নাসির আহমেদ,দশমিনা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে সরকার জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশ প্রজনন রায় ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়। গোপনে কোন জেলে নদীতে গিয়ে যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। গত বুধবার আগামীকাল ১৪ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ২২ দিন মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ, পরিবহন ও সরবরাহ করা নিষিদ্ধ করা হয়। চলতি বছর প্রজনন মৌসুম আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে ১৪ অক্টোবর থেকে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের ল্েয ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। অভয়াশ্রম হিসাবে খ্যাত তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে নির্বাহী ম্যাজিেেষ্ট্রটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টিমের অভিযান চলবে। এ ছাড়াও অভিযানে এই সব এলাকায় মাছ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করা হয়।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১০ হাজার ১৭১ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এসব জেলের মধ্যে ৬ হাজার ৬২৭ জনকে ২২ দিন যাতে নদীতে মাছ না ধরেন সে জন্য তাদেরকে ইতোমধ্যে মাইকিং করে সচেতন করার পাশাপাশি মৎস্য আড়ৎ গুলোকেও অবহিত করা হয়। বাশঁবাড়িয়া এলাকার জেলে শাহ আলম ও মোঃ লাল মিয়া জানান, তারা বছরের সব সময়ই নদীতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শিকার করেন। সরকারের প থেকে ঘোষিত নিষিদ্ধ সময় ২২ দিন তারা মাছ আহরণ করবেন না। কিন্তু তাদেরকে ২২ দিনের জন্য যে ২০ কেজি চাল খাদ্য সহায়তা দেয়া হয় তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। উপজেলা মৎস অফিস থেকে তাদেরকে বলা হয়েছে তাদের মাছ ধরার নৌকাগুলো যেন ২২ দিন উপরে উঠিয়ে রাখে। কারণ ইলিশ এই সময়ে মিঠা পানিতে নিরাপদ স্থান হিসেবে ডিম ছাড়তে আসে। একটি ইলিশ মাছ কমপে ২২লাখ ডিম ছাড়ে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুব আলম তালুকদার জানান, গত কয়েক বছর জাটকা ও মা ইলিশ রা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় ইলিশের উৎপাদন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের কয়েকটি অভয়াশ্রমের মধ্যে দশমিনা উপজেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও জানান, জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশ রা এবং নিরাপদে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য টাস্কফোর্স সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। আর এই ২২ দিন উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, উপজেলা মৎস্য্য বিভাগ ২৪ ঘন্টা রুটিন অনুযায়ী নদীতে দায়িত্ব পালন করবে। অভয়াশ্রম এলাকার সকল জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী নেতা ও জেলেদেরকে নিয়ে একাধিক সভা করা হয়। ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য জেলে পাড়াগুলোতে মাইকিং করা হয় । এই বছর ১৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করার কারণ হলো ২২ দিনের মধ্যে একটি অমাবশ্যা ও একটি পূর্ণিমা রয়েছে। সাধারণত যে কোন প্রজাতির মাছ অমাবশ্যা ও পূর্ণিমায় ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে মিষ্টি পানিতে নদীর মোহনায় চলে আসে। তাই এই সময় মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। জাতীয় মৎস সম্পদ ইলিশ রা এবং নিরাপদে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মৎস্য বিভাগ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌসী জানান, সরকার জাটকা ও মা ইলিশ রায় সফল অভিযান পরিচালনা করায় মানুষ আবার ইলিশ উৎপাদনের সুফল পেতে শুরু করেছে। এবারের নিষেধাজ্ঞার সময় সবাইকে মা ইলিশ রায় এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, কোন নৌকা নদীতে নামতে দেয়া হবে না। এই জন্য নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, পুলিশ বাহিনীসহ সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মা ইলিশ রায় প্রশাসন জিরো টলারেন্স দেখাবে এবং কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।















