শার্শায় আমনের বাম্পার ফলন/ দাম বেশি পাওয়ায় কৃৃষকের ঘরে আনন্দের বন্যা

0
309

জসিম উদ্দিন, শার্শা : চলতি মৌসুমে যশোরের শার্শা উপজেলা সহ জেলার আট উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সময়ের মধ্যেই ঘরে ধান তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। বিগত বছরের তুলনায় এবার ফলন বেশি এবং দামেও ভাল পেয়ে আনন্দের বন্যা বইছে কৃষককুলের মাঝে। এছাড়া ধানের দামের পাশাপাশি এবার (গো-খাদ্য) বিচালির দামও ভালো পাওয়ায় বাড়তি অর্থ আয় হচ্ছে । এতে খুশি এলাকার কৃষকরা। গতবছর যেখানে আমন চাষ করে মণপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা তি হয়েছে, এবার বিঘাপ্রতি সেই আমনে তারা লাভ গুণছেন ১৫-২০ হাজার টাকা। কৃষক বলছেন, দেশে গোখাদ্যের বেশ সংকট। চলতি মৌসুমে আমন চাষ করতে তাদের বিঘাপ্রতি সাত-আট হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শুধু বিচালি বিক্রি করে তাদের খরচ উঠে যাচ্ছে। প্রতি কাউন বিচালি বিক্রি হচ্ছে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। যা শুরুর দিকে আরো বেশি ছিলো। যশোরের আট উপজেলায় চলতি মৌসুমে এবার আমন ধানের চাষ হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। যা গত বছর ল্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৫ হেক্টর। যশোর সদর উপজেলায় ২৫ হাজার ৮৩০ হেক্টর, শার্শা উপজেলায় ২১ হাজার ৪৭০ হেক্টর, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১৮ হাজার ১শ’ হেক্টর, চৌগাছা উপজেলায় ১৭ হাজার ৫০ হেক্টর, অভয়নগর উপজেলায় ৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর, বাঘারপাড়া উপজেলায় ১৭ হাজার ১৪০ হেক্টর, মণিরামপুর উপজেলায় ২২ হাজার ৫৩০ হেক্টর, কেশবপুর উপজেলায় ৯ হাজার ২ শ’৭৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। শার্শা উপজেলার কৃষক আবুল কালাম জানান, এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। সেই জমির ধান ও বিচালি বিক্রি করে তিনি ৮২ হাজার টাকা পেয়েছেন।
উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের কৃষক ফারুক বলেন, সাড়ে তিনবিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। মাঠে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে। বিঘাপ্রতি সাত থেকে আট হাজার টাকা খরচ করে ১৮-১৯ মণ করে ধান পেয়েছি। গতবছরের তুলনায় এবার লাভ হয়েছে খুব।
ডিহি গ্রামের কৃৃৃৃষক আবুল হোসেন বলেন, ১০-১২ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি খরচ ১০ হাজার টাকা। ধান পেয়েছি ১৬-১৭ মণ করে। ধানের দাম ও ফলনে আমি খুশি। নিজামপুর গ্রামের কৃষক রানা বলেন, ১২ কাঠা জমিতে গুটিস্বর্ণ চাষ করেছি। এখনো ধান বাড়ি আনিনি। কাঠায় মণ মণ হবে বলে আশা করি। তাছাড়া বিচালি বিক্রি করা যাবে অন্তত চার হাজার টাকার। বিলের জমি হওয়ায় সার লাগিনি। ১২ কাঠায় খরচ হয়েছে মাত্র তিন হাজার টাকা। যশোরের শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজারের আড়ৎদারদের সাথে কথা বলে জানা যায় , এবার আমনের বাজার ভাল। শুরুতে প্রতিমণ ধান কিনেছি ৯৮০ টাকায়। এখন দর এক হাজার টাকা। এবার লাভবান হবেন কৃষকরা। শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমন ধানের আবাদ লমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে। ফলন বেশি এবং দাম ভাল হওয়ায় কৃষকরা অনেক খুশি। কৃষি বিভাগের প থেকে সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। আগামী বছর কোন দূর্যোগ না থাকলে এই আবাদ আরো বেশি হবে। চলতি মৌসুমে শার্শা উপজেলায় ২১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here