তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : তালার লাউতাড়া গ্রামের চিহ্নিত প্রতারক ও বহু অপকর্মের হোতা জাহাঙ্গীর হোসেন’র প্রতারনার শিকার হয়ে একাধিক ব্যক্তি, মৎস্যচাষী, ঘের ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সর্বশান্ত হয়ে উঠেছে। জাহাঙ্গীরের একের পর অভিনব প্রতারনার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে নিরিহ মানুষ। এঘটনায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, কেশবপুর উপজেলার পাজিয়া গ্রামের আব্দুল মজিদ’র ছেলে প্রতারনার কারনে এলাকা থেকে উৎখাত হয়ে বিগত ৫/৬ বছর ধরে তালার লাউতাড়া গ্রামে বসবাস করছে। পাশ্ববর্তী হাতবাস গ্রামে বিয়ে করার পর সে এখন জমজমাট প্রতারনার ব্যবসা করছে। লাউতাড়া উত্তর বিলে নামসর্বস্ব একটি মৎস্য ঘের করে জাহাঙ্গীর তার আপন ভাই আলমগীর হোসেনকে এখানে এনে এখন সে প্রতারনার ব্যবসায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার অভিনব সব প্রতারনার শিকার হচ্ছে নিরিহ মানুষগুলো।
লাউতাড়া গ্রামের মৃত. সাহেব আলী সরদারের ছেলে মশিয়ার রহমান জানান, তার ঘেরের পাশে প্রতারক জাহাঙ্গীরের তথাকথিত মাছের ঘের। জাহাঙ্গীর ও তার ভাই আলমগীর কথিত ওই ঘেরে অবস্থান নিয়ে প্রতিনিয়ত পাশের ঘেরের মাছ চুরি করছে। আর মাছ চুরির কাজে বিষাক্ত ট্যাবলেট ব্যবহার করায় মাছ মরে সাবাড় হচ্ছে। গত ১১ তারিখে প্রতারক জাহাঙ্গীর ও তার ভাই আলমগীর মশিয়ারের ঘেরে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করে মাছ চুরি করে। ট্যাবলেটের গ্যাসের প্রভাবে সকাল হতেই ওই ঘেরের ৬লক্ষাধিক টাকার মাছ মরে ভেঁসে ওঠে। এবিষয়ে স্থানীয় তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার রফিকুল ইসলাম’র নেতৃত্বে এক সালিস সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকাবাসী জানান, প্রতারক জাহাঙ্গীর অভিনব ভাবে তালা, চুকনগর, পাটকেলঘাটা, কেশবপুর সহ বিভিন্ন এলাকার শো-রুমগুলোতে যেয়ে প্রথমে নগদে বা কিস্তিতে টিভি, ফ্রিজ সহ বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করে। পরে সময় মতো টাকা পরিশোধ করে এবং শোরুমের মালিক বা ম্যানেজারের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে কৌশলে লক্ষ লক্ষ টাকার পন্য কিস্তির মাধ্যমে বাড়ি এনে তা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে স্বল্প দামে বিক্রি করে দেয়। একপর্যায়ে শোরুমের পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীরের কাছে টাকার তাগিদ দিলে সে আর কর্নপাত করেনা। এভাবে সে তালার শরিফ ইলেক্ট্রনিক্স সহ একাধিক শোরুম থেকে কোটি টাকার মালামাল হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ধান, চাল, মাছের পোনা, মাছের খাদ্য ও গরুর খাবার সহ নানান পন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিনব সব প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে আনছে। এসংক্রান্তে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায়, আদালতে ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে অন্তত অর্ধশত মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে কয়েকটি মামলায় সে জেল হাজতবাস করলেও সে তার প্রতারনা ব্যবসা এখনও বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে। জাহাঙ্গীর ও তার ভাই আলমগীরের প্রতারনার ব্যবসা বন্ধের জন্য নিরিহ এলাকাবাসী স্থানীয় তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সরদার রফিকুল ইসলাম সহ প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।