চৌগাছায় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

0
336

এম হাসান মাহমুদ চৌগাছা (যশোর) ॥ খেজুর গাছ থেকে গাছিদের রস সংগ্রহের ব্যস্ততা শীতের আগমনের বার্তা জানান দিচ্ছে। সীমান্তবর্তী উপজেলা যশোরের চৌগাছাতে ইতোমধ্যে খেজুর গাছ তোলা, চাচ দেয়া এমনকি কিছু কিছু এলাকাতে নলেন দেয়া হয়েছে। মৌসুমী খেজুরের রস দিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ এমনটিই মনে করছেন এই এলাকার মানুষ।
শীতের আগমনে যশোরের চৌগাছার গাছিরা খেজুর গাছ তোলা, চাচ দেয়া ও নলেনের কাজ শুরু করেছেন। উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয়েছে। শীত মৌসুম এলেই গাছিরা যেন ব্যস্ত হয়ে পড়েন, এবছরও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি। তবে দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গাছির সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। যশোরের যশ খেজুরের রস এই সত্য বাণী ধরে রাখতে হলে খেজুর গাছ সংরক্ষনের কোন বিকল্প নেই মনে করছেন অনেকে। গতকাল সরেজমিন উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের বাঘারদাড়ি গ্রাম এলাকায় যেয়ে দেখা যায় গাছিরা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় কথা হয় বাঘারদাড়ি গ্রামর কৃষক শহিদুল ইসলামের ছেলে গাছি লিয়াকত আলীর (৫৩) সাথে। তিনি বলেন, প্রতি বছর শীত এলেই তিনি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীতে বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েন। প্রতি বছর ৮০ থেকে ১০০টি খেজুর গাছ থেকে তিনি রস সংগ্রহ করেন। এ বছর প্রায় আড়াইশ খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করবেন। অধিকাংশ গাছ তোলা ও চাচ দেয়া হয়েছে, দু’একদিন পরেই নলেনের কাজ শুরু হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে ১০/১২ দিন পরেই গুড় বের হতে শুরু করবে। শীত যত বাড়বে গাছে গাছে তত রসও বাড়বে। শীতের দিনের সবচেয়ে আকর্ষন দিনের শুরুতে খেজুরের রস, সন্ধ্যায় সন্ধ্যা রস ও সুস্বাদু গুড় পাটালি। আর রসের তৈরী পিঠা পায়েসের তো জুড়িই নেই। তিনি বলেন, শীতের ভরা মৌসুমে প্রতি দিন ৮/১০ কেজি গুড় তৈরী করেন। তবে দিন শেষে কোন গুড় তার বাড়িতে থাকে না। নিজ উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা এমনকি যশোর শহর থেকেও অনেকে তার নিকট মানুষ গুড় কিনতে আসেন। ইতোমধ্যে এক ব্যবসায়ী ৭ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। গুড় উঠা মাত্রই তাকেগুড় দিতে হবে। শীত মৌসুমে তিনি গুড় বিক্রি করে ভাল লাভবান হন বলে জানান। গাছি লিয়াকত হোসেনে মত তার আপন ছোট ভাই শওকত আলী (৪৩) এ বছর ১৮০টি খেজুর গাছ তুলেছেন। তার মত ওই গ্রামের গাছি রবিউল ইসলাম, সলেমান হোসেন, নাসির উদ্দিন, বেলেমাঠ গ্রামের বিল্লাল হোসেন, আমজাদ হোসেন এখন খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য অনেক ব্যস্ত। এলাকাবাসি জানান, এমন এক সময় ছিল মাঠের যে দিকে চোখ যেত শুধুই খেজুর গাছ দেখা যেত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ খেজুর গাছ অনেক কমে গেছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গাছ মালিকদের ফুসলিয়ে খেজুর গাছ মেরে তা ইটভাটা গুলোতে বিক্রি করেছেন। যে সব ব্যাক্তি খেজুর গাছ ভাটায় বিক্রি করেছেন সেটি যে ঠিক করেননি তা এখন অনেকেই বুঝতে পারছেন। খেজুর গাছ রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ না নিলে বিলুপ্তির খাতার নাম লিখতে হবে খেজুর গাছের নাম এমনটিই মনে করছেন এ জনপদের গাছিসহ সচেতন মহল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here