স্টাফ রিপোর্টার : স্বামীকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে আদালতে মামলা করে অবশেষে ধরা খেয়েছেন লেবুতলা ইউনিয়নের আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী হাসিনা খাতুন। একেরপর এক ষড়যন্ত্রমামলা করে শেষমেষ ফেসে যাচ্ছেন হাসিনা ও তার স্বামী ছাত্তার। ফুলবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের আই সি এসআই কানু চন্দ্র বিশ্বাসের প্রচেষ্টায় বুধবার রাতে শহরের কাজী পাড়া থেকে প্রতারক ছাত্তারকে উদ্ধার করে। এরপর বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করলে আদালতে সত্য কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি অপহরণ হননি। তিনি বাড়ি থেকে স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছিলেন যা তার পরিবার জানতো। প্রথমে তিনি বাঘারপাড়ায় যায়। সেখানে ২/৩ দিন থাকার পর সাতক্ষীরায় তার এক বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে নিয়মিত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন। আদালতে তাকে অপহরণের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে সেটাও তার জানা ছিলো বলে আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম সাত্তারের জবানবন্দি গ্রহন করেন। পরে তাকে স্ত্রী হাসিনা খাতুনের হাতে তুলে দেন।
এদিকে, স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বের হলেও সাত্তারের স্ত্রী হাসিনা থাতুন গত ১৫ অক্টোবর স্বামীকে অপহরণের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে যশোর আদালতে মামলা করেন। তার অভিযোগ আমলে নিয়ে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইন কোতোয়ালি থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার আসামিরা হলেন, ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব ও তার ছেলে আশানুর , মৃত গফুর বিশ্বাসের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও মাহাবুব ইসলাম এবং মৃত হাতেম বিশ্বাসের ছেলে শাহিনুর রহমান। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন আসামিরা এলাকার সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য ও মাদক সেবী। গত ৪ অক্টোবর আসামিরা পূর্বশকত্রুতার জের ধরে ফজরের নামাজের পর অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেখ করেন হাসিনা খাতুন।
এদিকে আব্দুস সাত্তারকে উদ্ধারের পর আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব বলেন, সাত্তার দম্পত্তি সম্পত্তির দন্দে এ পর্যন্ত ৬ টি মামলা করেছে। তার মধ্যে তিনটি খারিজ হয়ে গেছে। আরো তিনটি বিচারাধীন। এরমাঝে আবার মিথ্যা অপহরণের নাটক সাজিয়ে ফের মামলা করেছে। এতে করে তাদেরকে হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি পাল্টা মামলা করবেন বলেও জানান।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফুলবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের আই সি এসআই কানু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, মুলত এটা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা যা তাদের তদন্তে উঠে এসেছে। এতে করে তাদেরকেও হয়রানী করা হয়েছে। একেক সময় একের ধরণের মনগড়া তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলেছে। এবিষয়ে তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি আইনের সাথে প্রতারণার সামিল। এ বিষয়ে পাল্টা মামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার আদালত চত্তরে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। এ ধরণের ঘটনার পুনঃরাবৃতি যাতে না হয় সেক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করেন আদালত সংশ্লৃষ্টরা।