বাজার কমিটির হস্তক্ষেপে দ্রুত বিষয়টির সুরাহা অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে যশোরের বড়বাজার আটাপট্টিতে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট পালন

0
296

স্টাফ রিপোর্টার : যশোর বড় বাজারের আটাপট্টিতে বিক্ষোভ ও ধর্মঘট পালন করেছে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ অনুব্রত সাহা মিঠুন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি ধামকি দেয়ায় তারা এ বিক্ষোভ ও ধর্মঘট পালন করে।
বুধবার (০৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলে। পরে অভিযুক্ত ক্ষমা চাওয়ায় বাজার কমিটির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আটাপট্টির পদ্মা স্টোরের ম্যানেজার গনেশ চক্রবর্তী জানান, “আজ ভোরে তাদের দোকানের সামনে পালু, শ্যামল, সাইদুলসহ কয়েকজন শ্রমিক ট্রাক থেকে মাল আনলোড করছিলো। এসময় অনুব্রত সাহা মিঠুন নামের একজন এসে তাদের মা-বোন তুলে গালিগালাজ করে। একইসাথে ট্রাক সরিয়ে নিতে বলে অন্যথায় মারপিটের হুমকি দেয়। তার দাবি ভোরে মালামাল নামালে তার ঘুমের ডিস্টার্ব (ব্যাঘাত) হয়।”
গনেশ চক্রবর্তী আরো বলেন, “বাজারের ভিতরে ভোরে ও রাতে মালামাল প্রবেশ করতে দেয় প্রশাসন। ফলে লোড-আনলোডও ওই সময় করতে হয়। আমাদের কাছে কোন বিকল্প নেই। বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেও কোন লাভ হয় না। এর আগেও অনুব্রত সাহা মিঠুন আমার প্রতিষ্ঠানের মালিকের মা-বোন তুলে গালিগালাজ করেছেন। উনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন বলে ভয়ে কেউ কিছু বলেন না। তবে আজ শ্রমিকরা জানিয়ে দেয় তারা বিষয়টির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কাজ করবেন না। যে কারণে ব্যবসায়ীরাও দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদ্মা স্টোরের মালিক তানভিরুল ইসলাম সোহান জানান, বাজারের ব্যবসায়ী রাম কুমার পোদ্দার ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি আমাকে ফোন করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধের কথা জানান। এরপর আমি বিষয়টি বাজার কমিটির সভাপতিকে জানাই। পরে শুনেছি বিষয়টি মীমাংশা হয়ে গেছে।
ব্যবসায়ী রাম কুমার পোদ্দার বলেন, “অনুব্রত সাহা মিঠুন আজ সকালে শ্যামল নামে এক শ্রমিককে গালিগালাজ করেন। যে কারণে শ্রমিকরা ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। শ্রমিকরা কাজ না করলে দোকান চলে না। সে কারণে ব্যবসায়ীরাও দোকান বন্ধ করে দেয়। দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ ছিল।”
তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনা একদিনের নয়। অনুব্রত সাহা মিঠুন প্রায়শ’ তার ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে অভিযোগ তুলে বাজারের ব্যবসায়ী, শ্রমিকদের আপত্তিকর ভাষায় গালিগালাজ করেন। যে কারণে আজ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তবে বাজার কমিটির সভাপতির হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংশা হয়েছে।”
এ বিষয়ে বাজার কমিটির সভাপতি মীর মোশাররফ হোসেন বাবু বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ঘটনাস্থলে যাই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমি বিষয়টি প্রশাসনকেও অবহিত করি। পরে অনুব্রত সাহা মিঠুনকে খবর দিয়ে উভয়পক্ষকে নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসি। বৈঠকে মিঠুন ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের কোন কাজ করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন। এরপর দুপুর ২টার কিছুসময় পর ব্যবসায়ীরা দোকান খোলেন এবং শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।”
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে অনুব্রত সাহা মিঠুন বলেন, “শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কোন প্রকার গালিগালাজ করা হয়নি। বাজারের ব্যবসায়ী রাম সাহা ও নন্দ লাল বড় বড় ট্রাক বোঝাই করে মালামাল ছোট্ট সড়কে প্রবেশ করায়। তাদের কারণে একটি কালভার্ট ও বৈদ্যুতির খাম্বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ছিল। যে কারণে প্রায় তাদের ট্রাক ঢোকাতে নিষেধ করা হয়। সে বিষয়ে গতকাল বৈঠক ছিল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ট্রাক কালভার্ট অতিক্রম করবে না।”
তিনি আরো বলেন, আসলে আমি বলতে চাই না, ওখানে একজন ব্যবসায়ী চোরাই চিনির ব্যবসায় করেন। তিনি বিষয়টি ভিন্নখাতে নিচ্ছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here