ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলায় বইতে শুরু করেছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া, প্রার্থীরা যার যার অবস্থান থেকে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। খবর পাওয়া গেছে কোটচাঁদপুর উপজেলার ৩নং কুশনা ইউনিয়নে এবার নৌকা প্রতিক নিতে চেষ্টা করছেন যুবলীগ নেতা, বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, ইউপি সদস্য নাছির উদ্দীন ও রওশন আলী।
অনেক আগে থেকেই রওশন আলীর বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপোক অনিয়ম, দূর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ। এমন অভিযোগের ভিত্ততে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রওশন আলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তালিনা গ্রামের মৃত শহর আলী মালিতার ছেলে। যুবক বয়স থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন পূর্ববাংলার সাথে পথ চলা শুরু করেন রওশন আলী। পরে এরশাদ সরকারের আমলে যোগদেন জাতীয় পার্টিতে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিএনপিতে যোগ দিয়ে সুবিধা নেন। এরপর ২০০৮ এ আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে যোগ দেন আওয়ামীলীগে, কপাল পোড়ে আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাদের । যদিও কোন দলের কোন পদবীধারী নেতা তিনি ছিলেন না তবুও শুধুমাত্র বাম রাজনীতির শক্তি খাটিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে হাতিয়ে নেন তালিনা গ্রামের মাধ্যমিক স্কুল কমিটির সভাপতির পদ। নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরন ও বেতন বন্ধ করে দেওয়ার কারনে এলাকাবাসীর বিরোধীতায় দ্রুতই তিনি সেই পদ ছাড়তে বাধ্য হন।
নিজের এলাকাবাসীর কাছেই এক নামে তিনি খারাপ লোক হিসেবে পরিচিত, তার সাথে কোন ভালো লোকের চলাচল নেই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরাই তার কাছের লোক। এর মধ্যে এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের হোতা রওশন আলীর ভাগ্নে রুবেল, তোতা, সাগর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, এদের সবাই কয়েকবার পুলিশের হাতে মাদক ও অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়ে জেল খাটা আসামী। এ সকল সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী রওশন আলী অতিতে কখনই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত না থেকে বা দলীয় কোন পদপদবীধারী না হয়েও এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে নির্বাচন করার জন্য জোর প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতার আশ^াসে ও অবৈধ টাকার জোরে তিনি এলাকার কাউকে তোয়াক্কা করেন না। জানা গেছে তার কাছে প্রায়ই মারধরের শিকার হন আওয়ামীলীগের কর্মীরা, কিছু দিন আগে কোটচাঁদপুরে আওয়ামীলীগের দলীয় কর্মসূচীতে তালিনা গ্রামের আওয়ামীলীগ কর্মী রনো দাশকে নেতা কর্মীদের সামনে মারধর করে রওশন আলী, এই ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়ে বর্তমান কুশনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান রনো দাশের পাশে দাড়িয়ে রওশন আলীকে কর্মসূচী থেকে বিতাড়িত করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, এই রওশন আলীর সাথে তার আপন ভাইদের কোন সম্পর্ক নেই, তার আপন ছোট ভাইদের দোকান ও জমি দখল করে নিয়েছেন, তাই তার সাথে কারো সম্পর্ক নেই। এলাকাবাসী আরো জানান রওশন আলীর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস করেন না, কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে নানা ভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়, মামলা ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে আরো বেরিয়ে এসেছে এখন পর্যন্ত পূর্ববাংলার নেতাদের এলাকা থেকে চাঁদা আদায় করে দেন রওশন আলী। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রওশন আলীর ফোনে কল করলে এসব মিথ্যা বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোন সন্ত্রাসী নয়, একজন সৎ যোগ্য ও নিবেদিত মানুষকে তাদের প্রতিনিধি বানাতে চান কুশনা ইউনিয়নের সাধারণ জনগন। কোন অযোগ্য, খারাপ ও সন্ত্রাসীদের হাতে নৌকা প্রতিক তুলে না দেওয়ার জন্য নেতাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তৃনমূল নেতাকর্মীরা।