রাজিয়া সুলতানা : বিদেশে অবস্থান করা সত্বেও গ্রাম্য শত্রুতার জের ধরে মামলায় আসামী করা হয়েছে লোহাগড়ার এক প্রবাসীকে। মামলার আসামীর বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলাতে আর বাদীর বাড়ি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানায় হলেও মামলায় ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে খুলনার আড়ংঘাটা থানায়।
সূত্র জানায়, মামলার বাদি ডুমুরিয়া থানার মৃত নওয়াব আলী গাজীর ছেলে মুদি, ফেক্সিলোড ও বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী মোঃ সেকেন্দার। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন গত ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে আমি দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাবার প্রাক্কালে পুলিশের পোষাকপরা দুই জন লোক আমার দোকানে আসেন। বিকাশে টাকা লেনদেনের কথা বলে এক পর্যায়ে তারা আমাকে জোর করে তাদের প্রাইভেটকারে উঠিয়ে নেয়। গাড়ির মধ্যে ড্রাইভারসহ আরো একজন লোক ছিল। গাড়ির মধ্যে তারা আমাকে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে এবং টাকা কেড়ে নেয়। এরপর আড়ংঘাটা থানার রায়েরমহল বাজার এলাকায় টহলরত পুলিশ গাড়ি সহ লোহাগড়া থানার নোয়াগ্রামের মোঃ আসাদ মোল্যার ছেলে মোঃ সোহেল মোল্যাকে আটক করে। গাড়িতে থাকা অন্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাড়ি থেকে আগেই নেমে যায়।
পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশ ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সাথে লোহাগড়ার নোয়াগ্রামের ওহাব এর ছেলে আসলাম, কালিগঞ্জ পঁচাশিপাড়ার নান্নুর ছেলে ড্রাইভার কামরান, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার সামাদ এর নাম প্রকাশ করে। এ ঘটনায় মোঃ সেকেন্দার গাজী বাদী হয়ে আড়ংঘাটা থানায় ওই চারজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩। তারিখ ০৮/২/২০২০।
এজাহার অনুয়ায়ি ওই মামলার ২নং আসামী লোহাগড়ার নোয়াগ্রামের আসলাম(পিতা-ওহাব)। গত ২২/৯/২০২০ তারিখে পুলিশ সৈয়দ তৈয়ুবুর রহমান ওরফে আসলাম (পিতা-সৈয়দ মহাসীন আলী ওরফে ভেলু মিয়া) এর নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্র নং-৪৩। এখনও ওই মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন সৈয়দ তৈয়েবুর রহমান(পিতা-সৈয়দ মহাসীন আলী। জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৬৫১৫২৮৭৪৭০২২৮)। অথচ সৈয়দ তৈয়ুবুর রহমান ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি (এখন) পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করছেন।
ভূক্তভোগীর ভাই সৈয়দ শোয়েবুর রহমান জানান, আমার ভাই সৈয়দ তৈয়েবুর রহমান ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর চাকরী করতে বাহরাইন চলে যান। ইমিগ্রেশান কিয়ারেন্স রেজিঃ নং- এন,আর,এম২০১৬১৪২০৯৭১জি। পার্সপোর্ট নং-এ এফ ১১৯৯৭৫১। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের কাছে আটক মামলার ১নং আসামী আমাদের গ্রামের বাসিন্দা মোঃ সোহেল মোল্যার মিথ্যা স্বীকারোক্তিতে পুলিশ অযথা আমার ভাইকে হয়রানি করেছে। মোঃ সোহেল মোল্যা গ্রাম্য শত্রুতার জের ধরে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই মোঃ সাইফুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ধৃত ব্যাক্তির স্বীকারোক্তি মোতাবেক মামলার বাদী আসলামসহ চারজনকে আসামী করেছে। তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। মামলাটি এখন খুলনার আদালতে বিচারাধীন। ভূক্তভোগী পরিবার ন্যায্য বিচার প্রার্থনা করেছেন। #