মণিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি :মণিরামপুর উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের এক মসজিদের মুয়াজ্জিনের জমি থেকে জোর করে বালি উঠিয়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
মনির হোসেন নামে রাজনৈতিক প্রভাবশালী এক যুবক ওই বালি উঠিয়ে বিক্রি করছেন।
এদিকে বালি উঠানে বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেছেন মিলন হোসেন নামে ওই মুয়াজ্জিন। আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মণিরামপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়নের কায়েমকোলা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মিলন হোসেন।
মিলনের মামা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তার ভাগ্নে স্থানীয় একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন। ৩-৪ মাস আগে মিলন হোসেন তার সাড়ে চার বিঘা জমি খনন করে মাছ চাষ করার জন্য মণিরামপুরের রেজাউল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে মৌখিকভাবে লিজ দেন। শর্ত ছিল আট ফুট গভীর করে তিনি পুকুর তৈরি করবেন। লিজ নেওয়ার পর রেজাউল ইসলাম খনন কাজ শুরু করলে তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন হরিহরনগর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে মনির হোসেন। চাঁদা না দেওয়ায় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিলে রেজাউল ইসলাম পুকুর খনন অসমাপ্ত রেখে চলে যান। এরই মধ্যে মনির হোসেন পুকুর খননের জন্য রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে কাজটি নিয়েছেন- এমন কথা প্রচার করে ওই জমি দখলে নেন। ভাগ্নে মিলন হোসেন সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করেন। তবে পুকুরের মাটি খননের সাথে সাথে নিচ থেকে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে বালি উঠিয়ে বিক্রি শুরু করেন মনির হোসেন। এযাবৎ অন্তত তিন লাখ টাকার বালি বিক্রি করেছেন তিনি। এছাড়া ৫১৮ ট্রাক মাটিও বিক্রি করেছেন মনির হোসেন। একপর্যায়ে ভাগ্নে মিলন হোসেন বুঝতে পারেন, তার পুকুর আট ফুটের বেশি গভীর করা হয়েছে এবং সেখান থেকে বালু উঠানো হচ্ছে। সেইসাথে রেজাউল ইসলাম পুকুর খননের কাজটি মনির হোসেনকে দেননি বলে জানতে পারেন তিনি।
তিনি আরো জানান, এরপর ভাগ্নে মিলন হোসেন বিষয়টি তাকে (জাহাঙ্গীর হোসেন) জানান। এ ঘটনাটি জানতে পেরে ঢাকা থেকে এসে তিনি ভাগ্নের জমি থেকে মনির হোসেনের বালু উঠানোর জন্য রেখে দেওয়া শ্যালো মেশিন সরিয়ে দেন। এছাড়া খনন করা পুকুর পাড়ে স্তূপ করে রাখা বালি মনির হোসেনকে নিয়ে যেতে বাধা দেন। স্তূপ করা বালির পরিমাণ অন্তত ২০ ট্রাক। এর প্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত হয়ে মনির হোসেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছেন। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন আরো জানান, তার ভাগ্নে মিলন ওই জমিতে মনির হোসেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য গত ১৭ ডিসেম্বর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেন। এই অভিযোগ তদন্ত করে ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মণিরামপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
এ বিষয়ে জানতে মনির হোসেনের নাম্বারে কল করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ফোন কেটে দেন।