স্টাফ রিপোর্টার:- মণিরামপুরের রাজগঞ্জ বাজারে জমির সীমানা নির্ধারনের নামে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা জালালের পৈত্রিক সম্পত্তির উপর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর নির্মানাধীন ভবনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ক্ষমতাধর ঐ ব্যক্তি বাজারের প্রায় ১৮ শতক খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা।
জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ঝাঁপা গ্রামের জালাল উদ্দীন সরদার গংদের রাজগঞ্জ বাজারের মেইন পয়েন্টে মোবারকপুর মৌজার ৪২/৪৩ নং দাগে পৈত্রিক সাড়ে চার শতক জমি রয়েছে। ওই জমিতে ২০১৯ সালের মাঝের দিকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন নির্মানের কাজ শুরু করেন তিনি। ঢালাই পিলারের পরে দোতলার ছাাদের কাজ শেষ। ঐ মহুত্বে পাশের জমির মালিক প্রভাবশালীর ক্ষমতাধর পুত্রদ্বয় নির্মানাধীন ভবনের কিছু অংশ তাদের জমিতে পড়েছে অভিযোগে ভবন নির্মানের কাজ বন্ধ করে দেয় তারা। অথচ অবসর প্রাপ্ত সার্ভেয়ার তরুন শিল পরিমাপ করে ঐ জমির সীমানা নির্ধারন করে লিখিত ডকোমেন্ট দিয়ে গেছেন জমির মালিককে। হতবাক হওয়ার বিষয়. হানুয়ার গ্রামের নুরুল হক প্রভাবশালী ও ধন্যাঢ্য ব্যক্তি হওয়া সত্বেও নিজের তথ্য গোপন করে তৎসময়ে রাজগঞ্জ বাজারের মেই্ন পয়েন্টের মোবারকপুর মৌজার ৪৭ নং দাগের প্রায় ১৮শতক সরকারী খাস জমি নিজ নামে ডিসিআর কেটেছে। সেই সময় ঐ জমির চারিধার দিয়ে প্রায় ১৮/২০ রুম বিশিষ্ট কয়েকটি একতলা ও দোতলা ভবন নির্মান করেন তিনি এবং ভীতরের জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগিচা করে ভোগ দখলে আনেন।
জানা গেছে ঐ খাস জমির বন্দোবস্তরের মেয়াদ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারী শেষ হয়েছে। প্রায় ১ বছর বন্দোবস্তের মেয়াদ শেষ হলেও তারা পূনরায় বন্দোবস্ত না নিয়ে বহাল তবিয়াতে ঐ খাস জমির উপর থাকা সকল প্রকারের সম্পদ ভোগ দখল করছে।
সম্প্রতি ঐ প্রভাবশালীদের হাতে হয়রানি হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ঐ মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন অফিসে যেয়ে বিষয়টি জানতে পারে। উপজেলা ভুসি অফিসের তথ্যেমতে ওই ১৮ শতক খাস জমির মধ্যে ২ শতক জেলা পরিষদের নামে রয়েছে। আর আব্দুস সাত্তারের নামে ১ শতক ও প্রভাবশালী নুরুল হকের নামে ৩ শতক রেকর্ড হয়েছে। অথচ পুরোটা খাস জমি প্রভাবশালী পুত্রদ্বয় প্রায় ১ বছর অবৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছে।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর নির্মানাধীন ভবনটির কাজ বন্ধ করে ক্ষ্যান্ত হয়নি. তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা জালালের নামে ৪টি মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। আশ^ায্য জনক হলেও সত্য যে. এই খাস জমির উপর কারোর হস্তক্ষেপ নিষেধাজ্ঞা, হাইকোটের নির্দ্দেশ নামক একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছে। বোর্ডটি দেখে মুক্তিযোদ্ধাদের ও স্থানীয়দের মনে চরম প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
সর্বপুরী সমস্যা সমাধানের জন্য যোদ্ধাহত জালাল স্থানীয় ভাবে কয়েকবার শালিসী বৈঠাক বসালে প্রভাবশালী পুত্রদ্বয়রা কেউ হাজির হয়নি। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কয়েকবার বসাবসি করেও কোন সমাধানে আনতে পারেনি তারা। যার কারনে জমির সীমানা নির্ধারনের নামে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী সিনিয়র জজ মাজাহরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যোদ্ধাহত জালাল সরদার ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারী জজের বাগেরহাট কার্যালয়, আইন মন্ত্রনালয়, সুপ্রিম কোর্ট ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে।
বিষয়টি নিয়ে ঝাঁপা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধার সাবেক কমান্ডার মোশাররফ হোসেন দাবী করে বলেন, একজন যোদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধার এমন ভাবে হয়রানি করা ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের উপর হস্তক্ষেপ করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আই্নগত ব্যবস্থা গ্রহন করে সমস্যাটি সমাধান করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরদাবী করেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রভাবশালী পুত্রদ্বয়ের আইনাল জানায় শুনেছি আমাদের জমির উপর ভবনের কিছু অংশ পড়েছে তাই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল সরদার বলেন, আমি আশা করছি আমার অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ অতি দ্রুত তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করে সমস্যা সমাধান করবেন। তিনি আরো বলেন, প্রভাবশালীদের ডিসিআরকৃত বাজারের ১৮ শতক খাস জমির ডিসিআরের মেয়াদ অনেক পুর্বে শেষ হয়েছে। তাই বাজারের মেইন পয়েন্টে কোটি কোটি টাকার ১৮ শতক সরকারী খাস জমি অবৈধভাবে স্থাপনা উচ্ছেদ করে দখল মুক্ত করা হোক। এবং সরকারী ভাবে ওই খাস জমির উপর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেস্ক ভবন নির্মান করা হোক এটাই কামনা করছি।