপ্লব আহম্মেদ সেখানে এসে জব্দ তালিকা করেন। একটি সূত্রের দাবি, নেজারত বিভাগের নৈশ প্রহরী সুলতান কোন ডিউটি করেননা। তার পরিবর্তে রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ডিউটি করে আসছেন। ফলে রফিকুল জুডিসিয়াল আদালতের নৈশ প্রহরী গোলাম কুদ্দুসের সাথে যোগাযোগ করে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ধ্বংসের কাজে সহযোগিতা করে আসছিলেন। আর সেই ধ্বংসের প্রতিনিয়ত ৮/১০/১২ বোতল পর্যন্ত ফেনসিডিল চুরি করে সন্ধ্যার পরে বিভিন্ন লোকের কাছে বোতল প্রতি এক হাজার টাকা করে বিক্রি করেন। মাস খানেক আগেও গোলাম কুদ্দুস ধ্বংস করতে গিয়ে আট বোতল ফেনসিডিল কোমরে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কয়েকজন পথচারি বিষয়টি দেখে কুদ্দুসকে দাড় করানোর চেষ্টা করা হলে দৌড়ে আদালত ভবনে চলে যান।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, নেজারত বিভাগের নৈশ প্রহরী সুলতান নিজের দায়িত্ব পালন করেননা। তার পরিবর্তে রফিকুলকে দিয়ে সুলতানের দায়িত্ব পালন করা হয়। সুলতান মাঝেমধ্যে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। এব্যাপারে জুডিসিয়াল নাজির বিপ্লব আহম্মেদ বলেছেন, বিষয়টি জানতে পেরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জব্দ তালিকা মূলে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে নেজারত বিভাগের নাজির নূর হোসেন বলেছেন, সুলতানের পরিবর্তে রফিকুল দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু এই ধরনের কোন অভিযোগ এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।