মণিরামপুরের ভবদহ সংলগ্ন জলাবদ্ধ বিলের পানি সেচ কাজে দেড় শতাধিক স্যালো মেশিন চলছে

0
418

আজিবর রহমান,মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: মণিরামপুরে জলাবদ্ধতার কারণে আমন ধানের চাষ করতে পারেননি চাষিরা। সর্বশান্ত চাষির একমাত্র ভরসা বোরো ধান চাষের আশা নিয়ে ভবদহ পাশ্ববর্তী বিলগুলোতে দেড় শতাধিক স্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচে জলাবদ্ধ বিলে ধানের আবাদি জমি তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মণিরামপুরের শতকরা ৮০ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, কুমোরঘাটা, বোকড়, কেদারিয়া, কোড়ামারা, মশিয়াহাটি, আড়পাতা, টিয়াদহ, নড়ই, কিয়েলদাহ, কপাশিয়া , পানিডহর, সম্বলডাঙ্গা, মানুষমরা, ডুমুরবিল, ঝিনাইদহ বিলসহ অন্তত ২৭ টি বিলের পানি ভবদহ গেট দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু নদীতে পলি জমে যাওয়ায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। এ কারণে ভবদহ স্লইসগেটের উপরি ভাগে বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মণিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে, খরিপ-১ মৌসুমে (বর্ষাকাল) ৪ হাজার ৪’শ ৮ হেক্টর বা ৩৩ হাজার ৬০ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এবং বোরো মৌসুমে বিলের পানি কমে যায়। ফলে বিলের পানি কমে ৩ হাজার ৪৬ হেক্টর বা ২২ হাজার ৮ ’শ ৪৫ বিঘা জমি আবাদযোগ্য হয়। সেচ প্রকল্প কমিিিটর সদস্য ফরিদ উদ্দীন, সোহেল রানা, মাসুদ রহমান, তরিকুল ইসলাম, ইমন হোসেন ও চাষি ইজাহার আলী, লুৎফর রহমান, সোহাগ হোসেনসহ কয়েকজন চাষি জানান, কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধতার কারণে বিলে আমন ধানের চাষ করা সম্ভব হয় না। বছরে একটি মাত্র ফসল বোরো ধানের চাষ। বিলের নিচুভাগের পানি শুকাই না। যে কারণে আংশিক জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়। ভবদহের আশপাশের ১০/১২ টি বিলে কমপক্ষে দেড় শতাধিক স্যালো মেশিন বসিয়ে পানি নদী বা খালে ফেলছেন। একটি বিলের একাধিক জায়গায় সেচ পাম্প বসিয়ে সেচ কাজ চলছে। কমছে বিলের পানি। জেগে উঠছে নতুন নতুন আবাদি জমি। আমন ধানের চাষ করা সম্ভর না হওয়ায় চাষির ঘরে ধান নেই। নেই তেমন কোন কাজকর্ম। অভাবের তাড়নায় তারা বিলের মাছ ধরে, শাপলা, কলমি শাক, ঝিনুুক কুড়িয়ে বিক্রি করে সংসারের খরচ যোগাড় করেছেন। নি¤œিিবত্তের লোকেরা এসব কাজ করলেও মধবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা তা পারছেন না। অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পাননি। খাবার সংকটে গরু-ছাগল, হাস-মুরগী পালন করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত চাষিরা ব্যাংক, এনজিও, সুদে মহাজনের কাছে দায়-দিনা হয়েছেন। অতি অসহায় ভুক্তভোগী চাষিরা পানি সেচ প্রকল্প কমিটি গঠন করে বিলের পানি সেচ দেয়ার কাজ শুরু করেছেন। তারা জানান, নিজেদের প্রচেষ্টায পানি সেচ দেয়ার জন্য চাষির কাছ থেকে বিঘা প্রতি ৭’শ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা নিচ্ছেন। তবে কোন কোন এলাকার জনপ্রতিনিধি তাদের সেচ ব্যবস্থায় সহযোগিতা করছেন। বোরো ধান চাষ করতে পারলে চাষির ঘরে ধান উঠবে। তাদের অভাব দূর হবে। অন্যথায় পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃখ কষ্টের আর সীমা থাকবে না !

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here