স্টাফ রিপোর্টার :যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন স্থানে পালিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার সামরিক সচিবরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। করোনা পরিস্থিতির মহামারির কারনে এবার মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মামনীয় প্রধানমন্ত্রী সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌদে যেতে পারেননি।
রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম শামিম উজ জামান ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে স্মৃতিসৌধের শুরু হয় ফুল দেওয়ার আনুষ্ঠিকতা। পরে সর্বসাধারণের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে যশোরে বুধবার ভোর ৬টা ৩০মিনিটে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা প্রশানের উদ্যোগে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হয়। এরপর শহরের মণিহার এলাকায় বিজয়স্তম্ভে ফুল দেওয়ার মাধ্যমে স্বাধীনতাযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে যশোরবাসী। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে বিজয়স্তম্ভে।
এছাড়া, দিবসটি উপলক্ষে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কমানা, হাসপাতাল, কেন্দ্রীয় কারাগার, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার দেয়া হয়।
আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি জানান, কোভিড-১৯ প্রতিরোধের কারণে নড়াইলে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস সীমিত আকারে পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলনশেষে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ, বধ্যভূমি, গণকবর ,বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ, গণকবর জিয়ারত ও মোনাজাত এবং বঙ্গবন্ধুমঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়ারুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, নড়াইল পৌরসভা, নড়াইল প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, পাসপোর্ট অফিস, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান।
দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা।
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি- বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর সকাল ৮টায় শহরের নোমানী ময়দানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম, জেলা ও দায়রা জজ মো. কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পঙ্কজ কুন্ডু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল ফাত্তাহসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, মাগুরা প্রেসক্লাব, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে নোমানী ময়দানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। এছাড়া বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা যুবলীগ ১০০ জাতীয় পতাকা নিয়ে বাইসাইকেল র্যালি বের করে। র্যালিতে জেলা যুবলীগের আহবায়ক ফজলুর রহমানসহ শতাধিক কর্মী অংশ নেয়।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, যথাযোগ্য মর্যাদায় কুষ্টিয়াতে মহান বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরের মুক্তিযোদ্ধা স্বৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন ও পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত। এসময় তারা কালেক্টরেট চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ আলী খানের নেতৃত্বে জেলা শ্রমিকলীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা স্বৃতিস্তম্ভে ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, স্বল্প পরিসরে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৬ ডিসেম্বর বুধবার প্রত্যুষে ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়। পরে কলারোয়া সরকারি পাইলট হাইস্কুললের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী জেরিন কান্তা, উপজেলা পরিষদের পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক আলিমুর রহমান, কলারোয়া প্রেসক্লাবের পক্ষে সাংবাদিক শেখ মোসলেম আহম্মেদ, সহকারী অধ্যাপক কেএম আনিছুর রহমান, প্রভাষক আরিফ মাহমুদ, সরদার জিল্লুর রহমানসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর, বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
এদিকে, সকাল সাড়ে আটটায় উপজেলা মিলনায়তনের সামনে সভা অনুষ্ঠিত হয়। দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, তালায় যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে ৪৯তম মহান বিজয় দিবস। সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তালা উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে উপজেলা চত্বরে শহীদ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করা হয়।
সংসদ সদস্য অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ শহীদ স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
এরপর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, তালা থানা, পাটকেলঘাটা থানা, আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, বিএনপি, ছাত্রদল, জাতীয় পাটি, তালা হাসপাতাল, তালা সরকারি কলেজ, তালা প্রেসক্লাব, তালা মহিলা কলেজ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ, জাতীয় মহিলা সংস্থা, উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ, প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতি, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে সাতক্ষীরায় সীমিত পরিসরে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে বুধবার প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হয়।
এরপর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় শহরের খুলনা রোড় মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। পরে সার্কিট হাউজ চত্বরে গার্ড অব ওনার ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষে হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানায় উন্নত মানের খাবার সরবরাহসহ অনলাইনের মাধ্যমে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।