স্টাফ রিপোর্টার : করোনার বন্ধে মণিরামপুরের এক মাদরাসার অন্তত ২০ ছাত্রীর বিয়ের ঘটনা নজরে নিয়েছে যশোর জেলা প্রশাসন। কাদের অবহেলায় এমন ঘটনা ঘটলো তা খুঁজে বের করতে বলেছেন জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান।
পরিবার কল্যাণ সেবা এবং প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অ্যাডভোকেসি সভায় বিষয়টি উঠে এলে জেলা প্রশাসক এই নির্দেশনা দেন।
আগামী ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর এবারের ‘পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ’। এই উপলক্ষে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ এই সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান।
করোনা মহামারির কারণে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি এবার তিনদিনে শেষ করা হবে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘করোনাকালে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ করি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবার পরিকল্পনা সেবা গ্রহণ করি’।
সভার শুরুতেই প্রেসক্লাব যশোর সম্পাদক মণিরামপুরের একটি মাদরাসায় করোনাকালে অন্তত ২০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। দৈনিক যশোরে ব্রেক করা রিপোর্টটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটে গেল, অথচ দায়িত্বপ্রাপ্তদের কেউই কোনো ব্যবস্থা নিলেন না, এটি হতে পারে না।
পরে জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানও এই ঘটনাকে দুঃখ ও উদ্বেগজনক হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি প্রশ্ন করেন, স্থানীয় প্রশাসন, শিক্ষা বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ, মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অগোচরে এমন ঘটনা ঘটা কি সম্ভব? তাহলে তারা কী দায়িত্ব পালন করছেন?
ছাত্রীদের তো বিয়ে হয়েই গেছে। এখন তারা যাতে অল্পবয়সে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ না করে, সেই বিষয়ে নজর রাখার জন্য পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনও এই বিষয়ে গুরুত্বসহকারে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে উদ্যোগী হতে বলেন। একই সঙ্গে তিনি বিষয়টি তুলে ধরায় সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম ও প্রতিবেদককে ধন্যবাদ জানান।
পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ যশোরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মুনশী মনোয়ার হোসেন এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে সভায় জানান।
সভায় অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল হাসানসহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার দৈনিক যশোর পত্রিকায় করোনার বন্ধে এক মাদরাসার ২০ ছাত্রীর বিয়ে! শীর্ষক একটি তথ্যবহুল রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। মণিরামপুর প্রতিনিধির লেখা রিপোর্টটিতে দায়িত্বশীলদের উদ্ধৃত করে ছাত্রীদের গণহারে বিয়ের এই তথ্য দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্টদের কেউ এই তথ্য অস্বীকার করেননি।
আজকের সভায় ‘পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ’ উপলক্ষে নেওয়া নানা কর্মসূচি তুলে ধরেন ডা. মুনশী মনোয়ার হোসেন।